Monday, July 31, 2017

ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণাঃ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ রায়টি ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। গত ৩ জুলাই জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। রায় অনুযায়ী সুপ্রিমকোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে থাকছে না। হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মো. সাব্বির ফয়েজ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি সকালে বলেন, আজ কিছুক্ষণের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ রায়টি ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয়। বিচারকদের পদের মেয়াদসংক্রান্ত ষোড়শ সংশোধনী বিল অনুসারে, সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের ২ দফায় বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতাসংক্রান্ত বিধান রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়, প্রমাণিত ও অসদাচরণ বা অসামর্থ্যের কারণে সংসদের মোট সদস্যসংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ব্যতীত কোনো বিচারককে অপসারিত করা যাবে না। ৩ দফায় বলা হয়েছে, এই অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন প্রস্তাবসম্পর্কিত পদ্ধতি এবং কোনো বিচারকের অসদাচরণ বা অসামর্থ্য সম্পর্কে তদন্ত ও প্রমাণের পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করবে। একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিমকোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ৫ মে হাইকোর্টের তিনজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ গত ৪ জানুয়ারি আপিল করে। আপিলের ওপর গত ৮ মে শুনানি শুরু হয়, যা ১১তম দিনে গত ১ জুন শেষ হয়। ওইদিন আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। গত ৩ জুলাই রায়ের সংক্ষিপ্তসার ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি।

শোকাবহ আগস্টের শুরু আজ  

আগস্ট মানেই শোক। আগস্ট মানেই শোকে আপ্লুত বাঙালির কান্নাভেজা মাস। আজ সেই ১ আগস্ট। শুরু হলো বাঙালির শোকের মাস। ১৯৭৫ সালের এ মাসেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে। ভাগ্যক্রমে দুই কন্যা শেখ রেহানা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও রক্ষা পাননি আরো অনেক স্বজন, সতীর্থরা। অথচ এই অমোঘ নেতার নির্দেশেই, বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল একাত্তরে, দেশ স্বাধীনে, স্বাধিকার রক্ষায়। ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতা। আবার সেই স্বাধীন ভূমিতেই, তাকে নির্মমভাবে খুন হতে হলো, কিছু ক্ষমতালোভী মানুষের হাতে, এই আগস্টেই। তাই আগস্ট এলেই ডুকরে কেঁদে ওঠে বাঙালি। বুকের ভেতর বয়ে যায় বেদনার স্রোত।
পরম বেদনায় আগস্টকে ‘বাঙালির ট্র্যাজেডি’র মাস আখ্যা দিয়েছিলেন প্রয়াত বরেণ্য বুদ্ধিজীবী জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী। বুকের ভেতর পুষে গভীর ক্ষত নিয়ে বলেছিলেন, ‘আগস্টে বাঙালি অনেক কিছু হারিয়েছে। যার নেতৃত্বে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাঙালি তার স্বাধীনতা পেয়েছে, মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় সেই মহাপুরুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে কিছু ক্ষমতালোভী মানুষ। কালের যাত্রায় সেই ঘাতকদের বিচার হয়েছে। তারা শাস্তি পেয়েছে। তবে পিতাকে হারানোর সে ক্ষত কোনো দিন ভুলতে পারবে না বাঙালি।’
আগস্ট এলেই শোকে শ্রদ্ধায় নত হয়ে আসে বাঙালির মাথা। পিতা হত্যার অপরাধে, লজ্জায়, কেঁদে ওঠে সম্মিলিত শোক, বেদনা। চারদিকে কেবলই স্রোত নামে শোকস্তব্ধ মানুষের। মানুষ কাঁদে। বেদনার গান গায়। নামে শোকের মিছিলে। কালোয় কালোয়, শোকে শোকে, বেদনাবিধুর হয়ে ওঠে গোটা দেশ, দেশের মানুষ। পিতাহীন দেশে, সংকটে উপনীত বাঙালি তাই এখনো আশ্রয় খোঁজে তারই আদর্শে, রেখে যাওয়া কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরম ছায়ায়, ভালোবাসায়। মুক্তি মেলে মানুষের, তারই স্বপ্নাকাশে। মানুষ জোটবদ্ধ হয়। সম্মিলিত শোক, রূপ নেয় শক্তিতে। নতুন করে বেঁচে থাকার, নতুন শপথ নেয় বাঙালি। আগস্ট এলেই মেঘমুক্ত আকাশে কেঁদে ওঠে কালো মেঘমালা। পথে, ঘাটে, বন্দরে গীত হয় শোকগাথা।
পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট কালো রাতে ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল। পৃথিবীর এই ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনি, তার সহধর্মিণী আরজু মনি ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প।
এখনো মধ্যরাতে কাঁদে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের সেই বেদনাবিধুর বাড়িটি। এখানেই ৭৫-এর ১৫ আগস্ট রাতে খুন হয়েছিলেন পিতা সপরিবারে। আজ থেকে এখানে ঢল নামবে সর্বস্তরের মানুষের। অবনত মস্তকে, শোকে-বেদনায়, পরম শ্রদ্ধা জানাবেন পিতাকে, হারানো স্বজনদের। চোখের জল ও পুষ্পার্ঘ্যে উথলে উঠবে শোক। মানুষ নতুন করে শপথ নেবে দেশ গড়ার, মানুষকে ভালোবাসার।

জলাবদ্ধতা দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ 

ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য বক্স কালভার্টগুলো খুলে দিয়ে এর ওপর দিয়ে উড়ালসেতু বানানোর প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে কাজ শুরুর নির্দেশ দেন তিনি। সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর অনানুষ্ঠানিক আলোচনাকালে তিনি এ নির্দেশ দেন। সচিবালয়ের কেবিনেট কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা ছাড়াও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালগুলোর ওপর বক্স কালভার্ট থাকার কারণে ভেতরের ময়লা পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না। এতে পানিও দ্রুত নিষ্কাশন হতে পারে না। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এছাড়া বুড়িগঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদী হেভি ড্রেজিং মেশিন দিয়ে খনন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
একইসঙ্গে ড্রেজিং করা বালু বিক্রির ব্যবস্থা করার জন্যও তিনি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সরকারের আমলে ঢাকা শহরের খালগুলো দখল হয়েছে।
 
মানি লন্ডারিং আইনে মুসার বিরুদ্ধে মামলা

বিলাসবহুল গাড়িতে ২ কোটি ১৭ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকি ও সুইস ব্যাংকে ৯৬ হাজার কোটি টাকার অস্বচ্ছ হিসাব দাখিলের কারণে ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার প্রতিরোধ (মানি লন্ডারিং) আইনে মামলা হয়েছে। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এ মামলা দায়ের করে।

গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, মুসা বিন শমসেরের ব্যবহার করা বিলাসবহুল একটি গাড়ি এ বছরের ২১ মার্চ আটক করে শুল্ক গোয়েন্দাদের একটি দল। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে কালো রেঞ্জ রোভার গাড়িটি কেনা হয়। অনুসন্ধানে মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা কালো রেঞ্জ রোভার মডেলের একটি গাড়ি ভোলা বিআরটিএর কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে ভুয়া কাগজ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন এবং বেনামে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ পাচারের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দারা। মুসা বিন শমসের ১৭ লাখ টাকা শুল্ক পরিশোধ দেখিয়ে ভুয়া বিল অব এন্ট্রি প্রদর্শন করে গাড়িটি বেনামে নিবন্ধন করেন। কিন্তু শুল্ক গোয়েন্দারা অনুসন্ধানে দেখতে পান, এ গাড়িতে ২ কোটি ১৭ লাখ টাকার শুল্ক কর জড়িত। গাড়িটি পাবনার ফারুকুজ্জামান নামের এক ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রেশন নেয়া হয়। রেজিস্ট্রেশন-প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির সংযোগ থাকায় তা পৃথকভাবে তদন্তের জন্যও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অনুরোধ করা হয়েছে।

শুল্ক গোয়েন্দার জিজ্ঞাসাবাদে মুসা বিন শমসের লিখিতভাবে জানান, সুইস ব্যাংকে তার ৯৬ হাজার কোটি টাকা জমা আছে। কিন্তু তিনি এ টাকার কোনো ব্যাংক হিসাব বা বৈধ উৎস দেখাননি। কয়েকবার নোটিস দিলেও তিনি তা জমা দেননি।
আওরঙ্গাবাদে আবারও বিক্ষোভের মুখে 

তসলিমা নাসরিন

দীর্ঘ প্রায় ২ দশকের বেশি সময় ধরে নির্বাসিত রয়েছেন বাংলাদেশে বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। স্থানীয় জনতার বিক্ষোভের মুখে মহারাষ্ট্রের আওরঙ্গাবাদ বিমানবন্দর থেকে ফিরে যেতে হয়েছে বাংলাদেশী লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে। আওরঙ্গাবাদের পুলিশ জানিয়েছে, লেখিকা তসলিমা নাসরিন শহরের একটি হোটেলে থাকার জন্য ঘরও বুক করেছিলেন- কিন্তু শনিবার সন্ধ্যায় মুম্বই থেকে আওরঙ্গাবাদ বিমানবন্দরে নামার পরই তিনি প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন। এর আগে হায়দ্রাবাদ ও কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন শহরেই তসলিমা নাসরিনকে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। এমন কী শারীরিকভাবেও তাকে লাঞ্ছনা করার চেষ্টা হয়েছে।

