Wednesday, August 23, 2017

ত্রাণের চাল পাচারকালে আটক ২

নওগাঁর আত্রাইয়ে ১২৮ বস্তা ত্রাণের চাল পাচারকালে চালসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার ট্রলিযোগে চালগুলো পাচারের সময় আত্রাই রেলওয়ে বাইপার (দক্ষিণ) থেকে আটক করা হয়।
উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সংলগ্ন কাশিয়াবাড়ি বাজার থেকে ১২৮ বস্তা (প্রতিটিতে ৩০ কেজি করে) চাল বোঝাই ট্রলি আত্রাইয়ের দিকে আসতে থাকে। সংবাদ পেয়ে আত্রাই থানার এসআই ফিরোজ মিয়া ও এএসআই এনায়েত ফোর্সসহ অভিযান চালিয়ে চালসহ ট্রলি চালক উপজেলার সদুপুর গ্রামের ফেরদৌসের ছেলে পিন্টু (৩৫) ও হেলপার মোনাক্কার ছেলে বিপ্লবকে (১৮) আটক করেন। 
 আত্রাই থানার ওসি বলেন, চালের বস্তার গায়ে তো লেখা নেই কিসের চাল, তবে ত্রাণের চাল মনে করেই আমরা আটক করেছি। তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে কিসের চাল, কোথায় যাচ্ছিল। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোখলেছুর রহমান বলেন, ত্রাণের নয় বরং এগুলো ভিজিডির চাল। আজ ভোঁপাড়া ইউনিয়ন থেকে গ্রহিতারা এ চালগুলো নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। যেহেতু সরকারি চাল ক্রয় বিক্রি নিষিদ্ধ, তাই এটি আটক করা হয়েছে। 

না’গঞ্জে ৭ খুন: পিপির মেয়েকে বিষ খাইয়ে হত্যাচেষ্টা !

বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের মামলার নিম্ন আদালতের সরকারি আইনজীবীর (পিপি) মেয়েকে বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। তার নাম মায়েশা ওয়াজেদ প্রাপ্তি (১৬)। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে জানান সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক। প্রাপ্তির বাবা এস এম ওয়াজেদ আলী স্বপন নারায়ণগঞ্জের জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক বলেন, প্রাপ্তির পাকস্থলি ওয়াশ করা হয়েছে। তার অবস্থা এখন শঙ্কামুক্ত।
ওয়াজেদ আলী স্বপন জানান,সন্ধ্যা ৬টার দিকে কোচিং সেন্টার থেকে বের হয়ে বাসায় ফেরার পথে অজ্ঞাত পরিচয় তিন-চারজন যুবক তাকে এসে বলে- ‘তোমার বাবা খুব ভালো কাজ করেছে, তোমাকে মিষ্টি খাওয়ানো উচিত।’ কিন্তু প্রাপ্তি মিষ্টি খেতে না চাইলে তারা জোর করে তার মুখে মিষ্টি ঢুকিয়ে দেয়। এরপর তারা প্রাপ্তিকে পানি পান করালে তার বুকে জ্বালা শুরু হয়।
প্রাপ্তির বাবা বলেন, পরে খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে তাকে অসুস্থ অবস্থায় রাত সোয়া ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। তার পাকস্থলি ওয়াশ করে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয় বলে জানান তিনি। প্রাপ্তি স্থানীয় একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে এ লেভেলের ছাত্রী। 

Saturday, August 12, 2017

চাকুরীপ্র্রার্থী বেকার ভাইয়ের জন্য আর্তনাদ ! 

