Saturday, April 28, 2018

দুই কোরিয়ার ফার্স্ট লেডিশান্তির সম্মেলনে আলো ছড়ালেন 


লিহান লিমা: কোরিয়া বিভক্তির ৭০ বছর পর এই প্রথমবারের মত মিলিত হলেন উত্তরের ফার্স্ট লেডি রি সোল জু এবং দক্ষিণের ফার্স্ট লেডি কিম জং সুক। পুরোটা সময়েই দু’জনেই ছিলেন হাসিখুশী এবং প্রাণবন্ত। এছাড়া ফ্যাশন এবং নিজস্ব স্টাইলের কারণে শুক্রবার মিডিয়ার নজর কেড়েছিলেন রি ও সুক।
রি পরেছিলেন পশ্চিমা ঢঙের পোশাক। গোলাপি স্কাটের সঙ্গে মিলিয়ে পড়েছিলেন তার প্রিয় ‘ডিওর’ ব্র্যান্ডের ব্যাগ। পানমুনজামে তাকে স্বাগত জানাতে যাওয়া সুক পরেছিলেন আকাশি রঙের পোশাক। তার কানে শোভা পাচ্ছিল একই রঙের দুল। রি’কে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পর নিজেদের মধ্যে পরিচয় পর্ব সারেন সুক।
সন্ধ্যায় নৈশভোজে তারা কিম জং উন ও মুন জে ইনের সঙ্গে যোগ দেন। এই সময় রি’কে সৌহার্দপূর্ণতার সঙ্গে স্বাগত জানান মুন। মুন রি কে বলেন, ‘এক দিনেই আমরা দৃঢ় বন্ধুত্বের সূচনা করেছি।’। উত্তরে রি বলেন, ‘সকালে কিমের কাছে শুনেছি এই সম্মেলন সফল হয়েছে। আমি আশা করি দুই কোরিয়ার নেতাই এই সফলতার ধারাবাহিকতা এগিয়ে নিয়ে যাবেন।’
এর আগে কিম জং উনের বাবা কিম জং ইল তার শাসনামলে কোন স্ত্রীকে জনসম্মুখে আনেন নি। সম্প্রতি কিমের সঙ্গে চীন সফরের পর ৪০ বছর পর এই প্রথম উত্তর কোরিয়ার গণমাধ্যম ‘ফার্স্ট লেডি’ শব্দটি উল্লেখ করে। এর আগে রি’কে ‘কমরেড’, ‘সম্মানীত’ এবং ‘কিম জং উনের স্ত্রী’ বলে সম্বোধন করা হত।
দক্ষিণ কোরিয়ার ‘পুনএকত্রীকরণ মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৪ সালের পর এই প্রথমবারের মত উত্তর কোরিয়া ‘ফার্স্ট লেডি’ শব্দটি ব্যবহার করে।’ এর আগে সর্বশেষ কিম জং উনের দাদা কিম ইল সাং এর স্ত্রী কিম সং এয়ি কে ‘ফার্স্ট লেডি’র এর মর্যাদা দেয়া হয়েছিল।
তবে রি এর সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। তার বয়স, কিমের সঙ্গে বিয়ের দিন-ক্ষণ এখনো অজানা। কিমের সাথে বিয়ের আগে রি উত্তর কোরিয়ার জাতীয় ক্রীড়া দলের চিয়ারলিডার ছিলেন বলে জানা যায়। ব্যক্তিজীবনে রি কিম সুং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রির অধিকারী। এছাড়া কণ্ঠসঙ্গীতে রয়েছে তার যথেষ্ট দখল। 
সূত্রঃ ডেইলি মেইল।