সুইডেনের পাসপোর্টধারী তসলিমা নাসরিন ভারতের ভিসা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে প্রধানত দিল্লিতেই বসবাস করেন। অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) নামে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের শত শত কর্মী বিমানবন্দরের বাইরে জড়ো হয়ে ‘তসলিমা গো ব্যাক’ শ্লোগান দিতে থাকেন। তদের বক্তব্য ছিল, ইসলাম-বিরোধী লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে কিছুতেই আওরঙ্গাবাদ শহরে পা রাখতে দেওয়া হবে না। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ তসলিমা নাসরিনকে বিমানবন্দরে বাইরে বেরোনোর অনুমতি দেয়নি। শেষ পর্যন্ত এয়ারপোর্টেই বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তিনি পুলিশের পরামর্শ মেনেই ফিরতি বিমানে মুম্বই ফিরে যান বলে জানা গেছে।

কলকাতায় তার প্রবেশের ওপর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আছে, তবে নিরাপত্তাগত ঝুঁকির কারণে ভারতের অন্যত্রও যে তিনি অবাধে ঘোরাফেরা করতে পারেন তা নয়। তবে আওরঙ্গাবাদের ঘটনা নিয়ে তসলিমা নাসরিন সংবাদমাধ্যমের সামনে এখনও মুখ খোলেননি। তাকে আপাতত একটি অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

Saturday, July 29, 2017

বিনোদন জগতে পরিচিত মুখঃ 

আমেরিকায় এখন তারা ফুলটাইম সংসারী! 

সংসার নামক শব্দটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না। সংসার করে হয়তো কেউ সুখি অথবা কেউ দুঃখী। আর এই নিয়েই তো জীবন। সেই সংসার জীবনে কিছু চাওয়া থাকে, কিছু পাওয়া থাকে। কখনও পূরণ হয়, আবার কখনও পূরণ হয়না। কিন্তু তাই বলে তো আর থেমে নেই জীবন। অনেক স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে এ জীবন।
বেঁচে থাকতে হলে প্রয়োজন জীবিকার। সেই জীবিকার তাগিদেই সবাই যে যার মতো ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অথচ এই সংসার নিয়েই নিজেদের কর্মের জায়গা ছেড়ে দিয়ে শুধুমাত্র সংসার নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন এক সময়কার জনপ্রিয় তারকারা। তারা হলেন অভিনেত্রী রোমানা, বিন্দু, নাফিজা ও প্রিয়া ডায়েস। তারা অভিনয়ের মাধ্যমে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়লেও পরবর্তীতে তারা হয়ে উঠেছেন ‘ফুলটাইম সংসারী’। অভিনয় তো ছেড়েছেন, সেই সঙ্গে ছেড়েছেন নিজের দেশও। আমেরিকায় এই ফুলটাইম সংসারীদের নিয়েই আজকের বিশেষ আয়োজন।
রোমানা খান: জনপ্রিয় অভিনেত্রী রোমানা খান। এ মুহূর্তে আমেরিকাতে অবস্থান করছেন। স্থায়ীভাবেই বাস করছেন নিউইয়র্কে। দেশে ফিরবেন কি ফিরবেন না, এমন কিছুই জানা যায়নি। গত বছরই বিয়ে করেছিলেন আমেরিকার বাংলাদেশি প্রবাসী ও ব্যবসায়ী এলিন রহমানকে। এরপর থেকে স্বামীর সঙ্গে সেখানেই স্থায়ী হয়েছেন রোমানা। বিয়ের পর বেশ সুখেই আছেন জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী। আর সেটা তার ফেসবুক প্রোফাইলে গিয়ে দেখলে বোঝা যায়। নিউইয়র্কে থাকার কারণে দেশের শোবিজ অঙ্গনের বন্ধুদের সঙ্গেই যোগাযোগ নেই রোমানার। শুধু তাই নয়, বিয়ের পরপরেই তিনি ঘোষণা দিয়ে অভিনয় ছেড়ে দেন। ব্যস্ত হয়ে ওঠেন তার সংসার জীবন নিয়ে।
রোমানা খান
আফসানা আরা বিন্দু: বিন্দু লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগীর মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। যদিও তিনি সেখানে প্রথম রানার আপ হয়েছিলেন। বিন্দুর প্রথম চলচ্চিত্র হুমায়ূন আহমেদের ‘দারুচিনি দ্বীপ’ ছিল ব্যবসায়িকভাবে সফল। ধীরে ধীরে তিনি মডেল এবং উপস্থাপক হিসেবেও খ্যাতি লাভ করেন। এরপর 'জাগো' তার আরও একটি ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র। বিন্দু অসংখ্য জনপ্রিয় টেলিফিল্ম, নাটক, মডেলিং এবং বিজ্ঞাপণ চিত্রে কাজ করেছেন। তার সর্বশেষ অভিনীত ‘এইতো প্রেম’ চলচ্চিত্রটি গত ১৩ মার্চ ২০১৫ মুক্তি পায়। কিন্তু এর আগে ২০১৪ সালের ২৪ অক্টোবর আমেরিকা প্রবাসী আসিফ সালাহউদ্দিন মালিকের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যান। তারপর থেকেই তিন আর অভিনয়ে নিয়মিত হতে পারেননি। তার ঘোষণা দিয়েই মিডিয়া ছেড়ে দেন তিনি। স্বামীর সঙ্গে আমেরিকাতে এখন বর্তমানে সংসার নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন বিন্দু।
আফসানা আরা বিন্দু
নাফিজা জাহান: লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার মঞ্চ থেকে মিডিয়াতে নাম লেখান নাফিজা জাহান। নাটক ও টেলিফিল্মে নিজেকে প্রমাণ করেন, হয়ে ওঠেন ব্যস্ত তারকা। তবে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি দেশ ছাড়েন তিনি, পাড়ি জমান আমেরিকায়। ছয় মাস পরে দেশে ফিরে এসেছিলেন নাফিজা, হাতেগােনা কয়েকটি কাজ করে আবারও উড়াল দেন যুক্তরাষ্ট্রে। গুঞ্জন শােনা যায় সংগীতশিল্পী এস আই টুটুল ও অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদের ভাগ্নে দীপকে বিয়ে করেছেন নাফিজা। তবে তিনি নিজেই বিয়ের খবর অস্বীকার করে সমালোচিত হন- কারণ যুক্তরাষ্ট্রে একসঙ্গেই থাকতেন তারা। মিডিয়াতে কাজ করার সময় শরীর সচেতন থাকলেও বিদেশে পড়াশােনা এবং গুঞ্জনে থাকা সংসার করতে গিয়ে বেশ স্বাস্থ্যবান হয়েছেন নাফিজা। দেখলেই বোঝা যায়, অনেকদিন মিডিয়াতে অনুপস্থিত তিনি। তিনিও আর অভিনয়ে ফিরছেন না। মোটকথা আমেরিকাতেই গুঞ্জনে থাকা সংসার নিয়েই তিনি ব্যস্ত রয়েছেন।
নাফিজা জাহান
প্রিয়া ডায়েস: প্রিয়া ডায়েস ও টনি ডায়েস বাংলাদেশের টিভি নাটকের এক সময়ের পরিচিত মুখ। অনেক বছর হলো অভিনয় থেকে দূরে সরে রয়েছেন তারা। শুধু যে দূরে তা কিন্তু নয়, এই দম্পতি বর্তমানে দেশ ছেড়ে রয়েছেন আমেরিকাতে। ডায়েস দম্পতি ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন ‘২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী’। তাদের একমাত্র কন্যা ‘অহনা’ পড়াশোনায় ভাল। সে এখন স্থানীয় একটি স্কুল থেকে মিডেল ক্লাস শেষ করেছে। টনি ডায়েসের ফেসবুকে প্রবেশ করলে দেখতে পাওয়া যায় তিনি নিয়মিত ছবি আপলোড করেন। আমেরিকার বিভিন্ন জায়গাতে বিভিন্ন সময় পরিবার নিয়ে ঘোরার ছবি আপালোড করেন। হাস্যজ্জ্বল তাদের ছবি দেখে বোঝা যায় বেশ ভালো আছেন জনপ্রিয় এই দম্পতি। সম্প্রতি পাঁচ বছর পর দেশে এসেছেন প্রিয়া। ফিরে যাবেন আবার তিন সপ্তাহ পর।
প্রিয়া ডায়েস
পরিশেষে কথা হচ্ছে, তারা গুণী অভিনেত্রী হলেও তাদের গুণ এখন সংসারে। তারা ঠিক যে ভাবে মন দিয়ে অভিনয় করেছিলেন ঠিক সেই ভাবেই মন দিয় সংসারে ব্যস্ত। হয়ত তারা আর কখনও ফিরে আসবেন না অভিনয়ে।

চিকিৎসা নিতে যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের রোগীরা  

এখন বাংলাদেশে আসেন!