বিসিএস পরীক্ষার্থী আমার ভাই রাতের পুরোটা সময় মুখথুবরে বই নিয়ে পড়ে থাকে, রাত শেষে ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে যায় মাঝে মাঝে কোমরে ব্যাথা জাগে, তবুও থামেনা। পেইন কিলার খেয়ে আবার চেয়ারটেবিলে পড়তে বসে।সেই ভাই যখন কোটা বৈষম্যর বেড়াজালে নরবে চোখের জল ফেলে, তখন এটাকে আপনি কি বলবেন? দোষটা কি তার? সে মেধাবী কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না,সে ভালো ছাত্র কিন্তু প্রতিবন্ধী না? তার রেজাল্ট ভালো কিন্তু নারী না? সে অধ্যবসায়ী কিন্তু উপজাতী না? এদিকে এবার বিসিএস পরীক্ষার জন্য মোট পদ:২০২৪,মুক্তিযোদ্ধা কোটা :৩০%,মহিলা কোটা:১০%,জেলা কোটা:৫%,প্রতিবন্ধি কোটা:১%,উপজাতি কোটা:৫%,মোট কোটা:৫৬%,সাধারন :৪৪%,২০২৪ এর ৫৬% =১১৩৪,বাকি মাত্র ৮৯০ টা সিট দেশের সকল অভাগাদের জন্য! প্রতিযোগীর সংখ্যা যেখানে কোটির ঘরে।
এই কোটা প্রথা! সাধারণ চাকুরিপ্রার্থীদেরকে দয়া আর অনুকম্পার পাত্র বানিয়ে ফেলেছে। চাকুরী যদি কোটা ধারীরাই পাবে তবে আমর ভাই কলুরবলদের মত খেটে মরছে কেন? আমার বাবার ঘামঝড়ানো টাকা কেন,পড়াশোনার পেছনে অনর্থক ব্যয় হবে? আমার বাপদাদারা যুদ্ধ করেনি বা ভুয়া সার্টিফিকেট কালেক্ট করে নাই,এজন্য আমার ভাইয়ের অপরাধ কি? এজন্য সাধারণ চাকুরিপ্রার্থীকে কেন বৈষম্যের স্বীকার হতে হচ্ছে? অচিরেই এ বৈষম্যের অবসান ঘটান অথবা সব চাকুরীপ্রার্থী বেকার ভাইদেরকে খোলা মাঠে দাঁড় করিয়ে গুলি কর মেরে ফেলেন।পরিবারের বোঝা হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে গুলি খেয়ে মরা ঢেরগুণ ভালো। অন্তত: মায়ের কান্নাজরানো কন্ঠে শুনতে হবে না; খোকা এবার কিছু একটা কর!! অন্তত বাবার ঘামঝড়ানো টাকা মাস শেষে বেহায়ার মত হাত পেতে নিতে হবে না।