Tuesday, April 17, 2018

ওষুধ ছাড়া ডায়বেটিসকে দূরে রাখার কিছু উপায় 

 
আগে বলা হতো, একবার ডায়বেটিস হলে তা নাকি সারাজীবন থাকে৷ যা আর এখন সত্য নয়, বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন সমীক্ষার মাধ্যমে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন৷ তাঁদের মতে, সতর্কভাবে সঠিক খাবার খাওয়া হলে ডায়বেটিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব৷
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে ওজন কমানো: খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে অতিরিক্ত ওজন কমানোর মাধ্যমে ডায়বেটিস শতকরা ৯০ ভাগ কমানো সম্ভব৷ যদি সে রোগীর ডায়বেটিসে ভোগার সময়কাল চার বছরের কম হয়ে থাকে৷ একথা জানান, জার্মান ডায়বেটিস বিশেষজ্ঞ প্রফেসার স্টেফান মার্টিন৷
নুডলস যখন ‘বিষ’: নুডলস বা মিষ্টি জাতীয় খাবারের শর্করা রক্তে চিনির মাত্রা মুহূর্তের মধ্যেই বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে শরীরের কোষে ইনসুলিন হরমোন ছড়িয়ে পড়ে৷
দিনে মাত্র ৬০০ ক্যালোরি: ২০০ ডায়বেটিস রোগী নিয়ে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ডায়বেটিস রোগীরা কড়া ডায়েটিং করে, অর্থাৎ দিনে মাত্র ৬০০ ক্যালরি প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়ার পর ঔষুধ সেবন বন্ধ করতে পেরেছেন৷ তাছাড়া দীর্ঘ তিন মাস শর্করা জাতীয় খাবার পুরোপুরি বাদ দিয়ে শুধু প্রোটিনযুক্ত খাবার খেয়েও একই ফল পাওয়া গেছে৷
তিন বেলা প্রোটিন: তিন সপ্তাহ ধরে তিন বেলাই প্রোটিনযুক্ত খাবার খেলে অবশ্যই রক্তে চিনির মাত্রা কমে যাবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ স্টেফান মার্টিন৷ মাছ, মুরগি, ডিম, মটরশুটি এবং দুধ জাতীয় খাবারে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন৷
বাদামও খুব উপকারী: ডায়বেটিস রোগীকে প্রতিদিন এক মুঠো বাদাম, আখরোট খাওয়ার কথা পরামর্শ দেন ডাক্তাররা, কারণ, বাদামের ম্যাগনেশিয়াম ইনসুলিনের প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণে রাখে৷
সবজি ও বিভিন্ন সালাদ পাতা: এ সবে ক্যালরি প্রায় নাই বললেই চলে৷ তবে এতে থাকা পানি পেট ভরায় এবং খুব ধীরে ধীরে রক্তে প্রবেশ করে৷ সালাদের সাথে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিলে অনেকক্ষণ খিদেও পায় না৷ তাই প্রচুর সালাদ খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা৷
স্ট্রবেরি,আপেল: এসব ফলে অন্যান্য ফলের তুলনায় অনেক কম শর্করা রয়েছে৷ কাজেই ওজন কমাতে এবং ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে কোনো চিন্তা না করে এ ধরনের ফল যত খুশি খাওয়া যায়৷
বাইরের কেনা খাবার একেবারেই বাদ রাখুন: ডায়বেটিস রোগীর এক প্লেট খাবারের অর্ধেকটাই হতে হবে সালাদ বা সবজি৷ আর বাকি অর্ধেকে চার ভাগের তিন ভাগ প্রোটিনযুক্ত খাবার আর এক ভাগ থাকতে পারে শর্করা জাতীয় খাবার৷ বাইরের কেনা খাবার একেবারেই বাদ রাখুন৷ এই নিয়মগুলো মেনে চললে ডায়বেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখা মোটেই কষ্টকর নয়৷

