Tuesday, January 31, 2017

এবার শীত ফ্যাশনে বাহারি পঞ্চ

পাঁচ কোণার পঞ্চ হালকা শীতে উষ্ণতা দেয়ার পাশাপাশি বেশ ফ্যাশনেবল একটি পোশাক। এ ধরনের পোশাকের প্রচলন বহু আগে থেকে। তবে ফ্যাশনের সঙ্গে এর সম্পর্ক ছিল সামান্যই। এ পোশাকটি নতুন করে বাজারে আসার পরই তরুণ-তরুণীদের কাছে দারুণ সমাদৃত হয়েছে। এটি অনেকটা এক ছাঁটের পোশাকের মতো। কাপড়টাকে একটা ভাঁজ করে গলা এবং দুটো হাতার জায়গা করে নিলেই তৈরি হয়ে যায় পঞ্চ। জনপ্রিয় হওয়া পঞ্চ তৈরির প্রথম দিকে ম্যাটেরিয়াল ছিল শুধু উল। তবে দিন বদলের হাওয়ায় এখন খাদি, লিলেন, জর্জেট কাপড়ের কুরুশ-কাঁটার কাজে তৈরি হচ্ছে বাহারি পঞ্চ। এর নকশাকে আরো জমকালো করতে জুড়ে দেয়া হচ্ছে পুঁতি, চুমকি, বিডস, ডলার, ব্লক, বাটিক, অ্যামব্রয়ডারি প্রভৃতি।
শীতের এ পোশাকটি  একাধারে স্টাইলিশ ও শীতের উপযোগী হওয়ায় চার দিকে এখন এর কদর বেড়ে গেছে দারুণভাবে। এটি চাদর ও সোয়েটারের ফিউশনে তৈরি হয়। কিছুটা সোয়েটারের আদলে করা হলেও ঢিলেঢালা ভাবটা থাকে।
গোল তো রয়েছেই সেই সঙ্গে পঞ্চতে রয়েছে ভি, তিন কোণা, চার কোণা গলাও। কিছু কিছু পঞ্চে হুড দেয়া থাকে। ফলে বাড়তি করে মাফলারের প্রয়োজন হয় না।
আবার অনেক পঞ্চের কাঁধের দু’ দিকে দু’ টুকরো কাপড় থাকে যা মাফলারের মতো করে পেঁচিয়ে নিতে পারেন।
পঞ্চ যেহেতু একটু ফ্যাশনেবল এক্সেসরিজ তাই শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে পঞ্চ পরাটা বেমানান। এটি সাধারণত জেগিংস, লেগিংস বা স্কিনি জিন্সের ওপর পরতে হয়।
ওপরের টপসটি অবশ্যই ফুলহাতার হতে হবে।
কারণ পঞ্চে সোয়েটার স্টাইলে হাতা থাকে না। কিন্তু এর গঠনের কারণে পুরো হাত ঢেকে থাকে। এবং ত্রিকোণা কাটিং এ ঝুলে যায়।
তবুও ফুলস্লিভের টপস পরলে হাত ওঠানামা করলেও ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা কম থাকবে।
পঞ্চের স্টাইলে ও শেপে ইদানীং এসেছে খানিকটা পার্থক্য। বিশেষ করে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো তরুণীদের ওয়েস্টার্ন আউটফিট হিসেবে পঞ্চকে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
দেশীয় হাউসগুলো দেশি কাপড়কে প্রাধান্য দিয়েই পঞ্চ তৈরি করে থাকে। সেক্ষেত্রে উলের পাশাপাশি খাদি কাপড়, কিংবা দেশীয় মোটা কাপড়েও পঞ্চ তৈরি হয়।
কারণ খাদি কাপড় একটু ভারী হয়।
এ ধরনের ভারী কাপড় শীতের জন্য বেশি উপযোগী।
রঙ বাংলাদেশ, আড়ং, আলমারি, থ্রি উইসেস, ওটু, ওয়ারাহ, এক্সট্যাসি, ক্যাটস আই, সাদাকালো প্রভৃতি ফ্যাশন হাউসগুলো ক্যাজুয়াল, এক্সক্লুসিভ সবধরনের প্যাটার্নেই পঞ্চ নিয়ে এসেছে।
শীতের উপযোগী ডিজাইন ও স্টাইলের পাশাপাশি এর দামও রাখা হয়েছে ক্রেতাদের হাতের নাগালে।
ভিডিওতে দেখুন :

সরিষা ক্ষেতে

এখন শীতকাল। চারপাশে শীতের আমেজ। মাঠের দিকে তাকালে আমেজটা আরো ঘনীভূত হয়ে ভেসে ওঠে মনের পর্দায়। আর সেই পর্দার দেয়াল পেরিয়ে যখন মাঠকে ধরতে এগিয়ে যাই, মনে হয় সরিষা সমুদ্রে যেন সাঁতারে নেমেছি। আমারই অপেক্ষায় ছিল শিশির ভেজা কলিগুলো। স্বাগত জানাতে কোনো কার্পণ্য করেনি।
ক্ষেতের পর ক্ষেতজুড়ে খেলা করে অন্য এক আবাহনের আস্বাদন। দিগন্ত জোড়া মাঠে সরিষাফুলের সমারোহ মনকে নিয়ে যায় কোনো এক স্বর্গীয় উদ্যানে। পুরোটা উদ্যান যেন হলুদ কার্পেটে মোড়া সুখময় নান্দনিক ভোর।
ভোরের বাতাসে মিশে থাকে মাতাল সরিষাঘ্রাণ। আমিও মাতাল হই। সাঁতারে সাঁতার কেটে ছুটে যাই প্রকৃতির কোলে। এ কোল দেশমাতৃকার। জন্মজন্মান্তরের ভালোবাসা, ‘আমার বাংলাদেশ’।

