Sunday, January 1, 2017

ময়নাতদন্ত রিপোর্ট: 

বুলেট এফোঁড়-ওফোঁড় করেছে এমপি লিটনের বুক

ঘাতকের বুলেটবিদ্ধ গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্যের (এমপি) মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।এমপি লিটনের বুকের ডান দিকে একটি গুলি বিদ্ধ হয়ে পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়।একটি ভেতরে আটকা পড়ে,সেটিও বের করা হয়েছে। এছাড়া তার বাঁ হাতেও ৩টি গুলি লাগে।শনিবার সন্ধ্যায় লিটনকে সুন্দরগঞ্জের সাহাবাজ গ্রামে তাঁর নিজ বাড়ির ড্রয়িংরুমে ঢুকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়।সন্ধ্যায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।আজ সোমবার সকাল ১০টায় গাইবান্ধা-১ সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের জানাজা জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে।জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জানাজা শেষে মরহুমের লাশ গাইবান্ধায় তার পারিবারিক কবরস্থানে বিকেল ৪টায় দাফন করা হবে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানাগেছে, শনিবার সন্ধ্যায় এমপি লিটন ঘরে বসে টিভি দেখছিলেন। এ সময় মোটর সাইকেলে করে ৩ যুবক তার বাড়িতে আসে। ওই যুবকরা হেলমেট পড়া ছিলো। একজন মোটরসাইকেল নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। অপর ২ যুবক ঘরে ঢুকেই এমপি লিটনকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে। এরপর তারা দৌড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। এসময় বাড়িতে কাজের দুই-তিন জন লোক ও তার স্ত্রী ছাড়া কেউ ছিলেন না।
এদিকে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সন্দেহভাজন ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তিনি তাদের নাম বলেননি। স্থানীয় আওয়ামী লীগ এ ঘটনায় জামায়াত অথবা উগ্রপন্থীদের সন্দেহ করছে। প্রসঙ্গত সুন্দরগঞ্জের শিশু শাহাদাত হোসেন সৌরভকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলার আসামি ছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি জামিনে ছিলেন।রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘর থেকে মনজুরুল ইসলামের মরদেহ নিয়ে রোববার দুপুর ১২টায় রংপুর পুলিশ লাইনস মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।এরপর তার মরদেহ হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়।জানাজায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করীম রাজু, রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার কাজী হাসান আহমেদ, পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) খন্দকার গোলাম ফারুক, জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

পক্ষান্তরে এমপি লিটনের হত্যার প্রতিবাদে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় আজ সকাল থেকে হরতাল চলছে। বামনডাঙ্গা স্টেশনে সান্তাহারগামী একটি ট্রেন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে আটকে রেখেছে সাংসদের সমর্থকেরা। সান্তাহার-লালমনিরহাট রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সুন্দরগঞ্জের বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এমপি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত হরতাল চলবে বলে জানিয়েছেন বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক নাদিম হোসেন।

No comments:

Post a Comment