Monday, April 16, 2018

চুয়াডাঙ্গা থেকে মুজিবনগর 


রক্তের সাথে আস করে নয়, আবার কারো দানেও পাওয়া নয় আমাদের স্বাধীনতা। বাংলার স্বাধীনতা অস্তমিত হয়েছিলো পলাশির আম্রকাননে আবার আরেক আম্রকাননে তার বীজ রোপিত হলো। সেই বিজ থেকে প্রাণের রসদ নিয়ে বাঙালি আবারো প্রমাণ করলো এ জাতি পরাভব মানে না। পরাজয় এজাতির তিলকে কলঙ্ক লেপে দিলেও তা চিরস্থায়ী নয়। ব্যবধান মাত্র ২১৪ বছরের। প্রথম যেদিন স্বাধীনতা হারাতে হয়েছিলো সেদিন কতিপয় মানুষের হীনচক্রান্ত ছিলো প্রবল। এই সব বিশ্বাসঘাতকের নীল নকশায় সেদিন স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়। এদের ভিতরে যেমন মীর জাফর আছেন তেমনি আছেন ঘষেটি বেগম, রাজা রায়দুর্লভ, জগৎশেঠ প্রমুখ। এদের কূটজালে আটকে বিরোধীদের চেয়ে চারগুণবেশি সেনা নিয়েও নবাবের বাহিনী পরাজিত হলো। তাইতো যেদিন লর্ড ক্লাইভ বন্দি নবাবকে রাস্তা দিয়ে হাটিয়ে নিয়ে আসছিলেন তখনকার অনুভূতি তিনি এভাবেই ব্যক্ত করলেন। ‘বন্দি নবাবকে চরম অপমানের সাথে আমরা রাস্তা ধরে হাটিয়ে নিয়ে আসছি। দলে দলে লোক দেখছে। আমাদের পোষা বাহিনীর কিছু সদস্য নবাবকে বিদ্রুপ করছে। নানা ধরনের কথার পাশাপাশি তার দিকে অখাদ্য ছুড়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ভারতবাসী কেবলই তাকিয়ে দেখছে। আমাদের পরম সৌভাগ্য তারা কোন হাঙ্গামা করেননি। সংখ্যায় তারা এতোবেশি ছিলো যে, তারা প্রত্যেকে যদি আমাদের লক্ষ্যকরে শুধুমাত্র একটি করে পাথর ছুড়ে মারতো তা হলে আমাদের পুরো বাহিনীর আর খোঁজ পাওয়া যেতো না। কিন্তু তারা তা করেনি।‘ তবে ইতিহাস ঠিক তার পাঠ তুলে রেখেছিলো। ক্লাইভকেও পাগল হয়ে বিলেতের রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে হয়েছিলো। এমনকি তার বিচার করা হয়েছিলো। বিচারে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে তার সবসম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিলো। নবাবের বিদেহী আত্মা সেদিন হয়তো খুশি হয়েছিলো এই ভেবে অত্যাচারী যতই প্রবল আর প্রতিপত্তিশালী হোক না কেন তাকে তার কর্মের দায় বইতেই হবে। আবার দেখুন আমাদের মুক্তি সংগ্রামের সময়ে কিন্তু এই মীরজাফর ঘষেটি বেগম আর রায় দুর্লভের দলই ছিলো। তাদের রেখে যাওয়া প্রেতাত্মারা সেদিন আবারো আমাদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধাচারণ করে। তাইতো রাজাকার শিরোমণি গোলাম আযম, মইতা রাজাকার, ত্রিদিব রায়, ফ‘কা সাকার দল জোট বেঁধে জনগণের ইচ্ছের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। পাকিদের পক্ষ নিয়ে তারা এদেশের মানুষকে হত্যা করেছে, নারীদেরকে ধর্ষণ করেছে, মানুষের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে আর লুটপাট করে তাদেরকে নিঃস্ব করেছে। ক্লাইভের প্রেতাত্মা পাকি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের পোষ্যরা সেদিন যে অপকর্মে মেতেছিলো তার বিচারের জন্য আমাদের দীর্ঘ সাড়ে চার দশক অপেক্ষা করতে হয়েছিলো। তারপরেই আমরা তাদের বিচার করতে পেরেছি। আর আমাদের ভিতরে একজন সাহসী ছিলেন বলেই তা সম্ভব হয়েছে। যখন এসব ঘৃণিতদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছিলো তখন অনেকেই যাদের ভিতরে বেশির ভাগই পরজীবী বুদ্ধিজীবী বলে সমাজে পরিচিত, তাদের একটি অংশ প্রকাশ্যে অথবা গোপনে সরকারের এই অবস্থানে গোস্বা করেন! এমনো বলতে শোনা গেছে, বিষয়টিতো মিমাংসিত। আবার বঙ্গবন্ধুর নামে মিথ্যা দোহাই দিয়ে বলা হয়, এদেরকে বঙ্গবন্ধু স্বয়ং ক্ষমা করে দিয়ে গেছেন ইত্যাদি। তবে ওই যে সাহসী মানুষটির কথা বলছিলাম যার রক্ত জাতির জনকের রক্ত থেকে প্রবাহিত, যিনি কথা এবং কাজে এক, কোন বেঈমানীকে যিনি মনেপ্রাণে ঘৃণা করেন- সেই তিনিই বললেন, তাদের নিরপেক্ষভাবে বিচার হবে। তাদের অপকর্মের বিচারের এজে-া দিয়েই আমাদের নির্বাচনী ইস্তেহার। এক্ষেত্রে আপসের কোন সুযোগ নেই। তিনি এও ঘোষণা করলেন অভিযুক্তদের আত্মপক্ষের সুযোগ দেওয়া হবে। এভাবেই ন্যায় বিচারের মাধ্যমে দেশে বিচারের সংস্কৃতি চালু হলো। দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠে বিচার না করার সংস্কৃতি থেকে মানুষ মুক্তি পেলো। আজ ১৭ এপ্রিল সেই ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য এক দিন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এদিনে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথগ্রহণ করে। পরে এই বৈদ্যনাথ তলাকেই ঐতিহাসিক মুজিবনগর হিসেবে নামকরণ করা হয়। এর আগে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানোর পর একই বছরের ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়। আবার এই সরকারের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে মাত্র নয় মাসের রক্তক্ষয়ী জনযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে। এ দিন ঘোষিত ঘোষণাপত্রে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন দেওয়া হয়। ঘোষণাপত্রে সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ও সৈয়দ নজরুল ইসলামকে প্রজাতন্ত্রের উপ-রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়াও তাজউদ্দিন আহমেদ অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ মনসুর আলী অর্থমন্ত্রী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী নিযুক্ত হন। অপরদিকে, জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী অস্থায়ী সরকারের মুক্তিবাহিনীর প্রধান কমান্ডার এবং মেজর জেনারেল আবদুর রব চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। ১১ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ দেশবাসীর উদ্দেশে বেতার ভাষণ দেন, যা আকাশবাণী থেকে একাধিকবার