দেশ গড়তে মানুষ গড়তে

জনৈক শিক্ষক শিশুশিক্ষার্থীকে জিজ্ঞেস করলেন, বল তো মাছ কোথায় থাকে। শিক্ষার্থী যথার্থই জবাব দিল, মাছ থাকে ফ্রিজে! এ শিশুটির জ্ঞান সমীকরণ থেকে স্পষ্টই বোঝা যায়, আমরা প্রজন্মকে প্রকৃতি থেকে কত দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছি। আজকালকার শহুরে শিশু-কিশোর বা তরুণরাও অনেকে মাছ, ফল, ফুল ও গাছপালার নাম জানে না। তারা সাঁতার জানে না, গাছে কিভাবে চড়তে হয় তাও জানে না। প্রতিদিন যে ভাত খায়, সেই ভাতের চালের বা ধানের নাম জানে না। ধান বা ফসল উৎপাদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই। ষড়ঋতুর বৈচিত্র্য সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই। এজন্য ঠিক তারা দায়ী নয়। বংশ পরম্পরায় আমরাই তাদের গ্রামের নাড়ির বাঁধন থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলছি। আমরা গ্রাম থেকে এসে বড্ড বেশি শহুরে আধুনিক হয়ে গেছি। যান্ত্রিক জীবনের যাতনায় পড়ে আমরা যেন ভুলতে বসেছি শিকড়ের কথা।এভাবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে গ্রামের সঙ্গে আমাদের মানবীয় সম্পর্কের দূরত্ব বাড়ছে। এখন সময় এসেছে শিকড়ের সন্ধানে ঘুরে দাঁড়াবার। নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনেই আমাদের গ্রামমুখী হতে হবে।
আমাদের মোট জনসংখ্যার ৭২ ভাগ এখনো গ্রামে বসবাস করে। সেখানে যে বিপুল তরুণ সমাজ রয়েছে তাদের ঠিকমতো কাজে লাগানোর ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তবে গ্রাম এখন আর আগেকার সেই গ্রাম নেই। দ্রুত রেমিট্যান্স প্রেরণের সুযোগ, ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যাংকিং সম্প্রসারিত হওয়ায় গ্রামীণ জনগণের মাঝে ব্যাপক অর্থনৈতিক তৎপরতা বেডেছে এবং বাড়ছে। বাংলাদেশে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন শুধু শহরে নয় গ্রামেও দৃশ্যমান। দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ, এর মধ্যে গ্রামীণ অর্থনীতির অবদান অনস্বীকার্য। গ্রামাঞ্চলে কৃষি, শিক্ষা ও জনস্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের বেগবান ধারা আশাব্যঞ্জক। কৃষি ক্ষেত্রে সরকারের নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে গ্রামীণ সড়ক-ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, গ্রোথ সেন্টার-হাটবাজার উন্নয়ন, সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ ও পুনর্বাসন, বৃক্ষরোপণ, স্লুইস গেট, রাবার ড্যাম ইত্যাদি নির্মাণ, উপজেলা কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ, খাল খনন ও সংস্কার প্রভৃতি কর্মসূচির কারণে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রভাব পড়ছে। এখন গ্রামে গ্রামে ঘুরে চারপাশের পরিবর্তন দেখলেও অবাক হতে হবে। রাস্তাঘাট, যোগাযোগ ব্যবস্থা, প্রযুক্তি প্রভাবে গ্রাম শহরের সেই দূরত্ব এখন আর নেই। গ্রামে অভাব ও অভাবী মানুষের সংখ্যা কমে এসেছে। বিদ্যুতের আলোর ঝলক কিংবা সৌরবিদ্যুতের আলোয় আলোকিত গ্রামবাংলার ঘরবাড়ি, রাস্তার দোকানপাট। ঘরে ঘরে টেলিভিশন, ফ্রিজ, ডাইনিং টেবিল, সোফাসেটসহ শহুরে আধুনিক শৌখিনতার সব কিছুই এখন কমবেশি গ্রামেও আছে। মোটকথা, এখন আর কেউ বলতে পারবে না, দেশ অনেক পিছিয়ে আছে।
গ্রামেই উৎপাদন হয় সব ধরনের ফসল ও ফল। গ্রাম থেকে গেলে শহরের লোকজন তা ভোগ করার সুযোগ পায়। গ্রামের শিশুরা যেভাবে হেসেখেলে, কাদামাটিতে গড়াগড়ি খেয়ে বড় হয়, শহরের শিশুদের ক্ষেত্রে তা সম্ভব হয় না। কারণ, শহর থাকে পিচঢালা। বেশ কয়েক বছর আগে একটি মেডিক্যাল গবেষণার ফল পড়েছিলাম এ রকম—যেসব শিশুকে মাটির সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখা হয়, তাদের চেয়ে, যেসব শিশু মাটিতে খেলাধুলা করে বড় হয়, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক বেশি। গ্রামের শিশুরা ধুলাবালি-কাদাপানি গায়ে মেখে বড় হয় বলে তাদের শরীর রোগজীবাণুর সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে ধীরে ধীরে রোগ প্রতিরোধী হয়ে ওঠে। সাধারণ সর্দি-জ্বর-পেটের পীড়াকে আমলেই নেয় না তারা। ধুলা-মাটি-বালি এ ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক টিকা হিসেবে কাজ করে।
সময়ের বাস্তবতায় অভিভাবককে নতুন করে ভাবতে হবে। শিশুকে সময় পেলেই নিয়ে যেতে হবে ফুল-পাখি-গাছের সান্নিধ্যে, পরিচয় করিয়ে দিতে হবে মানুষের জীবন ও প্রকৃতির সঙ্গে। শহুরে শিশুকে বন্দিদশা তথা কৃত্রিম জগৎ থেকে নিষ্কৃতি দিতে রাষ্ট্রের ভূমিকা অপরিহার্য। পর্যাপ্ত খেলার মাঠ আর সবুজের সংস্থান তো রাষ্ট্রই করতে পারে। মুক্তভাবে বাঁচার জন্য, বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত উন্মুক্ত উদ্যান গড়ে তুলতে হবে, গড়ে তুলতে হবে দূষণমুক্ত পরিকল্পিত শহর ও মহানগর। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের কাছে টেকসই উন্নয়নের ধারণা, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার, উন্নত নগর পরিকল্পনা এবং বৃক্ষশোভিত সবুজ নগরের বিকল্প নেই। আমাদের দেশে গ্রামের যেসব লোককে ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকরির সুবাদে শহরে থাকতে হয়, তাদের উচিত হবে সময় সুযোগ পেলে ছেলেমেয়েদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে কিছুটা সময় হলেও রাখা। যাতে করে তারা অনুভব করতে পারে গ্রামের আবহাওয়া ও মনোরম পরিবেশ। চিনতে পারে ও পরিচিত হতে পারে গ্রামের বিভিন্ন রকম জিনিসের সঙ্গে। প্রাণখুলে গ্রামের পুকুরে সাঁতার কাটতে পারে। শহরে আজও এমন মানুষ রয়েছে যারা গ্রাম ও গ্রামের পরিবেশ কী তা চেনে না। মাঝে মাঝে আমরা সংবাদমাধ্যমে খবর পড়ি, কোনো ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রী, কোনো জায়গায় বা নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে তলিয়ে গেছে। এর কারণ হলো তারা সাঁতার জানেন না। তারা কোনো দিন গ্রামে আসে না। যদিও তাদের পূর্বপুরুষরা গ্রামে ছিল। শহরে আজও এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা গ্রামকে ও গ্রামের মানুষকে অবজ্ঞার চোখে দেখে। তাদের মন থেকে এই ভাব দূর করে গ্রামে আসার অভ্যাস গড়তে হবে।
গ্রামীণ জীবন সম্পর্কে ধারণা নিতে এবং জীবনযাত্রার পার্থক্য অনুধাবনের জন্য চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চংকিং শহর কর্তৃপক্ষ শহরের শিক্ষার্থীদের গ্রামে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের মতে, এর ফলে প্রজন্মগত ও ভৌগোলিক দূরত্ব কমানো সম্ভব হবে। তরুণ বয়সেই তারা ব্যয়বহুল-অভিজাত জীবনযাপনের পাশাপাশি গ্রামীণ জীবনসংগ্রাম এবং তাদের বাবা-মা, স্বজন-সহোদর ও পূর্বপুরুষদের জীবনযুদ্ধ সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পাবে। চংকিং পৌর প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গ্রামে অবস্থানের সময় চংকিং অঞ্চলের প্রায় সাড়ে ৭ লাখ শিক্ষার্থীর প্রত্যেককেই ১০০টি করে গাছের চারা রোপণ করতে হয়, এক মাসের সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হয়, কারখানায় কাজ করতে হয়। চীনে এই প্রক্রিয়ায় স্নাতক পড়া প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থীকে গ্রাম কর্মকর্তা হিসেবে ভাড়া করা হয়েছে। ফলে তারা ধারণা করছে, এসব শিক্ষার্থীর জীবনবোধ হবে মানবীয়। তারা জীবনের কঠিন সংগ্রামকে শক্তি ও বুদ্ধি দিয়ে পরিশ্রম করে জয় করতে সমর্থ হবে। বাংলাদেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় চীনের মতো একটি উদ্যোগ গৃহীত হলে কৃষিক্ষেত্রে বিরাট পরিবর্তন আসবে। জীবনবোধ, পারিবারিক সম্পর্ক ও দেশীয় সংস্কৃতিতে উজ্জীবিত হয়ে উঠবে আমাদের তরুণ প্রজন্ম।
এখন অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগ। তথ্যই বদলে দিতে পারে গ্রামীণ চেহারা, গতি-প্রকৃতি, সূচনা করতে পারে আর্থিক সমৃদ্ধির নবদিগন্ত। চীনের কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে প্রকাশ, এ মুহূর্তে চীনের ৯৯ ভাগ শহরে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। অপরদিকে তাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধাসহ তথ্যকেন্দ্র স্থাপনের ফলে কৃষক অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য বিক্রিতে ছয় গুণ বেশি লাভ করতে পারছে। অবাধ তথ্যপ্রবাহের এ সুযোগটি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে সম্ভব হতে পারে। এর ফলে কৃষক ন্যায্যমূল্যের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়েও সমৃদ্ধ ও সচেতন হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটলে তরুণরাও হয়ে উঠবে কর্মোদ্দীপক। চার-পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশে গিয়ে মেধা, শ্রম, পুঁজি ও সময় খাটিয়ে যতটুকু লাভবান হবে, তার চেয়ে বহু গুণে দেশের মাটিতে কম টাকা বিনিয়োগ করে গ্রামীণ এলাকা থেকেও বিপুল আয় করা সম্ভব। বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিপুলসংখ্যক যুবক থাকা উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটা বিরাট সুযোগ। বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি যুবকের সংখ্যা ৮ কোটি ৮ লাখ ৪৩ হাজার। এর মধ্যে ৪ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার যুবক কমবেশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। নিরেট বেকার যুবকের সংখ্যা ৩ কোটি ২৮ লাখ ২৩ হাজার। যুব সমাজের অধিকাংশের অবস্থান গ্রামাঞ্চলে। তাদের মেধা ও শ্রমকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলেই খুলে যাবে উন্নয়নের দুয়ার। ফসল আবাদের পাশাপাশি এখন হাঁস, মুরগি, গরু মোটাতাজাকরণ, মৎস্য, দুগ্ধ খামারের প্রতি তাদের আগ্রহী করে তুলতে হবে। তাদের সামনে এসব ক্ষেত্রের সাফল্য সম্ভাবনাগুলোর তথ্য তুলে ধরতে হবে। তাহলে তরুণরা চাকরিনির্ভর না হয়ে আত্মকর্মসংস্থানমূলক প্রকল্প স্থাপনে আগ্রহী হয়ে উঠবে। তরুণদের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে গুরুত্ব দিয়ে কাজে লাগাতে হবে।
কোনো দেশের যদি সত্যিকার অর্থে উন্নয়ন করতে হয়, তাহলে অবশ্যই গ্রামীণ পর্যায়ের উন্নয়ন সবার আগে দরকার। আমাদের দেশের গ্রামগুলো শহরের তুলনায় সুযোগ-সুবিধার দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে আছে। গ্রামীণ অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য গ্রাম পর্যায়ের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের খুবই প্রয়োজন। গ্রামের মানুষকে উপেক্ষা করে প্রকৃত উন্নয়ন অসম্ভব। গ্রামের প্রতি ক্রমাগত উপেক্ষার কারণেই কৃষকদের মাঝে হতাশা তৈরি হয়েছে। কৃষক যথাসময়ে পান না ভর্তুকি, সার, কীটনাশক, তেল, উন্নত বীজ, সেচ সুবিধা, ফসল ঘরে তোলার গ্যারান্টি ও ন্যায্যমূল্য। বছরকে বছর হাওরের ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়। কৃষক ও দেশের খাদ্যের বিরাট হুমকি জেনেও যথাসময় এবং স্থায়ী পরিকল্পনায় বাঁধ নির্মাণ হয় না। এসব সমস্যার সমাধানে দ্রুত, স্থায়ী ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। গ্রামীণ বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। গ্রাম্য এলাকায় অন্তত উপজেলা পর্যায়ে শিল্পকারখানা-পোশাককারখানা-কুটিরশিল্প স্থাপনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। বেসরকারি উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে জায়গা, ব্যাংক লোন, পরামর্শ ও প্রশাসনিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। গ্রামীণ বিনিয়োগ বাড়লেই ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এলাকায় কাজ পেলে মানুষ আর শহরমুখী হবে না। শহরে মানুষের অযাচিত চাপ কমবে।
লেখক : এস এম মুকুল; প্রাবন্ধিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক

এবার বইমেলায় 

প্রধানমন্ত্রীর নতুন বই ‘নির্বাচিত প্রবন্ধ’

অমর একুশে বইমেলায় আসছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি নতুন বই। বাংলাদেশের সমকালীন রাজনীতির ওপর বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত তার লেখা ১৩টি প্রবন্ধ নিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে সংকলন গ্রন্থ ‘নির্বাচিত প্রবন্ধ’। 
আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা ২০১৭। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাল বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এই বইমেলার উদ্বোধন করবেন। বইমেলার প্রথম দিন থেকেই মেলার ১৩ নম্বর প্যাভিলিয়নে বইটি পাওয়া যাবে। 
এমিরেটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এ বইয়ের ভূমিকায় লিখেছেন, লেখক হিসেবে শেখ হাসিনা মূলত প্রাবন্ধিক, বিশেষভাবে বলতে গেলে রাজনৈতিক ভাষ্যকার। তার ‘নির্বাচিত প্রবন্ধ’ সংকলন গ্রন্থটি বর্তমান বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের চিন্তা চেতনা, মন-মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গীর পরিচয় বহন করে। সে কারণেই এ গ্রন্থটির গুরুত্ব অপরিসীম।
সংকলনের প্রথম প্রবন্ধ ‘বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম’। ১৯৯৩ সালে লিখিত এই প্রবন্ধটিতে বাংলাদেশে স্বৈরাচারের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে একজন রাজনীতিবিদের প্রত্যক্ষ পরিচয় ফুটে উঠেছে। ‘শিক্ষিত জনশক্তি অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত’ প্রবন্ধে তিনি বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যাকে চিহ্নিত করেছেন। ১৯৯৩ সালে লিখিত ‘সবার উপরে মানুষ সত্য’ প্রবন্ধে শেখ হাসিনা ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার ঘোষণা সত্ত্বেও বিশ্বযুদ্ধোত্তর পৃথিবীতে দেশে দেশে মানুষে মানুষে এবং একই দেশে শ্রেণিবিভক্ত সমাজে মানবতার যে চরম অবমাননা তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
ভাষা আন্দোলনের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে লিখিত ‘ভালবাসি মাতৃভাষা’, ২০০২ সালে প্রকাশিত ‘বিপন্ন গণতন্ত্র লাঞ্ছিত মানবতা’, ১৯৯৮ সালে ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি নিয়ে লেখা ‘স্মৃতি বড় মধুর স্মৃতি বড় বেদনার’, বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন নিয়ে ২০০১ সালে লেখা ‘সংগ্রামে আন্দোলনে গৌরব গাঁথায়’, ১৯৯৯ সালে লেখা ‘বৃহৎ জনগোষ্ঠির জন্যে উন্নয়ন’, ‘সহে না মানবতার অবমাননা’, ‘প্লিজ, সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলুন’, ‘একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা’ এবং ১৪ আগস্ট ১৯৯১ সালে লেখা ‘অনর্জিত রয়ে গেছে স্বপ্নপূরণ’ প্রবন্ধ সংকলিত হয়েছে এই নির্বাচিত প্রবন্ধে। 
বইয়ের সর্বশেষ প্রবন্ধ হাইকোর্টের একটি ঐতিহাসিক রায় নিয়ে লেখা ‘সত্যের জয়’। লেখক ২০০৫ সালে এটি রচনা করেন। অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের মতে এই প্রবন্ধে আইনের শাসনের প্রতি শেখ হাসিনার গভীর শ্রদ্ধা ও আনুগত্য প্রকাশ পেয়েছে।
আগামী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এই নির্বাচিত প্রবন্ধের মূল্য ৩৫০ টাকা। এর প্রচ্ছদ এঁকেছেন আনওয়ার ফারুক। সমকালীন রাজনীতি নিয়ে আগামী প্রকাশনী থেকে এরআগে প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার আরো ১৩টি প্রবন্ধ সংকলন গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এরমধ্যে রয়েছে—‘শেখ মুজিব আমার পিতা’, ‘সাদাকালো’, ‘বিপন্ন গণতন্ত্র, লাঞ্ছিত মানবতা’, ‘দারিদ্র দূরীকরণ: কিছু চিন্তাভাবনা’, ‘সহেনা মানবতার অবমাননা’, ‘বাংলাদেশের স্বৈরতন্ত্রের জন্ম,’, ‘ওরা টোকাই কেন’, ‘আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি (জাতীয় সংসদে ভাষণ ১৯৮৭-১৯৯৮)’ ‘লিভিং ইন টিয়ার্স’, ‘পিপল এ্যান্ড ডেমোক্রেসি’, ‘ডেমোক্রেসি প্রভার্টি এলিমিনেশন এ্যান্ড পিস’, ‘ডেমোক্রেসি ইন ডিসট্রেস ডিমান্ড হিউম্যানিটি’, এবং ‘জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ (যৌথ সম্পাদনা)। 
আগামী প্রকাশনীর কর্ণধার ওসমান গণি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রচিত ২০১৫ সালের বইমেলায় প্রকাশিত ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ বইয়ের পঞ্চম সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। এটিও বইমেলার প্রথম দিন থেকেই আগামী প্রকাশনীর স্টলে পাওয়া যাবে। এছাড়াও এবারের বইমেলা উপলক্ষে ‘লিভিং ইন টিয়ার্স’, ‘পিপল এ্যান্ড ডেমোক্রেসি’, ‘ডেমোক্রেসি প্রভার্টি এলিমিনেশন এ্যান্ড পিস’, এবং ‘ডেমোক্রেসি ইন ডিসট্রেস ডিমান্ড হিউম্যানিটি’ বই তিনটির পুনর্মুদ্রণ প্রকাশিত হয়েছে।

টেনিস সুন্দরীর এই ছবিটি ইন্টারনেটে এখন ভাইরাল!

টেনিসের 'সুইটহার্ট' তিনি। ইউজেনি বুশার্ডকে এভাবেই ডাকেন তার ভক্তরা।
কিন্তু টেনিসে সেভাবে সাফল্যের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ের ৪৭ নম্বর অবস্থানে থাকা এই কানাডিয়ান সুন্দরী।
২০১৪ সালের উইম্বলডন ফাইনালিস্ট হওয়াই তার ক্যারিয়ারে এখনও সেরা ঘটনা। ছিল চোট-আঘাতের সমস্যাও। সদ্যসমাপ্ত অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডেই ছিটকে গিয়েছেন।
তবে কোর্টে ঝড় তুলতে না পারলেও, ১.২ মিলিয়ন ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ারের মনে ঢেউ তুলেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ব্যর্থতা ভুলে তিনি এখন সমুদ্র সৈকতে সময় কাটাচ্ছেন। নীল রঙের বিকিন পরা ছবিও আপলোড করেছেন ইনস্টাগ্রামে। কোথায় তিনি সময় কাটাচ্ছেন সেটা বলেননি। কিন্তু ছবির ক্যাপশন দিয়েছেন 'প্যারাডাইস'। তবে ভক্তদেরকে রহস্যে রাখলেন একটা ছবি পোস্ট করেই।
দেখা যাচ্ছে বুশার্ডের থাইয়ে হাত রেখেছেন এক পুরুষ। সঙ্গীর নাম জানাননি তিনি। অনেকেই বুশার্ডকে প্রশ্ন করেছেন যে, পাশের রহস্যময় মানুষটি কে? ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড 'দ্য মিরর' রহস্যের সমাধান করেছে। তারা জানিয়েছে বুশার্ড আছেন জর্ডন ক্যারনের সঙ্গে। যিনি পেশায় আইস হকি খেলোয়াড়। বুশার্ডের দেশেরই বাসিন্দা তিনি। এখন নির্জন দ্বীপে বুশার্ড-জর্ডন কেমিস্ট্রি জমে গেছে বেশ।

স্তন্যদানের পরীক্ষা প্রকাশ্যে...!

ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর দিয়ে তিনি তার শিশুকে ছাড়াই সফর করছিলেন।এসময় তার কাছে একটি ব্রেস্ট পাম্প দেখে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাকে সন্দেহ করেন।জার্মানির বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা একজন নারীকে স্তন্যদাত্রী কি না এই পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গায়ত্রী বোস নামের এই নারী জার্মান পুলিশের কাছে এ বিষয়ে একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন।তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সামনে স্তন টিপে তাকে প্রমাণ করতে হয়েছে যে তিনি তার সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান। তিনি আরও বলেন, জার্মানিতে এরকম একটি ঘটনায় তিনি 'অপমানিত' বোধ করছেন। এভাবে এবার প্রকাশ্যে বিমানবন্দরে স্তন্যদনের পরীক্ষা দিলেন এক মা।'অপমানজনক' এই পুরো পরীক্ষা শেষ হতে সময় লাগে ৪৫ মিনিট।
জার্মান পুলিশ এই অভিযোগের ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে বলেছে, এটি তাদের রুটিন কাজের কোন অংশ নয়।বরং তোমার বাচ্চা কোথায়? প্রশ্ন করে নিরাপত্তা বাহিনীর লোকেরা তখনই তাকে পরীক্ষা করে দেখার জন্যে থামায়।ওই নারীর হাত ব্যাগেই ছিলো একটি ব্রেস্ট পাম্প। সেটি এক্স-রে মেশিনের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে তাকে সেখান থেকে অন্য একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের কণ্ঠে ছিলো অবিশ্বাসের সুর। তুমি দুধ খাওয়াচ্ছো? তাহলে তোমার বাচ্চা কোথায়? তোমার বাচ্চা সিঙ্গাপুরে থাকে? তিনি জানান, অফিসাররা তার কথা কিছুতেই বিশ্বাস করছিলো না। তখন তারা তার কাছ থেকে পাসপোর্ট নিয়ে নেন। তারপর একজন নারী পুলিশ অফিসার তাকে একটি ঘরে নিয়ে যান আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে।
মিস বোস বলেন, ওই পুলিশ অফিসার তখন আমাকে বলেন আমি যে স্তন্যদাত্রী একজন মা সেটা প্রমাণ করে দেখাতে। তিনি আমাকে ব্লাউজ খুলে তাকে আমার স্তন দেখাতে বলেন। তারপর তিনি জানতে চান তুমি যদি বাচ্চাকে দুধ খাইয়ে থাকো তাহলে তোমার স্তনের সাথে কিছু লাগানো নেই কেন। আমি বলি, স্থায়ীভাবে লাগানোর মতো কোন জিনিস তো নেই। যখন দরকার হয় তখনই আমরা পাম্পটি ব্যবহার করি। তখন তিনি হাত দিয়ে আমাকে একটু করে দেখাতে বললেন।মিস বোস বলেন, এই ঘটনায় তিনি হতবাক হয়ে পড়েন। আমি তখন একা ছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না আমার কি হতে পারে। একসময় আমি কাঁদতে শুরু করি। তিনি জানান, পরীক্ষা করে দেখার পর কর্মকর্তারা তার পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেন এবং তাকে বিমানে উঠার অনুমতি দেন। তিনি ওই মহিলা অফিসারের নাম জানতে চাইলে তিনি এক টুকরো কাগজে তার নামটা লিখে দেন।
মিস বোস জানান, যখন তারা আমাকে ছেড়ে দেয় তখন তাদেরকে আমি বলি নিরাপত্তা পরীক্ষার জন্যে এটা কোন উপায় হলো না। আমি তাদেরকে বলি, তোমার কী বুঝতে পারছো যে এইমাত্র তোমরা আমাকে কি করেছো? তোমরা আমাকে আমার স্তন দেখাতে বলেছো! তিন জানান, অফিসার তখন বললেন, পরীক্ষা শেষ। আপনি এখন যান। প্লিজ। মনে হয়নি যে আমার প্রতি তার কোন ধরনের সহানুভূতি ছিলো।
মিস বোস একটি পরিবহন কোম্পানির ম্যানেজার। তার দুটো বাচ্চা। একটি তিন আর অপরটি সাত মাস বয়সী। ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে জার্মান পুলিশের একজন মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান আলটেনহোফেন বিবিসিকে বলেছেন, তথ্যের গোপনীয়তার কারণে এবিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে পারবেন না। তিনি বলেন, কোন যাত্রীর কাছে বিস্ফোরক রাখার সন্দেহ হলে তাকে ও তার লাগেজ পরীক্ষা করে দেখা অবশ্যই প্রয়োজন। তবে স্তন্যদাত্রী মায়ের ওপর এভাবে পরীক্ষা চালানোর কথা কোথাও বলা হয়নি।

Monday, January 30, 2017

বাণিজ্য মেলার সময় বাড়লো

পাটপণ্যে মুগ্ধ ক্রেতারা

দেশে নতুনরূপে পাট ও পাটপণ্যের জাগরণ ঘটেছে। প্রতি মৌসুমে বাড়ছে পাটের চাষ। ‘পাটের লড়াই’-এর মতো সংগঠন গড়ে তুলছেন তরুণরা। এবার তারা এ আঁশকে হীরার মর্যাদা দেওয়ার পক্ষপাতী। সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী নিয়মিত বৈদেশিক মুদ্রাও আয় হচ্ছে। আগে রফতানি বাজারই ছিল পাটজাত পণ্যের মূল বাজার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের ভেতরে এসব পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। মেলায় আসা ক্রেতারাও পাটপণ্যের প্রতি মুগ্ধ।
এবার বাণিজ্য মেলায় উদ্যোক্তারা বিপুল পণ্যসম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছেন। দিন যতই পেরিয়ে যাচ্ছে বিক্রিও ততই বাড়ছে বলে জানালেন শোরুমের দায়িত্বশীলরা। মেলায় মিরপুরের প্যারিস রোড থেকে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা রায়হান ও তার স্ত্রী নাজমা জানান, পাট বাংলাদেশের ঐতিহ্য। পাটপণ্য টেকসই ও দেখতে সুন্দর। তারা প্রতিবারই মেলা থেকে পাটের কোনো না জিনিস কিনে থাকেন।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি), নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রকল্প জয়িতা সেন্টারের কয়েকটি স্টল ছাড়াও শতরঞ্জির জন্য বিখ্যাত কারুপণ্যের প্যাভিলিয়নে পাটপণ্যের পসরা বসেছে। জেডিপিসি নামের সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়নে আছে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনসহ ছয়টি জেলার ২৫টি ছোট-বড় প্রতিষ্ঠানের স্টল। মেলার ভিআইপি ফটক দিয়ে ঢুকলেই জেডিপিসি সেন্টারটি চোখে পড়বে।
মেলায় অংশগ্রহণ করা ‘সুমাইয়া উইভিং ফ্যাক্টরি জুট প্রডাক্টস অ্যান্ড ফেব্রিকসের’ পরিচালক সালাম মিয়া জানান, বর্তমান সময়ে পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে পাটপণ্য ব্যবহার বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পাট দিয়ে তৈরি হচ্ছে বাহারি সামগ্রী। কিন্তু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পাটপণ্য নিয়ে বাণিজ্য মেলায় স্টল নেওয়ার সামর্থ্য নেই। জেডিপিসির মাধ্যমে তাদের এখানে আসার সুযোগ হয়েছে। পরিবেশবান্ধব সব পণ্য নিয়ে উদ্যোক্তারা এসেছেন। চাহিদার তুলনায় বিক্রি কম হলেও ক্রেতাদের আগ্রহ আগের তুলনায় বেড়েছে।
মেলায় অংশগ্রহণের বিষয়ে জেডিপিসির নির্বাহী পরিচালক নাসিমা বেগম জানান, পাটের তৈরি বহুমুখী পণ্যসামগ্রী দেশ-বিদেশের ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরতেই জেডিপিসি মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে উৎপাদন-সামর্থ্য ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং নতুন নতুন ডিজাইন বেরিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মিস ইউনিভার্স হলেন ফ্রান্সের আইরিশ মিত্তেনায়ের
তাঁর মনমুগ্ধকর অনেক ছবি নিয়ে এলবাম

চলতি বছরের মিস ইউনিভার্স-এর খেতাব জিতল ফ্রান্স।দেশটির সুন্দরী আইরিশ মিত্তেনায়রের মাথায় উঠল মিস ইউনিভার্স-এর মুকুট।প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগী ছিলেন ৮৫ জন। তাদের মধ্যে থেকে জয়ী হন ডেন্টাল সার্জারির ছাত্রী আইরিশ। প্রথম রানার-আপ হন মিস হাইতি। দ্বিতীয় রানার-আপ মিস       আপকলম্বিয়া অ্যান্দ্রিয়া তোভার।











একুশে বইমেলা উদ্বোধন কাল

অমর একুশে গ্রন্থমেলা চত্বরের চারপাশের পরিবেশকে নান্দনিকভাবে সাজানোর কাজ প্রায় শেষের দিকে। মেলার সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে প্রথমবারের মতো চত্বরগুলোতে আলোকসজ্জার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মাধ্যমে শুরু হবে এ মেলা। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। লটারির মাধ্যমে স্টল বরাদ্দের টিকিট পাওয়া লেখক ও প্রকাশকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাংলা একাডেমি চত্বরসহ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাজে ব্যস্ত স্টল নির্মাণ শ্রকিমরা। সবকটি স্টলের কাজ প্রায় শেষের দিকে।
রোববার সকালে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে, শেষ মুহূর্তে স্টল মালিকরা উপস্থিত থেকে নির্দেশনা দিয়ে স্টল তৈরি করছেন। চারদিকে উৎসব উৎসব ভাব। রিকশা ও ভ্যানগাড়ি ভর্তি করে স্টল নির্মাণে কাঠ-বাঁশ, ইট-বালু-সিমেন্টসহ নির্মাণসামগ্রী আসছে। কাঠমিস্ত্রি, রংমিস্ত্রি, আর্টিস্ট ও ইলেকট্রিশিয়ানসহ সবাই কাজে ব্যস্ত। এ সময় দেখা গেল শোভা প্রকাশনীর স্টলে কাজ করছেন কয়েকজন নির্মাণ শ্র্রমিক। তারা বলেন, এবারই প্রথম স্টলের ছাউনিতে ত্রিপলের পরিবর্তে টিন ব্যবহার করা হয়েছে। নিত্যনতুন ডিজাইন করছি। আশা করি, আমাদের সাজানো নতুন ক্রেতা ও পাঠক সহজেই পছন্দ করবেন।
মেলার দুই পাশের প্রাঙ্গণে ৪০১ প্রতিষ্ঠানের ৬৫৯টি স্টলের কাজ চলছে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ছাড়াও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫ লাখ বর্গফুট জায়গা গ্রন্থমেলার জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। যেখানে গতবার ছিল ৪ লাখ বর্গফুট জায়গা। একাডেমির অংশে থাকবে বাংলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের স্টল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সকল প্রকাশনীর স্টল থাকবে ।
নিরাপত্তার বিষয়ে মেলা কমিটির সদস্যসচিব ড. জালাল আহমেদ জানান, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচটি ওয়াচ টাওয়ার থাকবে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যবেক্ষণের জন্য বাড়ানো হচ্ছে আলো। পুরো মেলা ঘিরে থাকছে থ্রি মেগাপিক্সেলের ২৫০টি সিসি ক্যামেরা। প্রতিটি ক্যামেরায় থাকছে নাইট ভিশন প্রযুক্তি। দোয়েলচত্বর থেকে শুরু করে শামসুন্নাহার হল হয়ে শাহবাগ মোড় পর্যন্ত রাস্তায় এসব সিসি ক্যামেরা এরই মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। বাংলা একাডেমি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও শাহবাগ থানায় স্থাপিত তিনটি কন্ট্রোল রুম থেকে এসব ক্যামেরা মনিটর করার জন্য থাকছে ১৭টি ইউনিট। ২২ ইঞ্চি মনিটরে থাকছে ১৬টি ভিউ। এ ছাড়া ডিএমপির কন্ট্রোল রুম থেকে ২৪ ঘণ্টা মেলা মনিটরিং করা হবে।
তিনি আরো বলেন, মেলায় দর্শনার্থীদের প্রবেশপথে থাকছে ২২টি আর্চওয়ে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, পহেলা ফাল্গুন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস এবং ছুটির দিনগুলোতে আরো দুটি বিশেষ আর্চওয়ে। এ ছাড়াও মেলায় আগত বিদেশি অতিথিরা চাইলে তাদের সঙ্গে একজন নিরাপত্তাকর্মী দেওয়া হবে। আয়োজক কমিটির সদস্যরা জানান, এবারই প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতিতে লটারির মাধ্যমে গ্রন্থমেলায় ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবার মেলায় এক ইউনিট পেয়েছে ১৪২টি প্রতিষ্ঠান, দুই ইউনিট ১১৪টি, তিন ইউনিট ৩১টি, চার ইউনিট ১৯টি ও প্যাভিলিয়ন পেয়েছে ১৩টি প্রতিষ্ঠান।
আয়োজরা বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১২টি চত্বরে ভাগ করে গুচ্ছপদ্ধতিতে সাজানো হয়েছে স্টলগুলো। প্রতিটি চত্বরেই আলাদা রঙের এলইডি বাতির সাহায্যে বর্ণিল রূপ দেওয়া হবে। স্টল সজ্জায়ও সেই বিশেষ রঙের প্রাধান্য দিচ্ছে একাডেমি। কবি, সাহিত্যিক, মনীষীসহ বিশিষ্টজনদের নামে হবে ১২টি চত্বর। মূল দুই প্রবেশপথ দোয়েলচত্বর ও টিএসসি এলাকার দৃষ্টিনন্দন দুটি ফটকে স্থাপিত ইলেকট্রনিক বোর্ডের মাধ্যমে মেলা-সংক্রান্ত বিভিন্ন নির্দেশিকা উপস্থাপিত হবে।
মেলার সার্বিক বিষয়ে ড. জালাল আহমেদ বলেন, ইতোমধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা কাজ করছে। আগের তুলনায় এবার আরো কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণজুড়ে। তিন হাজার পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকছে এবারের মেলায়। সেই সঙ্গে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার দুই হাজার সদস্য মেলা প্রাঙ্গণের চারপাশে অবস্থান করবেন।
তিনি আরো বলেন, এবার বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে থাকবে না কোনো আয়োজন। এর জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশেষ একটি মঞ্চ তৈরি করা হবে। এবারের গ্রন্থমেলা উপলক্ষে বাংলা একাডেমি ১০১টি বই প্রকাশ করবে।
বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা জানান, মেলায় অংশ নিতে যাওয়া প্রকাশনীগুলোর বিক্রয়কর্মীদের বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। আইডি কার্ড সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক। প্রকাশনা সংস্থাগুলোর বিক্রয়কর্মীদের দেওয়া তথ্য পুলিশের বিশেষ শাখা সংগ্রহ করে মিলিয়ে দেখবে।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রসঙ্গে বলেন, গতবারের চেয়ে এবারের মেলাকে আরও উপভোগ্য করে তুলতে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে যাচ্ছি প্রতিবছরই। বইমেলা শুধু বই প্রকাশ, প্রদর্শন এবং বিক্রির মেলা নয়, বরং এটা লেখক-পাঠকের মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তুলতেও ব্যাপক প্রচেষ্টা চালাছি।
গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী দিনেই শুরু হবে ‘সম্প্রীতির জন্য সাহিত্য’ প্রতিপাদ্যে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন। মেলার সঙ্গে বাংলা একাডেমির আয়োজনে এ সম্মেলনেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনে দেশের ছয়জন বিশিষ্ট লেখক-বুদ্ধিজীবীকে ‘আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন লেখক সম্মাননা ২০১৭’ দেয়া হবে। সম্মেলনে জার্মানি, অস্ট্রিয়া, চীন, রাশিয়া, পুয়ের্তোরিকো ও ভারতের বিশিষ্ট কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও বুদ্ধিজীবীরা বিভিন্ন অধিবেশনে অংশ নেবেন। গত বৃহস্পতিবার মেলা পরিদর্শনে আসেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। মেলার মাঠ পরিদর্শন করেন তারা। স্টল নির্মাণ ও অন্যান্য কাজের খবরাখবর নেন। প্রস্তুতি দেখে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
লেখক: মুহম্মদ পাঠান সোহাগ