যেখানে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের মানুষ পাগলের মত ছুটে যায় ভারত, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে। সেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা নিতে আসছেন বাংলাদেশে! হতবাক করা খবর হলেও ঘটনা সত্য। বাংলাদেশের ডাক্তারদের কাছেই যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মত দেশ থেকে রোগীরা আসছেন ক্রনিক হেপাটাইটিস’র চিকিৎসা নিতে! বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হেমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) ও জাপান প্রবাসী চিকিৎসাবিজ্ঞানী ডা. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর বাংলাদেশে সফল হেপাটাইটিস চিকিৎসার নেপথ্য কারিগর।
বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস উপলক্ষ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেপাটাইটিস  চিকিৎসার সাফল্য সম্পর্কে ডা. স্বপ্নীলের দেয়া বর্ণনা প্ল্যাটফর্ম নামক ওয়েবপোর্টালে তুলে ধরেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মারুফুর রহমান অপু। বাংলাদেশি চিকিৎসকদের উদ্ভাবিত প্রথম নিউ ড্রাগ মলিউকিউল যেটি ক্লিনিকাল ট্রায়ালের নানা ধাপ পেরিয়ে শেষ ধাপে আছে। বর্তমানে কিউবাসহ পৃথিবীর আরো কিছু দেশে ইতিমধ্যে বাজারজাত শুরু হয়েছে। 
যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ এবং বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসন এর অনুমতি নিয়ে নাসভ্যাক এর  ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালিয়ে দেখা গেছে ন্যাসভ্যাক প্রয়োগে ৬ মাসে ৫৯% হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের কারনে ক্রনিক হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগী সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করেছেন। প্রচলিত স্বীকৃত ওষুধ পেগাইলেটেড ইন্টারফেরন প্রয়োগে আরোগ্য পেয়েছেন ৩৮ শতাংশ রোগী। বর্তমানে ওষুধটি জাপানে মাল্টি সেন্টার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে আছে। প্রয়োজনীয় আইন না থাকায় এটি এখনো বাংলাদেশে প্রস্তুত করা যায় নি তবে আগামী ২-১ বছরের মাঝেই এটি বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
এখানেই সাফল্যের গল্পের শেষ নয়! যদি বলি এদেশেই স্টেম সেল থেরাপী দেয়া হচ্ছে! হ্যাঁ, ডা. সপ্নীল ও তার দল  বাংলাদেশেই স্টেম সেল থেরাপীর মাধ্যমে লিভার সিরোসিস বা ফেইলিউর হয়ে যাওয়া রোগীদের চিকিৎসা শুরু করেছেন। লিভার সিরোসিস বা ফেইলিউর হওয়া অধিকাংশ রোগী মৃত্যুবরণ করেন এবং এর প্রচলিত চিকিৎসা লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট । যাতে খরচ প্রায় ৪০-৫০ লক্ষ টাকা  আর উপযোগী ডোনার পাওয়াও কষ্টসাধ্য।
কিন্তু স্টেমসেল পদ্ধতিতে চিকিৎসা খরচ মাত্র ৫০ হাজার থেকে দেড় লক্ষ টাকা। স্টেম সেল ব্যবহারের পদ্ধতিটি নতুন না হলেও ডাঃ স্বপ্নীল ও তার দল নিজস্ব উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে সরাসরি লিভারের আর্টারিতেই স্টেম সেল প্রয়োগ করছেন এবং এ প্রক্রিয়া ৩ জন রোগীর উপর প্রয়োগ করে ইতিমধ্যে সাফল্য  পেয়েছেন। আর একটি বিষয় জানা দরকার যে, হেপাটাইটিস-বি এর পাশাপাশি হেপাটাটিস-সি ভাইরাসও লিভার নষ্ট হয়ে মারা যাবার অন্যতম কারণ। বহির্বিশ্বে  এই রোগে ব্যবহার্য ওষুধের মূল্য প্রায় ১ লক্ষ ডলার! কিন্তু বাংলাদেশে সেই একই ওষুধ এর মূল্য কত জানেন? মাত্র ১ হাজার ডলার! তৈরি করছে ইনসেপ্টা এবং বিকন।
মূল একটিভ মলিকিউল তৈরি করা কোম্পানি বাংলাদেশ ও ভারতে এই ওষুধ তৈরির অনুমতি দিয়েছে। বাংলাদেশ ২০৩৩ সাল পর্যন্ত পেটেন্ট রেস্ট্রিকশন পাওয়ায় এখানে এই ওষুধের দাম ভারতের চেয়ে কম। তাই বহির্বিশ্বের প্রচুর রোগী এই ওষুধ নিতে সরাসরি বাংলাদেশে আসছেন এবং অনলাইনেও অর্ডার দিচ্ছেন।

ইসির সংলাপঃ

সোমবার থেকে শুরু

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন বিশেষজ্ঞসহ অংশীজনদের সঙ্গে আগামী ৩১ জুলাই সোমবার থেকে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই দিন সকাল পৌনে ১১টায় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিষয়াদী নিয়ে সুশীল সমাজের সঙ্গে কমিশন সংলাপে বসবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামান জানান, সংলাপে কমিশন প্রণীত নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ উপস্থাপন করে এ বিষয়ে নির্বাচন বিশষজ্ঞ, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, পর্যবেক্ষক, নারী নেত্রীসহ প্রধান অংশীজনদের মতামত নেয়া হবে। তাদের পরামর্শ ও মতামতের উপর ভিত্তি করে কমিশন তার কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। তিনি বলেন, নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপের আলোকেই সংলাপের এজেন্ডা বা কার্যপত্র তৈরি করা হয়েছে। 
সংলাপে নির্বাচনী আইন ও বিধিমালা সংশোধন, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ আইন যুগোপযোগী করা, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়নে পরামর্শ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত কার্যক্রম যুগোপযোগী করা বিষয়ে পরামর্শ, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নিরীক্ষা সংক্রান্ত প্রস্তাবনাসহ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয় মতামত গ্রহণ সংলাপের এজেন্ডায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।  এস এম আসাদুজ্জামান জানান, সংলাপে অংশগ্রহণের জন্য সুশীল সমাজের ৫৯জন প্রতিনিধিকে ইসির পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সংলাপে যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন- তত্ত্ববধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান, এম হাফিজ উদ্দিন খান, এডভোকেট সুলতানা কামাল, আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, বেগম রাশেদা কে চৌধুরী, মির্জা আজিজুল ইসলাম, বেগম রোকেয়া এ রহমান, ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, বিচারপতি গোলাম রব্বানী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ড. শাহদীন মালিক, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক সচিব ড. সা’দত হোসেন, সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, মেজর (অব.) এসএম শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, অধ্যাপক ড. অজয় রায়, ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, আসিফ নজরুল, অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক আবুল বারাকাত, তারেক শামসুর রেহমান, সাংবাদিক কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ এবং টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

Friday, July 28, 2017

‘গোটা আমেরিকা উত্তর কোরিয়ার হামলার আয়ত্ত্বে’ 

আবারও ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি হুমকি ছুড়ে দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার ওপর মার্কিন সিনেট নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর দিনই এ পরীক্ষা চালানো হলো। কিম জং উন বলেন, এই পরীক্ষা প্রমাণ করে গোটা আমেরিকা পিয়ংইয়ংয়ের হামলার আয়ত্ত্বের মধ্যে এলো। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) খবরে বলে, শুক্রবার ওই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়। ক্ষেপণাস্ত্রটি ৪৭ মিনিট পরে ৩৭২৪ কিলোমিটার দূরে জাপান সাগরে গিয়ে পড়ে।
ক্যালিফোর্নিয়ার মিডলবারি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের পারমাণবিক বিশেষজ্ঞ জেফরি লুইস বলেছেন, প্রাথমিক সূত্রগুলো থেকে মনে হচ্ছে, সর্বশেষ পরীক্ষা চালানো ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম। আর এই সফলতায় কিম জং উন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তিনি ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে উন্নত করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদও জানান। কিম জং উন বলেন, নতুন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা প্রমাণ করে উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে হামলা করতে সক্ষম। উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়া তাদের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ নিতে আমাদের বাধ্য করার পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন, এ ঘটনায় জাপানের নিরাপত্তা হুমকি আরো গুরুতর ও বাস্তবিক হয়ে উঠেছে। পেন্টাগন মুখপাত্র ক্যাপ্টেন জেফ ডেভিস বলেছেন, যেকোনো ধরনের আক্রমণের জন্য আমরা প্রস্তুত এবং আমাদের মিত্রদেরও প্রস্তুত রেখেছি।জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলতি বছরে এ নিয়ে ১৪ বার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালালো উত্তর কোরিয়া।