প্রচারিত হয়। তাজউদ্দিনের ভাষণের মধ্য দিয়েই দেশ-বিদেশের মানুষ জানতে পারে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম পরিচালনার লক্ষ্যে একটি আইনানুগ সরকার গঠিত হয়েছে। মুজিবনগর দিবসে সরকারিভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। ঢাকার কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ভোর ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও কেন্দ্রীয় এবং দেশের সকল জেলা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে রক্ষিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। মুজিবনগরের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ১০টায় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে গার্ড অব অনার এবং ১০টা ৩০ মিনিটে মুজিবনগরের মেহেরপুরে শেখ হাসিনা মঞ্চে মুজিবনগর দিবসের জনসভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য ও ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। আর প্রধান অতিথি থাকবেন উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। সরকারিভাবে পালিত অনুষ্ঠানের একসময় ইতি হবে। কিন্তু যে মাটি এবং তার মানুষেরা সেদিন শত কষ্টকে অবলীলায় সহ্য করে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বরলিপি তৈরি করেছিলো তাদের প্রতিদান কী? মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কিছু না করেও এমন অনেকে আছেন যারা নিজেদের ঢাক পিটিয়ে চলেছেন। অতি উৎসাহী হয়ে তারা একাজে অনেক সময় সরকারকে বিব্রতকর অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধার সুবিধা নিতে তারা বিবেক বন্ধক দিতেও রাজী আছেন। কবির ভাষায় ... দ্যাখ কত সুন্দর আমি কহে নকল হীরাটি / তাইতো সন্দেহ লাগে নহ তুমি খাটি। এমন নকলদের কারণে মুক্তিযুদ্ধ এবং আমাদের অনেক গর্বের অর্জন আজ প্রশ্নের মুখে। তোষামোদকারীদের কাছে আত্মসমর্পণ করছেন অনেকেই। নিজেদের গর্ব করার মত কোন প্রামণিক দলিল না থাকলেও তারা চোপার জোরে নিজেদেরকে মহীয়ান করতে দিনরাত পার করছেন। অথচ যাদের আছে তারা কিন্তু কেবলই প্রচারের অভাবে নায্য পাওনাটুকু ঠিকমত বুঝে পাচ্ছেন না। এমনি অবহেলা আর অনাদারের শিকার মুক্তিযুদ্ধের প্রথম রজধানী চুয়াডাঙ্গা। মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রথম রাজধানী চুয়াডাঙ্গা। ১৯৭১ সালের সেই ভয়াবহ দিনগুলোতে নিজেদের ভবিষৎ অগ্রাহ্য করে সেদিন মুক্তিপাগল মানুষের আশ্রয় দিয়েছিলো এই চুয়াডাঙ্গা। পাকিস্তানের বড় দালাল এবং পেয়ারে পাকিস্তানের শেষ ভরসা রাজাকার শিরোমনি ডা. আব্দুল মোতালেব মালিক সংক্ষেপে এ,এম মালিকের নিজ শহরছিলো এই চুয়াডাঙ্গা। কিন্তু চুয়াডাঙ্গার প্রতিবাদী মানুষগুলো নিজেদের ভবিষৎকে প্রশ্নবিদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলো। নিজের সব সামর্থ দিয়ে সেদিন তারা মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহিত করেন। এম এন সাহা তৈরি করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মনোগ্রাম। মুক্তিযোদ্ধাদের খাদ্য দিয়ে সহায়তা দেন চুয়াডাঙ্গাবাসী। নিজেদের ঘরে চাল বাড়ন্ত রেখেও তারা সেদিন মুক্তিপাগল মানুষের জন্য খাবারের যোগান দেন। নিজের জীবন বিপন্ন করে তাদের এই ত্যাগ আজো রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখনো চুয়াডাঙ্গাবাসীকে স্বীকৃতির জন্য রাস্তায় দাঁড়াতে হয়। মানববন্ধন করতে হয়। তারপরেও দাবিটি কোনভাবেই সরকারের কানে ওঠেনা। আবার সরকারের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ চুয়াডাঙ্গার বিষয়ে একেবারেই নিশ্চুপ। পানি জমে বরফ হয়ে গেছে। কোনভাবেই এই বরফ আর গলবে না! মুুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্ব ঠিক তেমনি গর্বের স্থান হিসাবে চুয়াডাঙ্গা তার অংশীদার। কিন্তু নির্মম সত্যি হচ্ছে স্বাধীনতার ৪৭ বছর পেরিয়ে গেলেও তার স্বীকৃতি থেকে চুয়াডাঙ্গাবাসী বঞ্চিত। তাদের ন্যায্য পাওনা কোনভাবেই পরিশোধিত হচ্ছে না। আবার পাওনা আদায়ের পথে হেটেও কোনো সুফল আসছে না। জটটি কোথায় তার হিসাব মেলতে এখন ব্যস্ত চুয়াডাঙ্গাবাসী। আর সেই হিসাবটি হচ্ছে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিলো স্বাধীনতার বিরুদ্ধ শক্তি। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় বিরোধীতার নামে, মুক্তিযোদ্ধার বিজয় হলে তাদের পরাজয় ঘটে। ৭৫ সালের নির্মম হত্যাকা-ের পর ক্ষমতায় ফেরে। যেমন রাজাকার মিয়া মুনসুর, রাজাকার হাবিবুর মাওলানা, শান্তি কমিটির সদস্য হাজী মোজাম্মেল হক বঙ্গজ। আবার সরাসরি রাজাকার না হয়েও এমন অনেকেই ছিলেন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে যারা দেহমনে রাজাকার। তবে বর্তমানের ক্ষমতাসীন এমপি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। যিনি গণমানুষের নেতা হিসাবে সারা চুয়াডাঙ্গাতেই পরিচিত মুখ। প্রথম রাজধানীর কর্মকা-ের সময়ে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার চোখের সামনে স্পষ্ট সেদিনের ইতিহাস। সেই সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার সেলুন এমপির ওপরে এখন চুয়াডাঙ্গাবাসীর ভরসা। ইতিহাসের সত্যপাঠ এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসের সেরা স্বাক্ষী প্রথম রাজধানী চুয়াডাঙ্গা। তার স্বীকৃতি পেতে আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে? মুক্তিযুদ্ধে সব হারানো চুয়াডাঙ্গার মাটি কি তার সেই স্বীকৃতিটুকু পাবে? এমনি প্রত্যাশা নিয়ে দেশরত্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দিকেই চেয়ে আছে চুয়াডাঙ্গাবাসী।
লেখক:কামাল সিদ্দিকী, সিনিয়র সাংবাদিক, ছোটগল্পকার, কলামিস্ট ও কবি।