উত্তরাধিকার: কে পাবে কে পাবে না

‘উত্তরাধিকার আইন, নিজে জানো ও অপরকে শেখাও, সকল জ্ঞানের অর্ধেক হলো এই জ্ঞান’—বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মদ সা. ১৪শ’ বছর আগেই বলে গিয়েছেন এ কথা। মুসলিম আইনে কোরআন, সুন্নাহ ও ইজমার ওপর ভিত্তি করে মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তি তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টন করা হয়ে থাকে। এভাবে বণ্টন করাকে ফারায়েজ বলা হয়। প্রকৃতপক্ষে মৃত্যুর পর সম্পদের অধিকার বা মালিকানা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বৈধ ওয়ারিশদের কাছে চলে যায়। বেঁচে থাকতেই শুধু কাউকে বঞ্চিত করার সুযোগ থাকে।এই সুযোগটাই মানুষের জন্য এক বড় ফেতনা অর্থাৎ, মহাপরীক্ষা।
ইসলামী আইনে কোনো মুসলমান মারা গেলে তার সম্পত্তি বণ্টনের আগে কিছু আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয়। 
১. মৃত ব্যক্তির পর্যাপ্ত সম্পত্তি থাকলে সেখান থেকে তার দাফন-কাফনের যাবতীয় খরচ মেটাতে হবে।
২. জীবিত থাকা অবস্থায় কোনো ধারদেনা করে থাকলে তাও রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে পরিশোধ করে দিতে হবে।
৩. তার স্ত্রী বা স্ত্রীদের দেনমোহর পরিশোধিত না হয়ে থাকলে বা আংশিক অপরিশোধিত থাকলে তা পরিশোধ করে দিতে হবে। মোট কথা স্ত্রীর সম্পূর্ণ দেনমোহর স্বামী মৃত অথবা জীবিত যাই থাকুন না কেন তা স্বামীর সম্পত্তি থেকে আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ পরিশোধ করতে হবে।
৪. মৃত ব্যক্তি কোনো উইল বা অসিয়ত করে গেলে তা পালন করতে হবে। কোনো ব্যক্তি তার সমগ্র সম্পত্তির তিন ভাগের এক ভাগ পর্যন্ত অসিয়ত করতে পারে। অসিয়তের এই নিয়ম প্রবর্তনের কারণ হচ্ছে, মীরাসী আইনের মাধ্যমে যেসব আত্মীয়স্বজন পরিত্যক্ত সম্পত্তির কোনো অংশ পায় না, এখান থেকে তাদের যাকে যে পরিমাণ সাহায্য দেওয়ার প্রয়োজন উপলব্ধি করা হয়, তা নির্ধারণ করা যেতে পারে। যেমন—কোনো এতিম নাতি বা নাতনি রয়েছে। মৃত পুত্রের কোনো বিধবা স্ত্রী কষ্টে জীবনযাপন করছে। অথবা কোনো আত্মীয় সাহায্য-সহায়তা লাভের মুখাপেক্ষী। এ ক্ষেত্রে অসিয়তের মাধ্যমে তাদের অন্য হকদারদের জন্য বা কোনো জনকল্যাণমূলক কাজে সম্পত্তির অংশ অসিয়ত করতে পারেন।
সম্পত্তি অল্প হোক কিংবা বেশি : পবিত্র কোরানের সুরা নিসার ৭নং আয়াতে সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষদেরও অংশ আছে এবং পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীদেরও অংশ আছে; অল্প হোক কিংবা বেশি।
উত্তরাধিকার থেকে কে বঞ্চিত হবে কে হবে না : কেউ কাউকে হত্যা করলে হত্যাকারী তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয় না। ধর্ম ত্যাগকারী স্বাভাবিক নিয়মে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। কিন্তু স্বধর্ম ত্যাগ না করে ভিন্ন ধর্মের কাউকে বিয়ে করলে উত্তরাধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা যাবে না। একইভাবে সৎ বাবা বা সৎ মা, সৎ ছেলে-মেয়ের সম্পত্তি পায় না। মুসলিম সন্তানও তার বিধর্মী পিতা-মাতার উত্তরাধিকার পাবে না।
ইসলামী শরিয়তে উত্তরাধিকার উন্মুক্ত হওয়ার পূর্বে মৃত লোকের কোনো ছেলে কিংবা মেয়ের মৃত্যু ঘটলে ওইরূপ ছেলে কিংবা মেয়ের সন্তানাদি উত্তরাধিকার পায় না। ইসলামী শরিয়তে আগে এই নিয়ম ছিল এবং এখনও আছে।
সামাজিক হীনম্মন্যতার যুগে দাদা যদি নাতির ভবিষ্যতের জন্য দান বা অসিয়ত না করে যেতে পারেন, নিগৃহীত হতে পারে অসহায় নাতি। এর সমাধান করতে গিয়ে মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১-এ ধারা-৪ সন্নিবেশিত হয়। এখন নাতি-নাতনিরা মৃত বাবার সম্পত্তি পেলেও এটা নতুন সমস্যা সৃষ্টি করছে। ৪ ধারার কারণে অনেক ক্ষেত্রে স্পষ্টত শরিয়তের লঙ্ঘন এবং অনিয়ম হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে এই ধারার কারণে সম্পত্তির বৈধ উত্তরাধিকারীরা বঞ্চিত হয়ে যাচ্ছে। এতিমরা যাতে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত না হয় সেই সম্পর্কে ইসলামে নির্দেশ দেওয়া আছে, ‘সম্পত্তি বণ্টনের সময় যখন আত্মীয়স্বজন, এতিম ও মিসকিন উপস্থিত হয়, তখন তা থেকে তাদের কিছু দিয়ে দাও এবং তাদের সাথে কিছু সদালাপ কর।’ (সুরা নিসা, আয়াত ৮ )
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে কেউ কারও সম্পত্তি পাবে না। জারজ সন্তান পিতার উত্তরাধিকারী হয় না, কিন্তু তার মা ও মায়ের আত্মীয়দের থেকে সম্পত্তি সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী পাবে (মুসলিম হানাফী আইন অনুসারে)। শরিয়া আইনে শারীরিক কিংবা মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে কাউকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার কোনো সুযোগ নেই। তবে মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যেহেতু তার সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো করার সক্ষমতা রাখে না, তাই তার সম্পত্তি তার কল্যাণে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যে একজন অভিভাবক নিযুক্ত করতে হবে। সালিশ কিংবা আদালতের মধ্য দিয়ে এই অভিভাবক নিযুক্ত করা যায়।
ইসলামী আইনে দত্তক সন্তান উত্তরাধিকার পাবে না। সম্পদের উত্তরাধিকার প্রয়োজন হয় মূলত ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য। যে কেউ তার অধীনে থাকা পোষ্য বা পালিত সন্তানের নিরাপত্তায় জীবিতাবস্থায় সম্পদ দান করতে পারেন; এমনকি সব সম্পদও। ধর্ম বা আইন এতে বাধা দেয় না। মৃত্যুর পর কার্যকর করতে এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত অসিয়ত করে যেতে পারে। চাইলে ওয়াক্্ফ বা ট্রাস্ট করে যেতে পারেন। বাংলাদেশের আইনে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিযুক্ত করতে পারেন, এমনকি নাবালক পোষ্যকেও। সম্পদ কেনার সময়েই পোষ্যর নামে কিনতে পারেন। প্রত্যেকের সম্পদ, সামর্থ্য এক নয়, তাই যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী পোষ্যোর ভবিষ্যতের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে যাওয়া কোনো কঠিন কাজ নয়।
মুসলিম আইনে সন্তানের উত্তরাধিকার জন্মসূত্রেই সুস্পষ্ট, যা কোনোভাবেই খর্ব করা যায় না। ত্যাজ্যপুত্র একটি ভ্রান্ত ধারণা, যা বাংলাদেশের কোনো আইনে বিধিত নেই। প্রকৃত মুসলিম আইন না জানার কারণে এমন অমূলক একটি বিষয় সমাজে প্রচলিত এবং তা নানা রকম সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করছে। ত্যাজ্যপুত্র ধারণাটি বাংলাদেশে মুসলমানদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়ায় পিতার মৃত্যুর পর অন্য উত্তরাধিকারিরা সম্পত্তি বণ্টনের সময় অংশ দেয় না বা দিতে অনিচ্ছুক হয়। অপরদিকে প্রকৃত আইনের অজ্ঞতার কারণে সালিশকারীদের পক্ষপাতমূলক বা ভুল সিদ্ধান্ত দিতে দেখা যায়। এতে মুসলিম আইনের লঙ্ঘন ঘটে। আর তাই ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ আইনের আশ্রয় নিতে পারেন তার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। এক্ষেত্রে ১৮৯৩ সালের বাটোয়ারা আইনে কোট ফি দিয়ে দেওয়ানি আদালতে বাটোয়ারা মামলা করা যায়। এছাড়াও মৃত ব্যক্তির কোনো উত্তরাধিকার না থাকলে এবং তা তিনি জীবিতকালে কাউকে না দেওয়ার ব্যবস্থা করে গেলে সরকার তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির ওয়ারিশ হবে।
বাপের বাড়ির হক : খুবই পরিচিত একটা অধিকার বাপের বাড়ির হক। এখন একটি কঠিন বাস্তবতা। অনেক ক্ষেত্রে ধনী বোন উত্তরাধিকার দাবি করে না অথবা ভাইরা যা দেয় তাও নিতে চায় না। কেউ কেউ সম্পত্তি নিলেও পাওনার হিসাব দেখেন না। এতে বাপের বাড়িতে অন্যদের তুলনায় কদর অনেক বেশি হয়। কিন্তু সবার আর্থিক অবস্থা হয়ত ওই বোনটার মতো নাও হতে পারে। অন্য বোনদের তাই ওয়ারিশের অধিকার দাবি করতেই হয়। এক বোনের ভালোমানুষী কর্মকা- উত্তরাধিকার দাবি করা অন্য বোনদের লোভী বানিয়ে দেয়, অন্তত বাপের বাড়ির লোকজনের চোখে। স্বামীর আর্থিক সামর্থ্যরে কারণে অথবা বাপের বাড়িতে আদর পাওয়ার উদ্দেশ্যে যে বোন উত্তরাধিকার নেওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে না, সে দুটো কারণই অনিশ্চিত ভবিষ্যতে নাও থাকতে পারে। সম্পত্তির প্রয়োজন কাল হতে পারে। তখন হয়ত আপনি অনেক দেরি করে ফেলেছেন।
প্রায়ই দেখা যায়, পরিবারের সদস্যকে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করে অন্য সদস্যরা। আমাদের একটি কমন মানসিকতা—আমরা শোষিত। চারপাশে অথবা নিজের পরিবারের দিকে নজর দিলে দেখা যায় অনেক শোষিত মুখ। যে বোন ভাইয়ের বঞ্চনা, প্রতারণার কারণে নিজেকে শোষিতের কাতারে মানছেন, তিনিও কারও হয়তো মা। তিনি কি সঠিক অর্থে ন্যায়বিচার করছেন, নিজের মেয়েটার প্রতি। তিনি কি ছেলেমেয়ের অধিকার অন্তত সম্পত্তির ক্ষেত্রে দিচ্ছেন। বাপের সম্পদ হতে বঞ্চিত হওয়ার পরও যা মিলছে তাও কি সুষম বণ্টন হচ্ছে। কম পেলেন বলে যদি আপনি বঞ্চিত, আপনার মেয়ের তো কমের ভাগ ‘মহাকম’টুকু পেল না। তাদের কী বলা হবে? আমরা নিজেরাই যখন অন্যায় করি, অধিকার আদায়ে বেশি চাপ দিতে পারি না। বাপের বাড়ির লোকজন প্রথমেই যে কয়টা যুক্তি দাঁড় করায় তার একটা এই ‘চেইন-অবিচার’। তুমি তোমার মেয়েকে কী দিয়েছ বা কী দেবে। এই প্রশ্নের সত্যিকার উত্তরটি ন্যায়বিচারে মানানসই নয়।
লেখক : রাশেদ মজুমদার; আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট

না’গঞ্জে ৭ খুন: 

খালাস চেয়ে নূর হোসেনের আপিল

নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত ৭ জনকে অপহরণ ও খুনের মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। এই মামলা থেকে খালাস চেয়ে সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিলটি দায়ের করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের ২ সপ্তাহ পর এই আবেদন করলেন তিনি। এর আগে গত ১৬ জুলাই নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন নূর হোসেনসহ ২৬ জনের ফাঁসির আদেশ এবং আরও ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। ৩ দিন পর এই রায়ের নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। তার আইনজীবী এস আর এম লুৎফর রহমান আকন্দ জানান, নূর হোসেনের করা আবেদনটি মোট ৭২ পৃষ্ঠার। এস সঙ্গে বিচারিক আদালতের রায়সহ সাড়ে ৫০০ পৃষ্ঠার বেশি নথিপত্র রয়েছে। এই আপিলের শুনানি কবে হবে তা এখনও নির্দিষ্ট হয়নি। এই মামলায় মৃত্যুদণ্ড এবং বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড পাওয়া আরও ৩৪ জনের আপিলের সুযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। ৩ দিন পর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয় জনের এবং পরদিন আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। প্রায় আড়াই বছর পর চলতি মাসেই ঘোষণা হলো দণ্ড। আলোচিত এই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন নারায়ণগঞ্জে র‌্যাব- ১১ এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, বরখাস্ত কমান্ডার এম এম রানা এবং আরিফুল হক।
আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণার পরই হাইকোর্টে দ্রুত শুনানির উদ্যোগের কথা জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর ৩ দিনের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জ থেকে হাইকোর্টে পাঠানো হয় মামলার নথিপত্র। আর ২৯ জানুয়ারি এই মামলার পেপারবুক দ্রুত তৈরির নির্দেশ দেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। আইন অনুযায়ী বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকরের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করতে হয়। এরপরও দণ্ড বহাল থাকলে তার বিরুদ্ধে আপিল করা যায়। সেখানেও রায় বহাল রাখলে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা যায়। সেখানেও দণ্ড বহাল থাকলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়া যায়। সেটি নাকচ হলেই ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নেয়া হয়।