কাশ্মীরের বাঁকে বাঁকে

রেল থেকে নেমে ধীরগতিতে সামনে এগোলাম। চারদিক অন্ধকার। নতুন জায়গা, নতুন পরিবেশ। ভোর হতে তখনো ঘণ্টাখানেক বাকি। অস্পষ্টভাবে নজরে পড়ল বড় এক নামলিপি। লেখা ‘স্বাগতম জম্মু-কাশ্মীর’। জম্মু, কাশ্মীর উপত্যকা ও লাদাখ-অঞ্চল নিয়ে কাশ্মীর রাজ্য। শীতকালীন রাজধানী জম্মু, গ্রীষ্মকালীন শ্রীনগর। গন্তব্য আমাদের শ্রীনগর। টিকিট কেটে গাড়িতে চেপে বসলাম। ধীরে ধীরে সূয্যিমামা উঁকি দিল পূব দিগন্তে। বরফে ঢাকা পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য চোখে পড়তে লাগল। সবুজে ভরা আশপাশ। অনিন্দ্য পরিবেশ। গাড়ি এগোচ্ছে শ্রীনগরে।
শ্রীনগর কাশ্মীরের একটি অন্যতম শহর। শ্রীনগরের জনবসতি লাখ দশেকের বেশি। শহরটি ঝেলুম নদীর তীরে কাশ্মীর উপত্যকায়। চারপাশে রয়েছে হ্র্রদ, বরফে ঢাকা পাহাড়, সুজলা-সুফলা তেপান্তর। ‘উইলো গাছে পূর্ণ অরণ্য পর্যকটদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান। এতে তৈরি হয় কার্পেট, রেশম ও পশমের বস্ত্র, কাঠ ও চামড়ার বিভিন্ন জিনিসপত্র।’ কথাগুলো বেশ আগ্রহভরে জানালেন স্থানীয় এক লোক। পরিচয় হলো বেড়াতে এসে। গাড়িটা দাঁড়িয়ে পড়ল হঠাৎ। লক্ষ করলাম চেকপোস্ট। কিছুটা ভড়কে গেলাম যেন। প্রতিটি পয়েন্টে রয়েছে এমন শত চেকপোস্ট। কাশ্মীর ভূস্বর্গ হলেও যুদ্ধকবলিত একটি রাজ্য। একে ঘিরে এ অবধি ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে তিনটে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, ১৯৪৭, ১৯৬৫ ও ১৯৯৯ সালে। এখনো মাঝে মাঝে উভয়পক্ষে হামলা-পাল্টা হামলা চলে। ফলে আতঙ্কে থাকতে হয় পর্যটক কিংবা স্থানীয়দের। এসব কাহিনি শুনতে শুনতে এবং পাহাড়-পর্বত দেখতে দেখতে পা রাখলাম শ্রীনগরে। হাজি বশির চাচা নিয়ে এলেন তার বাসায়। রাত তখন ৮টা। শীতে কম্বল জড়ালাম গায়ে। চা-বিস্কুটের ব্যবস্থা করলেন তিনি। কাশ্মীরের লোকজনের স্বভাবও বেশ গল্প করার মতো। হাজি সাহেবের আপ্যায়নে তেমনটাই বুঝতে পারলাম।
পরদিন ভোরে নাশতা সারলাম তড়িঘড়ি। এরপর ছুটলাম গুলমার্গ। কাশ্মীরের মূল পর্যটনকেন্দ্র যেটি। শীতকালে বরফে ঢাকা থাকে রাস্তাঘাট, গাছপালা, মাঠঘাট। তখন গুলমার্গের সৌন্দর্য বেড়ে যায় দ্বিগুণ। বরফের ওপর স্কিয়িং ছাড়াও গুলমার্গের অন্যতম আকর্ষণ নানা ধরনের ফুল ও সবুজে ঢাকা পরিবেশ। শ্রীনগর থেকে প্রায় ৫৮ কিলোমিটার দূরে জম্মু-কাশ্মীরের বারামূল্লা জেলা। উচ্চতা ২৭৩০ মিটার। দেড় ঘণ্টা বাদে পৌঁছলাম। বরফে ঢাকা চারপাশ। মাখামাখি করে গড়ালাম বহু সময়। বাঁয়ে পড়ল প্রিমিয়াম ক্লিনিক। বেড়াতে আসা কেউ অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। এর ঠিক কুড়ি মিটার দূরত্বে গুলমার্গ জামে মসজিদ। ভেতরে নামাজের সুন্দর পরিবেশ। তুষারপাতের দৃশ্য উপভোগ করতে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারিজুড়ে এখানে ব্যবহৃত হয় স্কিয়ার। ভারী ঠান্ডা হলেও আনন্দে কমতি রইল না। আশপাশের সবার মাঝেই একপ্রকার উল্লাসের ছাপ দেখতে পেলাম। প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য অন্য কোথাও বিরল। ‘ভূস্বর্গ কাশ্মীর’ এর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই গুলমার্গ।
দ্বিতীয় দিন চললাম কাশ্মীরের অন্যতম পর্যটককেন্দ্র নিশাতবাগ। চতুর্দিক নানা ফুলে ভরপুর। নয়নাভিরাম সৌন্দর্যময় দৃশ্য অবলোকনে মুগ্ধ হচ্ছি বারবার। টিকিট কেটে ভেতরে গেলাম আমরা পাঁচজন। প্রথমেই নজরে পড়ে ঝরনাধারা। হাত দিয়ে ছোঁতেই ভয় পেয়ে গেলাম। ঠান্ডা ভাব পুরো শরীর ছেয়ে গেল। পাশেই ছিলেন বশির চাচা। বললেন, ‘এত তেমন ঠান্ডা না। অথচ দুই মাস আগেও এর দ্বিগুণ ছিল।’ তার কথা শুনে অবাক হয়ে বললাম, আপনারা থাকেন কিভাবে?
-এভাবেই। অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। আমরা অন্যত্র এক সপ্তাহও থাকতে পারব না।
-কেন?
- কারণ, গরম সহ্য করার ক্ষমতা আমাদের কারোর নেই।
- ওহ
হাঁটছিলাম আর কথা বলছিলাম বশির চাচার সঙ্গে। এদিকে দর্শকদের আনাগোনা ধীরে ধীরে বেড়েই চলছে। কেউ ছবি তোলায় ব্যস্ত আবার কেউ সঙ্গীদের নিয়ে আনন্দে মগ্ন। বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের দেখে মনের ভেতর আনন্দ ভরে ওঠল। তবে বাংলাদেশ থেকে ছিলাম কেবল আমরা পাঁচজন। বলছিলাম নিশাতবাগের কথা। শ্রীনগরের মুঘল বাগানগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা সুন্দর হচ্ছে নিশাতবাগ। মুঘল স¤্রাট শাহজাহানের শ্বশুর এবং স¤্রাজ্ঞী নূরজাহানের বড় ভাই আসিফ খান ১৬৩৩ সালে এই বাগানটি তৈরি করেন। প্রাকৃতিক একটি ঝরনাকে কৃত্রিমভাবে বিভিন্ন ভঙ্গিতে প্রবাহিত করা হয়েছে এবং এই ঝরনাটিতে আছে শত শত কৃত্রিম ফোয়ারা। নীল পাহাড়ের কোলে দাঁড়িয়ে থাকা এই নিশাতবাগ গড়ে ওঠেছে ৪৬ একর জায়গাজুড়ে। বাগানটিতে মোট ১২টি সোপান আছে অর্থাৎ বাগানটি ধাপে ধাপে ১২ তলা পর্যন্ত ওঠে গেছে। ওপরের ধাপটি মুঘল হেরেমের জন্য সংরক্ষিত ছিল। এই বাগানটিও পারস্য বাগানের রীতিতে গড়ে উঠেছে, যেখানে ইসলামী স্থাপত্য নকশা প্রাধান্য পেয়েছে। দ্বাদশ সোপান থেকে পাহাড়ের প্রাকৃতিক ঝরনার পানি কৃত্রিম নহরের মাধ্যমে বিভিন্ন ফোয়ারার সাহায্যে নেমে এসেছে এবং সবশেষে এটি ডাল লেকে গিয়ে পড়েছে। এই নহরের পাশে রয়েছে হাজার হাজার ফুলের গাছ এবং চীনার গাছ। ঘণ্টাখানেক ঘুরে বেরিয়ে এলাম নিশাতবাগ থেকে। শেখ সাদি আর মাসুদকে বললাম, চল এবার চলি পরীমহলে। পরীমহলকে ঘিরে জড়িয়ে আছে অনেক ইতিহাস। বশির চাচাকে বলতেই রাজি হয়ে গেলেন। গাড়িতে চেপে বসলাম সবাই। চালাচ্ছেন চাচা নিজেই। এক ঘণ্টার মধ্যে চলে এলাম পরীমহলে। বাহির থেকে নান্দনিক দৃশ্য দেখে ভেতরে প্রবেশে অনেকটা তাড়া করছিলাম। ভেতর দৃশ্যগুলো বারবার আমাদের মুগ্ধ করছিল। ভূস্বর্গ কাশ্মীর সত্যিই অসাধারণ। আপনাকে আসতে হবে তাতে, জানতে হলে ভূস্বর্গ কাশ্মীর সম্পর্কে। ১৬৫০ সালে মুঘল স¤্রাট শাহজাহানের বড় পুত্র দারাশিকো এই পরীমহল গড়ে তোলেন। সুপ্রশস্ত বাগানঘেরা এই মুঘল স্থাপনাটি মোট সাততলা। এটি মুঘল সা¤্রাজ্যের একটি অনন্য নিদর্শন। যুবরাজ দারাশিকো এখানে লাইব্রেরি গড়ে তোলেন এবং এটিকে কেন্দ্র করেই এই বাগান। তবে শ্রীনগরের অন্যান্য মুঘল বাগানগুলোর মতো এখানে দৃশ্যমান কোনো পানির নহর বা ফোয়ারা নেই। কিন্তু পানি সংরক্ষণের জন্য জলাশয় আছে। সাততলার এই স্থাপনার একটি তলা কবুতরের জন্য বরাদ্দ ছিল। এই পরীমহলে যুবরাজ দারাশিকো জ্যোতিষশাস্ত্রের জন্য অ্যাস্ট্রলজিক্যাল স্কুল গড়ে তুলেছিলেন। যদিও শ্রীনগরের অন্যান্য মুঘল স্থাপনার মতো এটি অতটা যতেœ সংরক্ষিত নয়, তবু এখানে এলে মুগ্ধ হতেই হয়। বিশেষ করে এটি এত উঁচু পাহাড়ে অবস্থিত যে পরীমহলের সামনের অংশে দাঁড়ালে পুরো ডাল লেক পাখি চোখে দেখা যায়। হঠাৎ জোহরের সুমধুর আজান ভেসে এলো। চাচা বললেন, পরীমহলের কোথাও নামাজ পড়ে নেই। আমরাও চাচার কথায় সম্মতি দিলাম। এদিকে সাদি ব্যাগ থেকে কাপড় বের করে ফেলল। বিছিয়ে দিলাম বাগানের ওপর। আমাদের সঙ্গে শরিক হলেন ঘুরতে আসা আরো অনেকে। নামাজ শেষে আলিঙ্গন করলাম। মনে হচ্ছিল আপন কারো সঙ্গে আলিঙ্গন করছি। কাশ্মীরীদের আচার-আচরণ সত্যিই গল্প করার মতো। ভূস্বর্গ কাশ্মীর যেমনিভাবে পরিচিত, তদ্রƒপ তাদের আপ্যায়ন আর ব্যবহারও স্বর্গীয়। ।
বশির চাচা গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। বললেন, অদূরে হজরত বাল মসজিদ। সেখানে হুজুর (সা.) এর চুল মোবারক দেখানো হয় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর। তাই আমাদের গন্তব্য এখন হজরত বাল মসজিদ। আমরা সানন্দে ওঠে পড়লাম গাড়িতে। আধঘণ্টার পথ পেরিয়ে চলে এলাম মসজিদে। অজু করে মসজিদের প্রবেশ করতেই দেখলাম মুসল্লিদের ক্রন্দন শব্দ। বললাম, কাঁদছে কেন?
-এদের অনেকের স্বামী, স্ত্রী ও সন্তান শহীদ হয়েছেন। তাই আল্লাহর দরবারে দুহাত তুলে কাঁদছেন। বিচার চাচ্ছেন আল্লাহর কাছে। মুখটা মলিন হয়ে গেল। কতইনা কষ্ট তাদের। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র কত দুঃসহ। আসর নামাজের পর দাঁড়িয়ে আছি। প্রচ- ভিড়। চাচা বললেন, ‘এখনই হুজুর (সা.) এর চুল মোবারক দেখাবে।’ আগ্রহভরে অপেক্ষা করছিলাম। আচানক মসজিদের ইমাম সাহেব উঁচু মিনারে দাঁড়িয়ে চুল মোবারক দেখাচ্ছেন। চারপাশে কান্নার আওয়াজ। মনের অজান্তে চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ছে। পুরোটা বুক কখন ভেজে গেছে টের পাইনি। সত্যি এমন দৃশ্য যে কাউকে কাঁদাতে বাধ্য। এভাবে অনেকটা সময় চলে গেল। মনে হচ্ছিল, স্বর্গীয় কোনো বাগানে দাঁড়িয়ে আছি। ইমাম সাহেব চুল মোবারক নিয়ে চলে গেলেন কিছুক্ষণ আগে। আমরাও নিচে নেমে এলাম। গন্তব্য এখন বশির চাচার বাসায়। পথে জিজ্ঞেস করলাম কাশ্মীরি শালের দাম কেমন? চাচা জানালেন, সর্বনিম্ন ১০০০ সর্বোচ্চ ১ লাখ রুপি। পাশেই থামিয়ে বললেন, ‘এখান থেকে কিনে নাও। স্মৃতিস্বরূপ কয়েকটি কিনেও নিলাম।
কিছুদূর এগোতেই চাচা বললেন, এটা হলো শহীদদের কবরস্থান। গাড়ি থামিয়ে দিলেন। ফটকের সামনে দাঁড়াতেই আয়াতটি নজরে পড়ল। ‘যারা আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হন, তাদের তোমরা মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।’ (আল কোরআন) শ্রীনগর, কাশ্মীর ঈদগাহ্র পাশের শহীদদের কবরস্থান। যারা শহীদ হোন, সবার দাফন এখানেই করা হয়। ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম। প্রবেশ করলাম মাকবারায়। ভেতরে যেতেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। মনের অজান্তে শিহরিয়ে উঠলাম। সামনে এগোতেই ছয়টি কবর দেখে দৃষ্টি আর ফেরাতে পারিনি। এক সপ্তাহ আগেই শহীদ হয়েছেন ছয় ভাই। প্রতিটি কবর ভালোভাবে দেখলাম। কবর জিয়ারত শেষে ফিরে আসি আপন গন্তব্যে। রাত শেষে সকাল হতেই চাচার চোখে পানি। জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছেন। বলছেন, ‘তোমাদের বিদায় দিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আরো কিছুদিন থেকে যাও।’ আমরাও চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। কোথা থেকে এলো এই ভালোবাসা। চোখ বুঝে এলো বশির চাচা ও তার পরিবারের সদস্যদের দেখে, প্রতিটি কাশ্মীরি ভাইদের আচরণ দেখে। চলে এলাম কাশ্মীর ছেড়ে, জড়িয়ে নিলাম ভালোবাসার বন্ধনে একটি পরিবারকে, পুরো কাশ্মীরকে। কাঁদালাম, কাঁদলাম। ভালোবাসাময় সফরের ইতি হলো চোখের অশ্রু দিয়ে।
যেভাবে যাবেন : ঢাকা বিমানবন্দর থেকে বিমানে দিল্লি। ভাড়া ১২ হাজার (পরিবর্তনশীল)। দিল্লি থেকে শালিমার এক্সপ্রেস ট্রেনে জম্মু। ভাড়া ৩৪৫ রুপি। জম্মু থেকে বাসে শ্রীনগর। ভাড়া ৭০০ রুপি। শ্রীনগর থেকে বাসে কিংবা মাইক্রো করে যেখানে খুশি যেতে পারবেন। ভাড়া ১০০ রুপির ভেতর। 
লেখক: আহমদ আবদুল্লাহ

জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শেষ

জনদুর্ভোগ কমিয়ে স্বস্তি ফেরানোর নির্দেশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২৩টি নির্দেশনাসহ মোট ৩২১টি নির্দেশনা অনুসরণের নির্দেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন। বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের সমাপ্তি অধিবেশনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. শফিউল আলম ৩২১টি নির্দেশনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত ২৩টি নির্দেশনা বিবেচনায় রেখে প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসেবে এবং মাঠ পর্যায়ে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনেরও আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. শফিউল আলম ডিসিদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা জেলার শীর্ষ কর্মকর্তা, কিন্তু প্রভু নন। জনগণের সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এই সম্মেলনে আপনারা যেসব সমস্যার কথা বলেছেন, সেগুলো পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে, যা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং সচিবরা প্রতিশ্রুত দিয়েছেন।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জেলায় জেলায় জনদুর্ভোগ কমিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি এবং সরকারের প্রতি আস্থা ফেরাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি)। এর পাশাপাশি সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুর্নীতি কমিয়ে আনতে ডিসিদের হস্তক্ষেপ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আর প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে উভয় পক্ষকে সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে, যাতে তাদের সংঘাতের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ না হয়। গতকাল বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের মতবিনিময়কালে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা এসব নির্দেশনা ও তাগিদ দেন। সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদের সম্মেলনকক্ষে তিন দিনব্যাপী সম্মেলন গতকাল শেষ হয়েছে। এদিন স্বরাষ্ট্র, আইন, ভূমি, ধর্ম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, নৌপরিবহন এবং সমাজকল্যাণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সচিবদের সঙ্গে ডিসিদের এই মতবিনিময় হয়। ডিসি সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। মন্ত্রণালয়ভিত্তিক নানা সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে।
তিন দিনের সম্মেলনে মোট ২২টি অধিবেশনে ৫৭টি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং উপদেষ্টারা পৃথক পৃথকভাবে দিক-নির্দেশনা দেন। এসময় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে তাদের দায়িত্ব পালনকালের সুবিধা-অসুবিধা এবং প্রয়োজনীয়তার কথা শোনেন এবং সমাধানের প্রতিশ্রুত দেন। রুটিন ওয়ার্ক বৈঠকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এমনকি আদালত পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনের সময় পুলিশের সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ তোলেন কোনো কোনো জেলা প্রশাসক।
জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় নির্দিষ্ট কোনো পুলিশ ফোর্স নয়, তাদের (ডিসি) চাহিদা অনুযায়ী তলব করা মাত্রই উপস্থিত হবেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তিনি বলেন, এ কাজের জন্য শুধু পুলিশ নয়, আনসার সদস্যদেরও ডাকতে পারবেন সংশ্লিষ্ট মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তবে, জঙ্গিবাদ ইস্যুতে বর্তমানে কোনো ‘থ্রেট’ না থাকলেও প্রশাসনের কাছে এমন কোনো তথ্য থাকলে তাৎক্ষণিক পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রী আরো বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রশাসনের মধ্যে জেলার সমস্যা নিরসনে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
আর আইনমন্ত্রী ডিসিদের উদ্দেশে বলেন, নি¤œ আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত আইনের খসড়া প্রধান বিচারপতির কাছে তিনি হস্তান্তর করেছেন। রাষ্ট্রের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য পাবলিক প্রসিকিউশন সার্ভিসকে (পিপি, এপিপি ও জিপি) পর্যায়ক্রমে স্বাধীন করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভায় উপস্থিত একাধিক ডিসি নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় পর্যায়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এবারের সম্মেলনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় ডিসিদের সার্বক্ষণিকভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য ১০ জনের পুলিশ বৃদ্ধি, সরকার স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস করার নীতিগত সিদ্ধান্ত, পিপি, এপিপি ও জিপিদের বেতন ভাতা বাড়ানো, ডিসিরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত অব্যাহত রাখার দাবি করেন তারা। তা ছাড়া ওয়াকফ ও দেবোত্তর সম্পত্তি প্রায়ই কালেক্টরেটের অনুমতি ছাড়াই হস্তান্তর করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন কোনো কোনো জেলা প্রশাসক। তারা বলেন, ওয়াকফ ও দেবোত্তর সম্পত্তি ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এটি নিয়ন্ত্রিত হওয়ার কারণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, যা তাদের জন্য বিড়ম্বনার কারণ।
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ব্যবহার উপযোগী নয় বলে তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন দু-একজন ডিসি।
তবে, তিনদিন ব্যাপী চলা এই সম্মেলনের সমাপনি দিনে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও স্থানীয় পর্যায়ে জনমত গঠন করে সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ডিসিদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম মোকাবেলার নির্দেশ দেয়া হয়। বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে সবাইকে নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি গঠনের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
ধারাবাহিকভাবে চলে আসা এই বছরের সম্মেলনের ২২টি অধিবেশনে মোট ৩৪৯টি প্রস্তাব উত্থাপনের কথা থাকলেও ৩০০ প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে। এসব প্রস্তাব নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডিসিদের আলোচনা হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ের শাপলা হলে ডিসি সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন করেন। প্রশাসনের গতিশীলতা আনতে এবং তৎপরতা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিবেন আজ ।
প্রসিকিউশন সার্ভিস ‘স্বাধীন’ হচ্ছে : আইনমন্ত্রী
রাষ্ট্রের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য পাবলিক প্রসিকিউশন সার্ভিসকে পর্যায়ক্রমে স্বাধীন করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ডিসিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর বাইরে সাংবাদিকদের কাছে মন্ত্রী একথা বলেন। আইনমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস গঠনের বিষয়ে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সেটা হবে পর্যায়ক্রমে। সে জন্য যে রিক্রুটমেন্টের দায়িত্ব, সেটা বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনকে দেওয়া যায় কি না সে বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস গঠন হলে বিচারিক আদালতে পাবলিক প্রসিকিউটরদের নিয়োগ হবে স্থায়ী; যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। নির্ধারিত বেতন-ভাতাসহ সরকারি কর্মকর্তাদের মতো অন্য সুবিধাদি পাবেন তারা।
একই নকশায় বধ্যভূমি ও মুক্তিযোদ্ধাদের কবর
সারাদেশের বধ্যভূমি, মুক্তিযোদ্ধাদের কবর এবং সম্মুখযুদ্ধের স্থানগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এসব স্থানের স্মৃতিস্তম্ভগুলো একই নকশায় করা হবে বলে জান?িয়?ছেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। ডিসিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর বাইরে সাংবাদিকদের কাছে মন্ত্রী একথা বলেন।
ঘুষ দেবেন না : ভূমিমন্ত্রী
জমি ব্যবস্থাপনার কাজে ঘুষ না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ। তিনি বলেন, ঘুষ দেবেন না। ঘুষ যে দেয় এবং যে নেয় উভয়ে সমান অপরাধী। আপনারা যদি ঘুষ না দেন তাহলে দুর্নীতি কমে আসবে। ডিসিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর বাইরে সাংবাদিকদের কাছে মন্ত্রী একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সম্মেলনে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারা ভূমি ব্যবস্থাপনার অনেক সমস্যা ও সংকট নিয়ে কথা বলেছেন। আমরা তাদের কথা শুনেছি এবং করণীয় ঠিক করে দিয়েছি। এরমধ্যে বড় নির্দেশনা হচ্ছে ঘুষ, দুর্নীতি মুক্ত ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা। মন্ত্রী বলেন, সরকার যেসব জমি আগে অধিগহণ করেছিল কিন্তু তা অনেকে দখল করেছে। সেসব জমি পুনরায় দখল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সারা দেশকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে : রেলমন্ত্রী
পর্যায়ক্রমে সারা দেশকেই রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক। ডিসিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর বাইরে সাংবাদিকদের কাছে মন্ত্রী একথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া আবারও মুখোমুখি

আবারও মুখোমুখি অবস্থানে চলে গেছে বিশ্বের ২ শীর্ষ পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। এরই ফলশ্রুতিতে মস্কোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের তোড়জোড়ের জবাবে মার্কিন কূটনীতিকের সংখ্যা কমানোর নির্দেশ দেওয়াসহ কয়েকটি কূটনৈতিক সম্পত্তির ব্যবহার নিষিদ্ধ করছে রুশ কর্তৃপক্ষ। আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা কমানোর নির্দেশ দিয়েছে। বলা হয়েছে, এই সংখ্যা ওয়াশিংটনে রাশিয়ার দূতাবাসের কর্মচারীর সংখ্যার সমান হবে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের ব্যবহৃত ওয়্যারহাউজ এবং ডাচা কম্পাউন্ড জব্দ করা হচ্ছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক লাগাতার রূঢ় রাশিয়া-বিরোধী পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের পুরোপুরি একটি মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে তারা একাজ করছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রুশ কূটনীতিক বহিষ্কারের যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপটি দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভিয়েনা কনভেনশন এবং প্রচলিত কূটনৈকিত রীতির লঙ্ঘন। যুক্তরাষ্ট্র আর কোনও রুশ কূটনৈতিককে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নিলে রাশিয়াও একইভাবে এর জবাব দেবে বলেও জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের পর সিনেটও রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিল পাসের পরপরই রাশিয়ার এ পাল্টা জবাব এল। বৃহস্পতিবার বিলটি সিনেটে ৯৮-২ ভোটে পাস হয়। নিয়মানুযায়ী এখন এটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুমোদনের জন্য তার দপ্তরে যাবে। তিনি চাইলে বিলে ভেটো দিতে পারেন। তবে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট উভয় দলের সিনেটরদের প্রায় সর্বসম্মতভাবে নেওয়া এ সিদ্ধান্তে ভেটো দেওয়া ট্রাম্পের জন্য কঠিন হবে। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কথা বলে আসছেন, কিন্তু নতুন এই বিল সেই সম্ভাবনায় বাধ সাধবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিলের একটি ধারায় বলা হয়েছে, ট্রাম্প যদি রাশিয়ার ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা সহজ করতে চান, তাহলে কংগ্রেস তাতে বাধা দিতে পারবে। নতুন নিষেধাজ্ঞা বিলের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগেও দেশটির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।
যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এবং হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনী প্রচারে হ্যাকিংয়ের চেষ্টার অভিযোগে আগের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসন ৩৫ জন রুশ কূটনীতিককে বহিস্কার করাসহ রাশিয়ার কূটনৈতিক কম্পাউন্ড জব্দ করার কয়েকমাসের মধ্যে রাশিয়াও এবার একই পদক্ষেপ নিল।

পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী 

শাহবাজ শরীফকে মনোনয়ন

পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শাহবাজ শরীফের নাম মনোনয়ন দিয়েছে। জিও নিউজের বরাতে জানা যায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে নওয়াজ শরীফ পদত্যাগের পর ক্ষমতাসীন দল জরুরি এক সভায় শাহবাজ শরীফকে মনোনীত করে।
বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জিও টিভি জানায়, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম প্রস্তাব করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয় পদচ্যুত নওয়াজ শরীফকে। তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ও তার ভাই শাহবাজ শরীফের নাম প্রস্তাব করেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে হবে শাহবাজ শরীফকে। এদিকে পাঞ্জাবের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ভাবা হচ্ছে রানা সাইফুল্লাহ ও হামজা শাহবাজের নাম।