Thursday, April 12, 2018

দেহে লাগালে রোদ বাড়বে গোপনশক্তি,কমবে মেদ 


শিরোনাম পড়ে অবিশ্বাস্য মনে হলেও গবেষণা বলছে এরকমটা৷ দিনে অন্তত দু’ঘণ্টা রোদ দেহে লাগান৷ সবসময় ছায়া বা ছাতা খুঁজবেন না৷ মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় আসা তথ্য অনুযায়ী,রোদ নাকি যৌনক্ষমতা বাড়ানোর ব্যাপারে দারুণ ওষুধ৷ চিকিৎসকরা বলছেন, পুরুষের রক্তে যৌন হরমোন টেস্টোস্টেরন ভিটামিন ডি'র মাধ্যমে বৃদ্ধি পায়। আর ভিটামিন ডি'র প্রধান উৎস হল সূর্যালোক। ত্বকে সূর্যালোকের প্রভাবে রক্তে ভিটামিন ডি'র মাত্রা বৃদ্ধি পায়। গবেষকরা জানিয়েছেন,রক্তে প্রতি মিলিলিটারে ভিটামিন ডি'র পরিমাণ যত বেশি হবে পুরুষের যৌন ক্ষমতা তত বাড়বে!
এছাড়াও শরীরে রোদ লাগানোর উপকার রয়েছে আরও অনেক:রোদে কিছু সময় হাঁটলে কী হয় জানেন? খুব ঘাম হতে থাকে। সেই সঙ্গেও পিপাসাও পায়। আর তখন আমরা লিটার লিটার পানি খেয়ে থাকি। যত বেশি করে পানি খাই, তত বেশি বেশি প্রস্রাব হয়। ফলে শরীরের অন্দরে জমে থাকা টক্সিন বেরিয়ে যায়। সেইসঙ্গে ঘামের মাধ্যমে ত্বকের ছিদ্রে জমে থাকা ময়লাও বেরিয়ে যায়। ফলে ত্বক এবং শরীর, উভয়ই সুন্দর হয়ে ওঠে। তবে তাই বলে ঘন্টার পর ঘন্টা রোদে হাঁটবেন না যেন, শরীর খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু! টানা চার সপ্তাহ অল্প সময়ের জন্য সূর্যের আলো গায়ে লাগালে সোরিয়াসিসসহ একাধিক ত্বকের রোগ সেরে যায়। তবে বেলা ১২টার আগে এই কাজটা করবেন। কারণ বেলা বাড়লে রোদের তেজও বেড়ে যায়। ফলে এমন সময় সূর্য়ের আলো গায়ে লাগাতে কষ্ট হতে পারে।
ব্রেস্ট,কোলোন এবং প্রস্টেট ক্যান্সার রোধে সূর্যের আলোর কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, সারাশরীরে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে দিয়ে ক্যান্সার সেলকে ধ্বংস করে ফেলতেও সূর্যের আলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে বেলা বাড়ার পর বেশিক্ষণ সূর্যের নিচে কাটালে স্কিন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই যতটা পারবেন সকাল বেলা সূর্য়ের আলো গায়ে লাগানোর চেষ্টা করবেন। যারা অনিদ্রায় ভুগছেন, তারা কাল থেকেই রোদ লাগানো শুরু করুন গায়ে। এমনটা করলে দেখবেন রাতে ঘুম না আসার সমস্যা দূর হবে। আসলে সূর্যের আলো চোখে লাগা মাত্র অপটিকাল নার্ভ মারফত আমাদের মস্তিষ্কে একটি বিশেষ সিগনাল যায়, যা মেলাটোনিন রাসায়নিকের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। এই রাসায়নিকের ক্ষরণ যত বাড়তে থাকে, তত ঘুমে ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে সূর্য়ের আলো গায়ে লাগলে আমাদের মস্তিষ্কে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা নিমেষে মনকে ভাল করে দেয়। সেই সঙ্গে শারীরিক ক্লান্তিও দূর করে।