মিস ইউনিভার্স হলেন আইরিশ মিত্তেনায়ের

চলতি বছরের মিস ইউনিভার্স-এর খেতাব জিতল ফ্রান্স।দেশটির সুন্দরী আইরিশ মিত্তেনায়রের মাথায় উঠল মিস ইউনিভার্স-এর মুকুট।প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগী ছিলেন ৮৫ জন। তাদের মধ্যে থেকে জয়ী হন ডেন্টাল সার্জারির ছাত্রী আইরিশ। প্রথম রানার-আপ হন মিস হাইতি। দ্বিতীয় রানার-আপ হন মিস কলম্বিয়া অ্যান্দ্রিয়া তোভার।
ফাইনাল রাউন্ডে বিশ্বের উদ্বাস্তু সমস্যা নিয়ে জানতে চাওয়া হয় প্রতিযোগীদের কাছে। উত্তরে 'ওপেন বর্ডার'-এর বিষয়টিতে বেশি করে গুরুত্ব দেন আইরিশ।
বলেন, ফ্রান্সে আমরা যতটা সম্ভব বিশ্বায়নের চেষ্টা করছি। মানুষের আদান-প্রদান হোক, এটা চাইছি। দেশের সীমানা মুক্ত। আর এই মুক্ত সীমান্ত বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় যেতে অনুমতি দিচ্ছে আমাদের। বিশ্বের কোথায় কী হচ্ছে, জানতে পারছি আমরা।
গত বছর মিস ইউনিভার্সের খেতাব পেয়েছিলেন ফিলিপাইনের পিয়া অ্যালোনজো উরতব্যাক। তবে মিস ইউনিভার্স ক্রাউন প্রথমে পিয়ার মাথায় ওঠেনি। প্রথমে ঘোষণা করা হয়েছিল, মিস কলম্বিয়া আরিয়াদনার নাম। কিন্তু তার পরেই হোস্ট হার্ভে মঞ্চে এসে ক্ষমা চেয়েছিলেন। তারপরই  মিস ইউনিভার্স ঘোষিত হন পিয়া। মিস ইউনিভার্স-এর মতো এমন একটি প্রতিযোগিতায় ওই ভুলের সমালোচনা করেন অনেকে। তৈরি হয় বিতর্কও।

হলিউডে ডাক পেলেন ওবামা কন্যা

সদ্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের মেয়ের তকমা চলে গেছে। এখন তিনি স্রেফ মালিয়া ওবামা- সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কন্যা। বাবার মতোই রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছা তার। তবে আপাতত মালিয়ার ঠিকানা হতে চলেছে হলিউড।
ওবামার বড় মেয়ে মালিয়া সদ্য হাইস্কুল জীবন শেষ করেছেন। তার বয়স এখন ১৮। সম্প্রতি হলিউডে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। চলতি ফেব্রুয়ারিতেই প্রযোজক হার্ভে ওয়েইনস্টেইনের কাছে ইন্টার্নশিপ শুরু করবেন মালিয়া। জানা গেছে, ওয়েইনস্টেইন কোম্পানির নিউইয়র্ক অফিসে কয়েক মাস থাকবেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ওয়েইনস্টেইনকে বিভিন্ন বিষয়ে বেশ কয়েকবার সাহায্য করেন বারাক ওবামা। একাধিক বার দু’জনকে একসঙ্গে দেখাও গেছে। কাজেই মালিয়ার কোনো অসুবিধা হবে না বলেই আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে স্কুল জীবন থেকেই মালিয়ার আগ্রহ চলচ্চিত্রে। ইতিমধ্যেই মার্কিন পরিচালক ও লেখিকা লেনা ডানহ্যামের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘গার্লস’-এ অভিনয় করেছেন তিনি। এর আগে হ্যাল বেরি পরিচালিত একটি টিভি সিরিয়ালে সহকারী হিসেবে পর্দার পিছনে কাজ করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে মালিয়ার।

ইমরান পাকিস্তানের ওপর ট্রাম্পের ভিসা নিষেধাজ্ঞা চাইলেন !

পাকিস্তানি নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ইমরান খান। তিনি বলেছেন, ট্রাম্প যদি পাকিস্তানের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন; তাহলে মেধা পাচার কমে আসবে।তখন পাকিস্তানিরা নিজ দেশের সমস্যা সমাধানের দিকে নজর দেবেন। তারা পাকিস্তানকে আরও ভালো অবস্থানে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। রোববার পাঞ্জাবের শাহিওয়ানে এক দলীয় সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। 
পিটিআই প্রধান বলেন, সব পাকিস্তানিদের উদ্দেশে বলতে চাই, আমি কামনা করছি ট্রাম্প যেন পাকিস্তানি ভিসা নিষিদ্ধ করেন। এতে আমরা নিজ দেশের প্রতি মনোযোগী হবো। ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে সবাই পাকিস্তানকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কাজে সহায়তা করবে। জনগণের চেষ্টা ও অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই কেবল পাকিস্তান উন্নতি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতারও সমালোচনা করেন ইমরান। তিনি বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর মাথাব্যাথা হলেও চিকিৎসার জন্য তিনি বিদেশে ছুটে যান। 
ইমরান খান বলেন, উচ্চশিক্ষিত পাকিস্তানিরা দেশ ছাড়তে চাইছেন। কারণ তারা মনে করেন, একটা ‘ক্ষমতাধর উৎস’ থাকলেই কেবল ভালো চাকরি পাওয়া যায়। যেদিন আমরা পাকিস্তানে মেধাভিত্তিক দিন ফিরিয়ে আনতে পারবো; সেদিন আমাদের সব সেরা নাগরিকরা দেশে ফিরে আসবেন। তারা দেশের জন্য কাজ করবেন। 
শুক্রবার নির্বাহী আদেশে সাতটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ নিয়ে দুনিয়াজুড়ে নিন্দার মুখেই রোববার তিনি মুসলিমদের ঠেকাতে সীমান্তে কঠোরতা দ্বিগুণ করার নির্দেশ দেন। আর হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে সাতটি মুসলিম দেশের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলেও এ তালিকায় আরও মুসলিম দেশের নাম অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। 
বর্ধিত তালিকায় সৌদিআরব ও পাকিস্তানের মতো দেশের নাম থাকতে পারে বলে জানা গেছে। এনবিসি নিউজকে এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ রেইন্স প্রেইবাস। তিনি বলেছেন, এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী নাগরিকরা পড়বেন না। তবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় তাদের কঠোরভাবে যাচাই করা হবে। 
এদিকে, রোববার এক টুইটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন ‘কঠোর যাচাই প্রক্রিয়া’ অনুসরণ করা; যাতে করে দেশটির কোথাও ‘ভয়ঙ্কর কাণ্ড’ এড়ানো যায়। টুইটে একইসঙ্গে ট্রাম্প মুসলিমদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের দেশের প্রয়োজন কঠোর সীমান্ত ও চূড়ান্ত রকমের যাচাই প্রক্রিয়া। 
এর কয়েক ঘণ্টা পর ট্রাম্প আবার টুইট করেন। এবার মধ্যপ্রাচ্যে খ্রিস্টান ধর্মালম্বীরা হত্যার শিকার হচ্ছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি লিখেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে অনেক খ্রিস্টানদের হত্যা করা হচ্ছে। এই নৃশংসতা আমরা চলতে দিতে পারি না। 
শুক্রবার এই নিষেধাজ্ঞা জারির পর হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পাওয়া গ্রিনকার্ডধারীরাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন। তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। নিষেধাজ্ঞায় থাকা সাত দেশ হচ্ছে ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেন। এরপর দেশটির বিমানবন্দরগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে ও বাইরে বিমানবন্দরে আটকে দেয়া হয় এসব দেশের শতাধিক যাত্রীকে। সূত্র: ডন, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস

হজের খরচ বৃদ্ধি!

হজের খরচ বাড়ানো হয়েছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার খরচ গতবারের তুলনায় ১৪ থেকে ২১ হাজার টাকা বাড়ছে এবার।সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি-২০১৭’ এবং ‘হজ প্যাকেজ- ২০১৭’ এর খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হয়।সুবিধার ধরন অনুযায়ী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে টাকার অংকে হেরফের হবে। অনেকগুলো আইটেমের মধ্যে খরচ বেড়ে গেছে। সৌদি রিয়ালের দাম বেড়েছে, ডলারের দাম বেড়েছে, বাড়ি ভাড়াও একটু বেড়েছে; সব মিলিয়েই খরচ কিছুটা বেড়েছে। এ বছর নিট বিমান ভাড়া দেড় হাজার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে । এবার সব হজযাত্রীকে বাধ্যতামূলকভাবে এমআরপি পাসপোর্ট নিতে হবে।
প্রত্যেক হজ এজেন্সিকে কমপক্ষে ১৫০ জন এবং সর্বোচ্চ ৩০০ জন হজযাত্রী পাঠানো অনুমতি দেওয়া হবে। কোরবানির জন্য ৫০০ রিয়াল সৌদি একটি ব্যাংকে জমা দিতে হবে, তারাই কোরবানি করে দেবে। আর বাড়ি ভাড়া, খাওয়াসহ অন্যান্য খরচ ই-পেমেন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। প্রসঙ্গত, চলতি বকছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করার সুযোগ পাবেন। গতবছর সরকারিভাবে ১০ হাজার এবং বেসরকারিভাবে ৯১ হাজার ৭৫৮ জন হজে গিয়েছিলেন।
জানা যায়, সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ- ১ এর আওতায় (কোরবানি ছাড়া) হজে যেতে এবার ৩ লাখ ৮১ হাজার ৫০৮ টাকা এবং প্যাকেজ-২ (কোরবানিসহ) এর আওতায় ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ টাকা খরচ হবে। গত বছর প্যাকেজ-১ এ ৩ লাখ ৬০ হাজার ২৮ টাকা এবং প্যাকেজ-২ এ ৩ লাখ ৪ হাজার ৯০৩ টাকা নির্ধারিত ছিল। এছাড়া বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এবার সর্বনিম্ন ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩৭ টাকা খরচ নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার; গত বছর যা ছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৪১ টাকা। এই হিসেবে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এবার হজে যাওয়ার মৌলিক খরচ বেড়েছে এক হাজার ৯৬ টাকা। এই মৌলিক খরচের সঙ্গে সৌদি আরবে বাড়িভাড়া, খাওয়া-দাওয়া, কোরবানিসহ অন্যান্য খরচ হজ এজেন্সিগুলো যোগ করবে।