উল্লেখ্য সুপ্রিম কোর্ট অযোগ্য ঘোষণার পরই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন নওয়াজ শরীফ। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, আদেশের বিষয়ে ‘আপত্তি’ থাকলেও নওয়াজ শরীফ সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি সন্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিয়েছেন। 

সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৪৭তম জন্মদিন 

প্রধানমন্ত্রী ও তার ছেলে জয়ের দুর্লভ ছবি

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৪৭তম জন্মদিন ছিল বৃহস্পতিবার। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই অবরুদ্ধ ঢাকায় পরমাণু বিজ্ঞানী এমএ ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান জয়ের জন্ম হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধ জয়ের পর তার নাম ‘জয়’ রাখেন নানা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের নেতারা ফেসবুকে ছবিসহ জয়কে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এমনই একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম লিখেছেন, ‘মা-বেটা! কত শত বাধা আর চক্রান্ত গত ৪৫ বছর ধরে তারা পাড়ি দিয়ে আসছেন। মহান আল্লাহতালা রাব্বুল আল আমিন তাদের সহিসালামতে রাখুন।’
এদিকে সজীব ওয়াজেদ জয় ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আলাদাভাবে উত্তর দিতে না পারায় আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সকলের জন্য আমার শুভ কামনা।’

'বিজয়ের' পর প্রথম জুমায় 

আল-আকসায় মুসল্লিদের ঢল

ইসরাইলি বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণবিক্ষোভ করে সফল হওয়ার পর হারাম আল শরিফ আল আকসা মসজিদে শুক্রবার প্রথম জুমার নামাজ আদায় করেছেন ফিলিস্তিনি মুসল্লিরা। দখলদার ইসরাইলি পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতভর গ্রেফতার অভিযানের পাশাপাশি ৫০ বছরের কম বয়সী ফিলিস্তিনিদের আল-আকসায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল। তা সত্ত্বেও আজ জুমার নামাজে আল-আকসার ভেতরে ও বাইরে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় ছিল।
ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যম হারেজ জানায়, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় আল-আকসা মসজিদে জুমার নামাজ শুরু হয়। এ সময় বয়সের কারণে অনেক মুসল্লিকে মসজিদের বাইরের বিভিন্ন চেকপয়েন্টে আটকে দেয় ইসরাইলি পুলিশ। তবে প্রাথমিকভাবে কোনো ধরনের সংঘর্ষ ছাড়াই কম বয়সী মুসল্লিরা মসজিদের বাইরেই অবস্থান করতে থাকে। এর আগে ফজরের নামাজও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এদিন দুপুরে অর্ধশত ফিলিস্তিনি পশ্চিম তীরের হাওয়ারা শহরে ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
উল্লেখ্য, প্রবেশ পথে ইসরাইলি বাহিনী মেটার ডিটেক্টর স্থাপনসহ নিরাপত্তা কড়াকড়ি আরোপ করলে দুই সপ্তাহ ধরে আল-আকসা মসজিদের ভেতরে নামাজ পড়া বন্ধ রাখে ফিলিস্তিনি মুসলমানরা। মুসলমানদের প্রথম কেবলা পবিত্র হারাম আল শরিফে ইহুদিবাদীদের দখলদারীর প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা। বিক্ষোভ দমন করতে তিনজন ফিলিস্তিনিকে হত্যা, কয়েকশত জনকে জখম করে হানাদার বাহিনী। এছাড়া অর্ধশতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতারও করে তারা। তবে দমনপীড়ন সত্ত্বেও ফিলিস্তিনিরা দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম এবং অবরুদ্ধ গাজা ও পশ্চিমতীরে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে। এর জের ধরে তিন দখলদার ইসরাইলিও নিহত হয়। সার্বিক পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিদের নতুন করে জাতীয় জাগরণ তথা ইনতিফাদা আন্দোলনের জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এছাড়া মুসলিম বিশ্বেও ইসরাইলি দখলদারির বিরুদ্ধে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটতে শুরু করে। এ অবস্থায় আতঙ্কিত হয়ে ইসরাইল আল-আকসা মসজিদ থেকে মেটাল ডিটেক্টর অপসারণ করতে বাধ্য হয়। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে জোহর নামাজের মধ্য দিয়ে আল-আকসার ভেতরে দুই সপ্তাহ পর নামাজ পরা শুরু করেন ফিলিস্তিনিরা।
এদিন থেকে মসজিদটিতে হাজার হাজার মুসল্লির ভিড় দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যম হারেজ। তারা জানায়, আসর, মাগরিব ও এশার নামাজেও মুসল্লিদের ভিড় দেখা গেছে। তবে বৃহস্পতিবার রাতে এশার নামাজের পর ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের গ্রেফতারে মসজিদের ভেতরে হানা দেয় ইসরাইলি বাহিনী। তারা দরজা ভেঙে মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় মুসল্লিরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেল উভয় পক্ষে সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক মুসল্লি আহত হয়। পরে সেখান থেকে কয়েকজন ফিলিস্তিনি তরুণকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় ইসরাইলি পুলিশ।

মক্কার কাছে ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত

এবার মক্কা নগরীর কাছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে সৌদি আরবের সেনাবাহিনী। তারা জানিয়েছে, তারা মক্কা নগরীর ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত করেছে। সৌদি বাহিনী বলছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি পবিত্র শহর মক্কাকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল। তবে হুতিরা জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি মক্কা নয়, তায়েফ শহরে অবস্থিত সৌদি বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল। তায়েফ বিমান ঘাঁটি মক্কা নগরী থেকে ১১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এদিকে মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র এই শহরে এখন হজ উপলক্ষে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হতে শুরু করেছেন। হুতিরা এখন ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হামলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানায়, সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হজ বানচাল করার লক্ষ্যে শিয়া হুতিদের একটি মরিয়া চেষ্টার অংশ হিসেবে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়েছে। আগামী মাসের শেষের দিকে বাৎসরিক হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। হুতি বিদ্রোহীরা এর আগেও সৌদি আরবের ভেতরে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল। হুতিরা অন্য শহর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লেও সৌদিরা সব সময় বলে আসছে, এসব মক্কার দিকে তাক করেই ছোড়া হয়েছিল। ঊল্লেখ্য গত অক্টোবর মাসে হুতিরা একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, যা মক্কার কাছে ভূপাতিত করা হয়। সৌদি আরবের উপসাগরীয় মিত্ররা ঐ হামলার নিন্দা জানিয়েছিল। কিন্তু নতুন হামলাটি হজের আগে একটি হুমকি হিসেবে মনে করা হচ্ছে, কারণ বিশ লাখের মতো মানুষ এ সময় মক্কা নগরীতে জমায়েত হওয়ার কথা রয়েছে। হুতি বিদ্রোহী এবং তাদের সহযোগী- যারা সাবেক প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লাহ সালেহ'র প্রতি অনুগত ইয়েমেনী সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সদস্য- তারা ২ বছর আগে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে। ২০১৫ সালের মার্চে প্রেসিডেন্ট আব্দেরাব্বো মনসুর হাদির সমর্থনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনে অভিযান শুরু করে।  হাদির অভিযোগ যে বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছে ইরান। সৌদি আরব ও তার মিত্ররা এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পর এখন পর্যন্ত ৮ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে, আহত হয়েছে ৪৪ হাজার ৫০০। জাতিসংঘ বলছে, ২০ লাখেরও বেশি ইয়েমেনী শিশু চরম পুষ্টিহীনতায় ভুগছে, আর যুদ্ধ, ক্ষুধা ও কলেরার কারণে দেশটিতে ত্রাণের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে।

সৌদি আরবের মিত্ররা বলছে, সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ প্রমাণ করছে যে হোদেইদা বন্দরে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং ঐ বন্দর দিয়ে মানবিক সাহায্য ও বাণিজ্যিক কার্গো আনার যে অনুমতি দেয়া হয়েছিল, তার অপব্যবহার হচ্ছে। সৌদিরা প্রাই অভিযোগ করে যে হুতি বিদ্রোহীরা অস্ত্র চোরাচালান করছে, তবে হুতিদের পক্ষ থেকে ঐসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