Sunday, April 8, 2018

সফল হতে জীবনযাত্রায় আনুন ৫ পরিবর্তন
সফল হতে জীবনযাত্রায় আনুন ৫ পরিবর্তন

বারবার রুটিন তৈরি করে ব্যর্থ হয়েছেন, নিয়মানুবর্তিতায় বাঁধতে পারছেন না নিজেকে। মনে রাখবেন সাফল্য একটি অভ্যাস, কোনও কাজ নয়। লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে কয়েকটি উপায় মাথায় রাখুন। সেই ৫টি উপায় হলঃ
১) তালিকা তৈরী করুনঃ- প্রথমে আপনার লক্ষ্যের একটি তালিকা তৈরি করুন। আবেগের উপর ভরসা না করে মাথা দিয়ে ভাবুন। তালিকা তৈরির সময়ে কখনওই এটা ভাববেন না, আপনার লক্ষ্যপূরণ একটি কষ্টকর বিষয়। তালিকা তৈরির পর সেটি এমন জায়গায় টাঙিয়ে রাখুন যাতে প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত আপনার চেখে পড়ে। 
২) আপনার কাজের জায়গা পরিষ্কার করে রাখুনঃ- বিশৃঙ্খলা মানুষকে সর্বদাই বিভ্রান্ত করে। আপনার কাজের অথবা পড়ার জায়গা ‌যদি অপরিষ্কার ও বিশৃঙ্খল অবস্থায় থাকে তবে আপনি কোনও কিছুতেই মনোনিবেশ করতে পারবেন না।
৩) মনোযোগ নষ্ট হয় এমন জিনিস সরিয়ে রাখুনঃ- যেই সময়টুকু আপনি আপনার কাজ করছেন অন্তত: সেই সময়ে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-পরিজন, স্মার্ট ফোন, সোশ্যাল মিডিয়া কোনও কিছুতেই সময় নষ্ট করবেন না।
৪) ভোরে ওঠার অভ্যাস করুনঃ- প্রথম প্রথম একটু অসুবিধে হলেও সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ঘুম থেকে উঠে পড়তে পারলে কাজের জন্য অনেকটা সময় পাওয়া ‌যায়। তাছাড়া ভোরে উঠলে ধৈর্যশক্তি বাড়ে, একাগ্রতাও বাড়ে।
৫) সপ্তাহের শেষে আনন্দ করুনঃ- সারা সপ্তাহ কাজ করার পর হাতে এক বা দুই দিন রাখুন আরাম এবং আনন্দ করার জন্য। এই সময় কাজ বা অন্যান্য গুরুত্বপূ্র্ণ বিষয়ের কথা ভাববেন না। ছুটি শেষে পরের দিন সকালের জন্য সবকিছু গুছিয়ে রাখুন, যাতে পরের দিন তাড়াহুড়ো না করতে হয়।  