Sunday, January 29, 2017

সময়ের অর্থ বদলে দিল যে ঘড়ি

তেরো শতকে তৈরি সুইজারল্যান্ডের ঘড়ি বদলে দিয়েছে সময়ের অর্থ। সুইজারল্যান্ডের বার্নে মধ্যযুগের ঘড়ি জাইটোগ্লগ ৮০০ বছর ধরে স্থানীয়দের সময় জানিয়ে আসছে। এই ঘড়ি দিয়ে জ্যোতির্বিদ্যার সময় জানা যায়। অর্থাৎ জ্যোতিষীরা সূর্য, চাঁদ ও নক্ষত্রের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন। ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ইতোমধ্যে এ ঘড়ি স্থান করে নিয়েছে।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শাসক এসে এই ঘড়ির সংস্করণ করেন এবং একেকজন এর একেক রূপ দেন। ঘড়ির টাওয়ার প্রথমে ১৬ মিটার লম্বা ছিল। পরে ৭ মিটার বাড়ানো হয়। ঘড়ির ওপরের দরজা ১৫ শতকে বানানো হয়। শুধু সময় জানান দিয়ে ক্ষান্ত হয় না এ ঘড়ি, প্রতি ঘণ্টায় বিভিন্ন চরিত্র এসে নাচ দেখায়, যা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
১৯০৫ সালে এক সন্ধ্যায় বিজ্ঞানী আইনস্টাইন বার্নে হাঁটতে বের হন। সে সময় এই ঘড়ির ঘণ্টার শব্দ শুনে তিনি এক যুগান্তকারী আবিষ্কার করেন। বের করেন বিজ্ঞানের এক অপ্রকাশিত সত্য। তিনি চিন্তা করেন যদি কোনো ট্রাম আলোর গতিতে ঘড়ির টাওয়ার থেকে দূরে চলে যায় তাহলে কী হবে? যদি তিনি ট্রামের ভেতরে বসে থাকেন এবং দূর থেকে টাওয়ারের ঘড়ি দেখেন মনে হবে যে সেকেন্ডের কাঁটা থেমে আছে। কিন্তু তার হাতঘড়ির কাঁটাটা ঠিকই চলছে। এ ঘটনার ছয় সপ্তাহ পর তিনি এক গবেষণাপত্র বের করেন। বিষয় আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব। পরে তিনি দেখান কিভাবে স্থান এবং সময়ের ওপর ভর, শক্তি ও মাধ্যাকর্ষণ শক্তি প্রভাব ফেলে। পরমাণু যুগ ও মহাকাশ ভ্রমণ সম্পর্কে তিনি পূর্বাভাস দেন। কিভাবে গ্রহ-নক্ষত্র কাজ করে সে সম্পর্কে ধারণা দেন।
জাইটোগ্লগের সেই ঘণ্টাধ্বনি আপেক্ষিকতার সূত্র বের করতে সাহায্য করেছিল। সময়ের ধারণাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছিল। যদি কোনো পর্যটক এ ঘড়ি দেখতে আসেন তবে তিনি টাওয়ারের ভেতরে গিয়েও এর কল-কব্জাও দেখতে পারবেন।

শুধু টিকিট দিয়েই ভারত ভ্রমণ!

ভারতীয় ভিসার জন্য বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের সাক্ষাৎকারের প্রয়োজন নেই। ভ্রমণকারীদের শুধু ভারতে যাওয়ার বিমান, সড়ক অথবা রেল পথের নিশ্চিত টিকিট থাকলেই তারা সরাসরি ভিসা পাবে বলে জানিয়েছে দেশটির দূতাবাস।ঢাকার আবেদনকারীরা তাদের নিশ্চিত ভ্রমণ টিকেট নিয়ে সরাসরি (ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার) আইভিএসি মিরপুর শাখায় ট্যুরিস্ট ভিসার আবেদনপত্র জমা দিতে পারবে।
এর বাইরে বাংলাদেশি ভ্রমণকারী যাদের নিশ্চিত ভ্রমণ টিকেট রয়েছে, তারা সাক্ষাৎকার (অ্যাপয়েন্টমেন্ট) ছাড়াই আইভিএসির রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম, খুলনা, যশোর, ময়মনসিংহ এবং বরিশাল শাখায় সরাসরি ট্যুরিস্ট ভিসা প্রাপ্তির সুবিধা পাবে।
১ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশের আটটি ভিসা আবেদনকেন্দ্রে (আইভিএসি) বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের ভারতে যাওয়ার বিমান, সড়ক অথবা রেল পথের নিশ্চিত টিকেটসহ সরাসরি ভিসা প্রাপ্তির স্কিমটি বর্ধিত করা হয়েছে।
তবে আইভিএসি ফরমে ভিসা আবেদনপত্র জমাদানের তারিখের এক মাসের মধ্যে ভ্রমণের তারিখ হতে হবে। এ ছাড়া পরবর্তী বিস্তারিত তথ্য www.ivacbd.com এই ঠিকানায় পাওয়া যাবে।
বদলে গেল সেই ভ্যান চালকের ভাগ্য
মিলল চাকরি, ভ্যান যাচ্ছে জাদুঘরে!
মায়ের সঙ্গে সেই ভ্যানচালক ইমাম শেখ 
জীবনের চাকা যার ঘুরপাক খাচ্ছিল ভ্যানের চাকায়, সেই কিশোর ভ্যানচালকের ভাগ্যের চাকা যে এভাবে ঘুরে যাবে কেউ কল্পনা করেনি। ভ্যানচালক ইমাম শেখ নিজেও নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ার গ্রামীণ সড়কে ভ্যান চালিয়ে আজ খুলে গেছে ইমাম শেখের কপাল। প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে চাকরি হচ্ছে এই কিশোরের। গত শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় ফেরার আগে বেলা ১১টা থেকে ইমাম শেখের ভ্যানে চড়ে প্রায় ১৫ মিনিট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজ এলাকা ঘুরে দেখেন। তিনি বঙ্গবন্ধু স্মৃতিসৌধ থেকে ভ্যানে চড়ে প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত যান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ওই ভ্যানে ছিলেন ভাগ্নে (ছোট বোন শেখ রেহানার ছেলে) রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, তার স্ত্রী পেপি সিদ্দিক, মেয়ে লিলা তুলি সিদ্দিক ছেলে কাইয়ুস মুজিব সিদ্দিক। কাইয়ুস মুজিবকে কোলে নিয়ে শেখ হাসিনা গ্রামের বিভিন্ন স্থানে ভ্যান থামিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন তাদের খোঁজখবর নেন। প্রধানমন্ত্রীর সাইকেল ভ্যানে চড়ে ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার পায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী ঢাকা ফিরে যান। পরের দিন শনিবারপ্রধানমন্ত্রীকে মনের কথা বলতে না পারায় এখনো আফসোস ভ্যানচালক ইমামের। বারবার একটি চাকরি দেওয়ার কথা বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু আনন্দে আত্মহারা হয়ে তা বলতে পারিনি’, ইমামের এই বক্তব্য সংবলিত সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। জানা গেছে, এই সংবাদ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি গোচরে আসে। তিনি ভ্যানচালক ইমামের জন্য একটি চাকরির ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সকালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঘাঁটি থেকে স্কোয়াড্রন লিডার হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বিমান সেনাদল টুঙ্গিপাড়ায় আসেন। সরাসরি যান ইমাম শেখের বাড়ি। সেখান থেকে তাকে নিয়ে আসা হয় প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধি আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহের বাসভবনে। সেখান থেকে ইমাম শেখকে যশোর নিয়ে যান বিমান বাহিনীর প্রতিনিধিরা। সেই সঙ্গে তার ভ্যান গাড়িটিও নিয়ে যাওয়া হয়। জানা গেছে, ভ্যানটি জাদুঘরে রাখা হবে। প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে না চাইতে সবকিছু পেয়ে যাওয়ার আনন্দে আত্মহারা ইমাম শেখের সব স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। চাকরি পাওয়ার অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে আপ্লুত ইমাম শেখ বলেন, স্বপ্নেও ভাবিনি এভাবে আমার একটি চাকরি হবে। প্রধানমন্ত্রী ওইদিন আমার ভ্যানে না উঠলে হয়তো চাকরির স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে যেত। তিনি বলেন, আমি এলাকার মুরব্বিদের কাছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কথা শুনেছি। তিনি খুবই দয়ালু ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যে তার পিতার মতো দয়ালু তার প্রমাণ পেলাম। আমি এবং আমার পরিবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। দোয়া করি আল্লাহ প্রধানমন্ত্রীকে দীর্ঘায়ু দান করুন। ইমাম শেখকে নিতে আসা বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, যোগ্যতা অনুসারে তাকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। বিষয়ে শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমাম শেখের কথা-বার্তা আচরণে খুশি হয়ে একটি চাকরি ব্যবস্থা করছেন। আশা করছি, চাকরির মাধ্যমে তার পরিবারের দুর্দশা লাঘব হবে
লেখক: আমিনুল হাসান শাহীন, গোপালগঞ্জ