পৃথিবীর ১০ অন্যরকম মানুষ

শিপাঞ্জি বা বানরের মতোই তার সারা শরীর লোমে আবৃত। তিনি চীনের অধিবাসী এবং তার শরীরের ৯৬ শতাংশ অংশই চুলে আবৃত। পৃথিবীতে এমন কিছু অদ্ভুত মানুষ দেখা যায় যাদের দেখে আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে, আমরা ছবি দেখছি নাকি স্বপ্ন দেখছি! হ্যাঁ, পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী এমন কিছু বিচিত্র কিছু মানুষের কথা নিয়েই সাজানো হয়েছে এই আয়োজন।  
১। আমো হাদজি (সবচেয়ে নোংরা মানুষ)
এই ব্যক্তি জীব জন্তুর মলের ধোঁয়া এবং মাঝে মাঝে বিভিন্ন ধরণের সিগারেট গ্রহণ করেন। তিনি চুল পুড়িয়েছেন যাতে এগুলো ছোট থাকে। তিনি ৬০ বছর যাবত গোসল করেন না।
২। সাজ্জাদ ঘারিবি (ইরানীয়ান হাল্ক)
এই লোকটি দেখতে ইনক্রেডিবল হাল্ক এর মত। এই পার্সিয়ান লোকটি অসম্ভব শক্তির অধিকারী।
৩। গ্রে টারনার (স্থিতিস্থাপক ত্বকের অধিকারী)
গ্রে এহলারস-ড্যানলস সিনড্রোম নামের বিরল রোগে ভোগছেন। এই রোগের কারণে তার ত্বক সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিস্থাপক হয়ে গেছে। এর ভালো দিকটি হচ্ছে এই বৈশিষ্ট্যের জন্য তিনি ছবিতে স্টান্ট দেন।  
৪। মাইকেল লটিটো (ইনি সবকিছু খেতে পারেন)
কার্লোস একটি গাড়ী দুর্ঘটনার শিকার হন। এর ফলে চিকিৎসকেরা তার মাথার খুলির একটি অংশ কেটে ফেলতে বাধ্য হন। তিনি এই অবস্থায় বেঁচে আছেন।
৬। ফ্রানসিস্কো ডোমিঙ্গো জোয়াকিম (সবচেয়ে বড় মুখগহ্বরের অধিকারী)
ফ্রানসিস্কো এর এটি অসাধারণ একটি গুণ। গিনিস রেকর্ডে নাম ওঠানোর আগে তিনি ইউটিউবে মুখের এই অদ্ভুত স্টান্ট দেখিয়ে অবাক করে দেন।
৭। চন্দ্র বাহাদুর ডাংগি (সবচেয়ে ছোট মানুষ)
চন্দ্র বাহাদুর ডাংগি সারা পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট মানুষ। ইতিহাসের সবচেয়ে ছোট ব্যক্তি এই লোকটি, তিনি মাত্র ৫৪.৬ সেন্টিমিটার লম্বা।
৮। সুলতান কোসেন (এই গ্রহের সবচেয়ে লম্বা পুরুষ)
সুলতান কোসেন গাছের মত লম্বা একজন মানুষ। তার উচ্চতা ৮ ফুট ৩ ইঞ্চি। এই উচ্চতার জন্য তাকে অনেকটা দৈত্যের মতোই মনে হয়।
৯। টম স্টেইনফোরড (পায়ের পাতাহীন মানুষ)
ব্রিটিশ এই লোকটি এমডিপি সিনড্রোম নামের অস্বাভাবিক অসুস্থতায় ভুগছেন। এটি খুবই বিরল একটি রোগ। মাত্র ৮ জন এই ধরণের সিনড্রোমে আক্রান্ত বলে রিপোর্ট পাওয়া যায়। টম একজন প্যারা সাইক্লিস্ট এবং সে প্রতিযোগিতার বিজয়ী।
১০। ইয়ো জেনহুয়ান (সবচেয়ে বেশি লোমযুক্ত মানুষ)
শিপাঞ্জি বা বানরের মতোই তার সারা শরীর লোমে আবৃত। তিনি চীনের অধিবাসী এবং তার শরীরের ৯৬ শতাংশ অংশই চুলে আবৃত। 

Tuesday, July 25, 2017

সুখী দাম্পত্য জীবনের রহস্যভেদে  উপায়  

নারী-পুরুষকে অদ্ভুত এক বাঁধনে জড়িয়ে রাখা এক সম্পর্কের নামই হল ‘দাম্পত্য’ জীবন। টক-ঝাল-মিষ্টি সম্পর্কটা আনন্দ-বেদনায় ভরা। তবে কখনো কখনো দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে শীতলতা। এ থেকে জন্ম নেয় তিক্ততা। কখনো কখনো সেটা ভাঙনে গিয়ে ঠেকে। অথচ একটু চেষ্টা করলেই আমৃত্যু দাম্পত্য সম্পর্কটাকে রাখা যায় সজীব, সতেজ আর ভালোবাসায় মুড়ানো। সুখী দাম্পত্যের জন্য কী প্রয়োজন, তার ৭ কৌশল-রহস্য জানিয়েছে ‘ব্রাইট সাইড’।
১। জীবনের প্রতি ইতিবাচক থাকুন। কারণ, সবাই চায় তার আশপাশে উৎফুল্ল আর প্রাণবন্ত মানুষেরা থাকুক। আর সেসব মানুষের আনন্দের ঢেউ আছড়ে পড়ুক তার জীবনেও। তাই অসন্তুষ্টি প্রকাশ, অভিযোগ করা ও খ্যাঁচ খ্যাঁচ করা থেকে বিরত থাকুন। হাসি-খুশি আর প্রাণবন্ত থাকুন। দেখবেন, দাম্পত্য সম্পর্কে আসছে ইতিবাচক পরিবর্তন।
২। জ্ঞানীরা বলেন, নিজেকে জানো। নিজেকে জানা কিন্তু নিজেকে ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ। আপনার কী করতে ভালো লাগে, সেটা করুন। হতে পারে বাগান করা, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করা কিংবা পড়াশোনা করা- যা ভালো লাগে, করুন। এতে আপনি ভালো থাকবেন, যার প্রভাব পড়বে দাম্পত্য জীবনে। কখনোই ভাববেন না, আপনি শুধু নিজের মতো থাকবেন আর আপনার সঙ্গী আপনার জন্য সব সময় ত্যাগ স্বীকার করে যাবেন। বরং, দুজনই নিজেদের পছন্দের কিছু করে উৎফুল্ল থাকুন আর দাম্পত্যকে রাঙিয়ে তুলুন।
৩। নিজেকে ভালোবাসার অর্থ কিন্তু এই নয় যে সঙ্গীর চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব না দেওয়া। মনে রাখবেন, স্বামী-স্ত্রী দুজন মানুষ দুটি ভিন্ন পরিবেশ থেকে ওঠে আসেন। চাওয়ায় থাকে ভিন্নতা। একজন আরেকজনের মতো হবেনÍএটা কখনোই ভাবা উচিত না। দুজনের কাছেই হয়তো দুজনের কিছু জিনিস ভালো লাগে, আবার কিছু জিনিস ভালো লাগে না। সঙ্গীর চাওয়া নিয়ে পরস্পর কথা বলুন, আলোচনা করুন। দেখবেন, ঠিক একটা সমাধান বের হয়ে এসেছে।
৪। সঙ্গীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রাখুন। সঙ্গীর ভালো কাজের প্রশংসা করুন, খারাপটা শুধরে নিতে সহায়তা করুন। একসঙ্গে থাকতে গিয়ে ভালো-খারাপ অনেক ধরনের অভিজ্ঞতা হয় দম্পতিদের। ভালোগুলোর কথা স্মরণ করে সঙ্গীর প্রতি অকপটে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।
৫। দাম্পত্য জীবনে ফাটল ধরানোর জন্য তিক্ত কথা একাই যথেষ্ট। তাই শব্দচয়নে সচেতন হোন। এমন কিছু বলবেন না যা সঙ্গীকে ছোট করে, আহত করে কিংবা তার মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে। আর মিথ্যা বলা উচিত না। একটা মিথ্যা ঢাকতে আরও দশটা মিথ্যা বলতে হয়। আর সত্যটা যেদিন প্রকাশ পায়, সেদিন সঙ্গীর প্রতি আস্থা আর বিশ্বাস হারিয়ে যায়। আস্থা-বিশ্বাসহীন দাম্পত্য জীবনে তখন আর টেনে নেওয়া যায় না।
৬। একসঙ্গে সুখের স্মৃতি তৈরি করুন। আধুনিক কর্মব্যস্ত জীবনে স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে খুব বেশি সময় কাটানো সম্ভব হয় না। যতটুকু সময় পান, সেটা ভালোভাবে কাটান। একসঙ্গে বাইরে খেতে যান, কোনো অনুষ্ঠান দেখতে যান, ঘুরতে যান কিংবা আনন্দ পান এমন কিছু করুন। এগুলোই একদিন সুখের স্মৃতি হিসেবে আপনাদের মন ভালো করে দেবে। এ ছাড়া আরও কিছু কাজ করতে পারেন; যেমন-ছবি তোলা, একসঙ্গে ঘর সাজানোর জন্য কিছু একটা কেনা। পরে সেই ছবি দেখলে ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরে যেতে পারবেন অতীতের সুখের দিনে।
৭। জীবনটা তো মোটামুটি একটা বাধাধরা নিয়মের মধ্যে পার করতে হয়। তাই একগুঁয়েমি চলে আসতে পারে দাম্পত্য জীবনে। এ থেকে মুক্তি পেতে পরস্পরকে চমকে দিতে পারেন। সেটার জন্য খুব বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে, এমন নয়। সঙ্গী পছন্দ করে, এমন কিছু একটা উপহার দিতে পারেন। কিংবা কর্মক্ষেত্র থেকে ফেরার পথে সঙ্গীর পছন্দের খাবারটা কিনে আনতে পারেন। এতে সঙ্গীও খুশি হলো। আবার রান্নার যে সময়টুকু বাঁচল, দুজন মিলে সুন্দর কোনো ছবি দেখে, গান শুনে বা টিভিতে কোনো অনুষ্ঠান দেখে কাটিয়ে দিতে পারেন।