Wednesday, April 4, 2018

ভাষা ও অঙ্ক শেখাচ্ছে রোবট

হিউম্যানয়েড রোবট এলিয়াস ও ওভোট একটু ব্যতিক্রম ধরনের। তারা এখন বাচ্চাদের স্কুলে অঙ্ক ও ভাষা শিক্ষার ক্লাস নেয়। পাইলট প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে চারটি রোবট ফিনল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের ট্যাম্পার সিটির একটি প্রাইমারি স্কুলে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ভাষা শেখানোর মেশিনকে হিউম্যানয়েড রোবট এলিয়াসে পরিণত করে চালানো হচ্ছে ভাষা শিক্ষার ক্লাস। এক ফুট উচ্চতার এ রোবটটি চালানো হয় মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে। রোবটটি ২৩টি ভাষা বুঝতে পারে। শুধু তা-ই নয়, বাচ্চাদের একঘেয়েমি দূর করতে সে গ্যাংনাম স্টাইলে নাচতেও পারে। এতে এমন একটি সফটওয়্যার আছে, যা শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন বুঝতে সাহায্য করে এবং শিখতে উৎসাহ দেয়। ক্লাস নেয়ার সময় একাধিকবার একই জিনিস আওড়াতে তাদের কোনো বিরক্তি নেই। তাই কেউ বারবার একই প্রশ্ন করলেও তাকে বিব্রত হতে হয় না। আপাতত রোবটটি শুধু ইংরেজি, ফিনিশ ও জার্মান ভাষায় কথাবার্তা বলতে পারছে। রোবটটি মানুষের দক্ষতাগুলো চিনতে পারে এবং সেই অনুযায়ী প্রশ্ন সাজিয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের সম্ভাব্য সমস্যাগুলো সম্পর্কেও রোবটটি শিক্ষকদের তথ্য দিতে পারে। অঙ্কের রোবটটির নাম ওভোট। এর উচ্চতা ১০ ইঞ্চি।
নীল রঙের প্যাঁচার মতো দেখতে এ রোবট তৈরি করেছে ফিনিশ এআই রোবটস। মোট তিনটি ওভোট আগামী এক বছরের জন্য স্কুলটিতে অঙ্ক শেখাবে। অনেক শিক্ষকই রোবটটিকে শিশুদের মনোযোগ ধরে রাখার একটি পদ্ধতি হিসেবে দেখছেন। ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা জানান, এলিয়াস রোবটটি ক্লাসরুমে ভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার একটি মাধ্যম। ক্লাসরুমে রোবটের ব্যবহার এবারই প্রথম নয়। মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোয়ও সম্প্রতি রোবটের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে।

Monday, April 2, 2018

ব্যাংকে তারল্য আসছে বাড়বে মূল্যস্ফীতি


  


আগে বাধ্যতামূলকভাবে সরকারি আমানতের ৭৫ শতাংশ রাখা হতো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে। আর ২৫ শতাংশ পেত বেসরকারি ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকের মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এটিকে এখন ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। এতেও বিপুল পরিমাণ অর্থ আসবে। ফলে তারল্যসংকট অনেকটা কাটবে বলে আশা করা হচ্ছে। এত পরিমাণ টাকা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর কাছে দেওয়ার পরও মূল্যস্ফীতি বাড়বে না বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। তবে অর্থনীতিবিদরা তার সাথে দ্বিমত হয়ে বলেছেন, এতে মূল্যস্ফীতি বাড়ার অশঙ্কা রয়েছে। ব্যাংকে তারল্যসংকটের কারণে ঋণের সুদহার দুই সংখ্যায় উঠেছে। তাই তারল্য বাড়াতে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে রাখা নগদ জমা সংরক্ষণ (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা সিআরআর) ১ শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে অর্থ প্রবাহ বাড়ার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতিও বাড়বে। এর প্রভাবে পণ্যমূল্য বেড়ে যাবে। ফলে সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি চাপ আসবে। যা নির্বাচনি বছরে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এ সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে নেওয়া হয়নি। এটা মূলত ব্যাংকগুলোকে সুবিধা দেওয়ার জন্য করা হয়েছে। তারল্যসংকট মোকাবিলা ও ঋণের সুদহার কমানোর জন্য এটি করা হলেও বাস্তবে ঋণের সুদ ব্যাংকগুলো কমাবে বলে মনে হয় না। অন্যদিকে, এ সিদ্ধান্তের কারণে বাজারে অতিরিক্ত অর্থ আসায় মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ গত তিন মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশে। যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫ দশমিক ৩২ ভাগ। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (প্রথম প্রান্তিক) গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এ অবস্থায় টাকার প্রবাহ বাড়ায় মূল্যস্ফীতি হাড় স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যাবে। ফলে বেশি সুদে ঋণ নিয়ে, বেশি দামেই পণ্য কিনতে হবে গ্রাহকদের। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তারল্যসংকট কমাতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে সুবিধা দিলেও তার দাবি অনুযায়ী ঋণের সুদহার এক সংখ্যায় সহসাই নামবে না। অর্থমন্ত্রী চেয়েছিলেন এক মাসের মধ্যেই সুদের হার এক সংখ্যায় নামিয়ে আনতে। আর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বড়ো বিনিয়োগে অর্থায়ন করছে। এটা ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী মোটেই স্বাস্থ্যকর নয় বলেও তিনি বলেন। এ বিষয়ে বিএবি সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, অতি দ্রুত সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে আসবে। তবে এক মাসের মধ্যে এটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বাস্তবসম্মত কথা বলেননি। সুদের হার কমাতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। তবে এ অর্থ ব্যাংকগুলোর তারল্যসংকট দূর করতে সহায়ক হবে বলেও তিনি বলেছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমান বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বেশকিছু দুর্বল দিক রয়েছে। এ ব্যাংকগুলো নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা রয়েছে। এ খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ প্রতিনিয়তই বাড়ছে। ঋণ দিলে তা আদায় করতে পারে না তারা। ঋণগুলো ঢাকা এবং চট্টগ্রামের কিছু মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে চলে যাচ্ছে। এখান থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে বেরিয়ে আসতে হবে।

অর্থনীতিবিদ কাজী খলিকুজ্জমান আহমেদ বলেন, ব্যাংকগুলোর আগ্রাসী বিনিয়োগ বন্ধে দুমাস আগে এডি রেশিও কমানো হয়েছিল। এখন সিআরআর কমিয়ে ব্যাংকগুলোর হাতে অতিরিক্ত তহবিল তুলে দেওয়া হচ্ছে। এতে ব্যাংকগুলো আবারও আগ্রাসী ব্যাংকিংয়ে মেতে উঠতে পারে। জানা গেছে, ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাড়ে ৬ শতাংশ নগদ জমা রাখতে (সিআরআর) হয়, তা ১ শতাংশ কমানো হয়েছে। এই এক শতাংশ পরিমাণ টাকা ব্যাংকগুলো ব্যবহার করতে পারবে। ফলে ১০ হাজার কোটি টাকার মতো ব্যাংকগুলোর হাতে চলে আসবে। এতে তারল্যসংকট কমে গেলে সুদের হারও কমে আসার কথা। আরো জানা গেছে, সরকারের এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে ডিসেম্বরের আগে জুন মাসে তার প্রভাব পর্যালোচনা করা হবে। এ সময়ে যদি আরও কিছু সংযোজন বা বিয়োজন করতে হয় তাও করা হবে।

প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে শুক্রগ্রহে!

সৌরমণ্ডলে কি পৃথিবীই একমাত্র গ্রহ, যেখানে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে? এতকাল বিজ্ঞানীরা বলে এসেছেন, সৌরজগতের বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতেই পারে। এত অজুত-নিযুত নক্ষত্রমণ্ডলীর কোথাও না কোথাও থাকতেই পারে অন্য জীবজগৎ। কিন্তু এবার জানা গেল, সম্ভবত শুক্রগ্রহেই রয়েছে অপার্থিব প্রাণ। ওই গ্রহের আকাশে যে অ্যাসিড-মেঘ দেখা যায়, সেখানেই এই প্রাণের চিহ্নের সম্ভাবনার কথা জানা গিয়েছে। ওই গবেষণায় সায় জানিয়েছে নাসাও। 
গবেষণাপত্রটি অ্যাস্ট্রোবায়োলজি নামের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সেই গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, শুক্রের মেঘ থেকে অ্যাসিড-বৃষ্টি হয়। মেঘের অন্যতম উপাদান সালফিউরিক অ্যাসিড। সেখানেই রয়েছে প্রাণ। শুক্রের মরচে রংয়ের মেঘে বিজ্ঞানীরা কালো দাগ দেখতে পেয়েছেন।ওই দাগগুলি আসলে আলো শোষণকারী প্রাণীদের চিহ্ন বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে ওই প্রাণিরা নেহাতই আদ্যপ্রাণি। অর্থাৎ আণুবীক্ষণিক প্রাণি। প্রসঙ্গত, শুক্রগ্রহে ২ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর কাছাকাছি অর্থাৎ প্রাণের পক্ষে অনুকূল পরিবেশ ছিল বলে বিজ্ঞানীদের অনুমান।