Sunday, August 6, 2017

হজ ব্যবস্থাপনায় বিপর্যয়ের নেপথ্যে 

 
চলতি বছর দেশের হজযাত্রীদের হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ২৪ জুন। হজ পালন করতে সৌদি আরবে যাবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে বাংলাদেশ বিমান বহন করবে মোট ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন যাত্রী। বাকিরা যাবেন সৌদিয়া এয়ারলাইনসে। শেষ ফ্লাইট ২৮ আগস্ট। এর মধ্যে গত রোববার পর্যন্ত ৫৭ হাজার ৮৭৯ জনের ভিসা পাওয়া গেছে। ৬৫ হাজার ১২ জনের ভিসার আবেদন সৌদি দূতাবাসে জমা রয়েছে। অবশিষ্ট ৭ হাজার ১৩৩ জনের ভিসার আবেদন এখনো জমাই পড়েনি। মোট হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ইতোমধ্যেই সৌদি আরব পৌঁছেছেন মাত্র ৩৯ হাজার ২৪৮ জন। অর্থাৎ এখনো হজে যেতে বাকি ৮৭ হাজার ৯৫০ জন।
অথচ এরই মধ্যে নানা জটিলতায় যাত্রী সংকটের কারণে বাতিল হয়েছে বিমান ও সৌদিয়া এয়ারলাইনসের ২০টি ফ্লাইট। হাতে আছে আর মাত্র ২১ দিন। এর মধ্যে ৭০ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রীর ভিসা পেতে হবে। দুই এয়ারলাইনসকে বহন করতে হবে ৮৭ হাজার ৯৫০ হজযাত্রীকে। কিন্তু এত অল্প সময়ে ভিসা সংগ্রহ ও অবশিষ্ট যাত্রীদের বহন–এই দুই এয়ারলাইনস কতটা পেরে উঠবে, শঙ্কা দেখা দিয়েছে তা নিয়ে। ফলে এ বছর কমপক্ষে ৩৯ হাজার হজযাত্রীর শেষ পর্যন্ত হজে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে ভিসা জটিলতায় রয়েছেন ৩১ হাজার ও বাকি ৮ হাজার যাত্রী রয়েছেন ফ্লাইট শঙ্কায়।
এর আগে গত বছরও দেশের হজ ব্যবস্থাপনায় এমন বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছিল। হজযাত্রায় এমন বিশৃঙ্খলা ছিল গত বছরও। তখনো যাত্রী স্বল্পতায় প্রথম ১২ দিনে ১০টি হজ ফ্লাইট বাতিল হয়। হজে যেতে ইচ্ছুক ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ জনের মধ্যে ভিসা হয় মাত্র ৬৫ হাজার জনের। শেষ পর্যন্ত বিমান ও সৌদি এয়ারলাইনস যাত্রীবহনে সক্ষম না হওয়ায় ৪০ হাজার জন হজে যেতে পারেননি।
অর্থাৎ প্রতি বছরের মতো এবারও হজযাত্রা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা বিশৃঙ্খলা। গত বছরের মতো এবারও হজ পালনে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, কোটা বাণিজ্য, ভিসা, সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া, খাওয়া, জিয়ারত, বিমান ভাড়াসহ প্রতিটি পদে পদেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও ধর্ম মন্ত্রণালয় হজ নিয়ে বাণিজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি করলেও জটিলতা কাটছে না। মন্ত্রণালয় ও হজ অফিসের একেক সময় একেক সিন্ধান্তে এবারও চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হজযাত্রীদের। অব্যবস্থাপনার জন্য পরস্পরকে দুষছে বিমান কর্তৃপক্ষ, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বা হাব। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও দেখা দিয়েছে সমন্বয়হীনতা। এক অফিসের নির্দেশনা অন্য অফিস মানছে না। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, হজ ফ্লাইটের শিডিউল করা অনেক হজযাত্রী এখনো ভিসা পাননি। নির্ধারিত ফ্লাইটে যেতে পারছেন না তারা। লাগেজ নিয়ে হজক্যাম্পে এসে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন নিবন্ধিত হজযাত্রীরা।
এ নিয়ে স্বয়ং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ভিসা জটিলতা ও মোয়াল্লেম ফিসহ বিভিন্ন কারণে হজযাত্রীরা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। ফলে বাংলাদেশ বিমানে ১৭৭টি ফ্লাইটের মধ্যে ৯টি হজ ফ্লাইট এরই মধ্যে বাতিল হয়েছে। ফ্লাইট বাতিল হওয়ার কারণে পরের দিকে বিমানে যাত্রী পরিবহনের চাপ বাড়বে। এ ছাড়া ৮৫ হাজার যাত্রীর পাসপোর্ট এখনো হাতে পায়নি হজ অফিস। এসব সমস্যা বিমানের নয়। ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সিগুলোর জটিলতায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। তিনি প্রায় ৪০ হাজার হজযাত্রীর সৌদি আরব-যাত্রা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। তবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল জলিল বলেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে আলোচনা করে সংকট সমাধানের চেষ্টা করছি। আশা করছি শেষ পর্যন্ত সব যাত্রীকেই হজে পাঠাতে পারব। তবে আমরা আগে জানলে দুই হাজার রিয়ালের বিষয়টি প্যাকেজে যুক্ত করতাম। এ ধরনের কোনো চিঠি তখন মন্ত্রণালয়ে আসেনি।’ একইভাবে শেষ পর্যন্ত সব যাত্রীই হজে যেতে পারবেন বলে আশা করছেন হাব মহাসচিব শাহাদত হোসেন তসলিম। তিনি বলেন, প্রতি বছরই হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়। ফ্লাইট বাতিল হয়। তবে এ বছর যে সমস্যা দেখা দিচ্ছে সেটি মূলত দুটি কারণে–আকস্মিক ২০০ রিয়াল যুক্ত করা ও সৌদি আরবের ই-ভিসা চালু করা। তবে সেগুলোরও সমাধান হচ্ছে।
৪০ হাজার হজযাত্রীর হজে যাওয়া নিয়ে যে সংশয়, তা সঠিক নয় বলে মত দিয়েছেন এই হজ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, যে ফ্লাইটগুলো এখন পর্যন্ত বাতিল হয়েছে, সেখানে যাত্রী ধারণক্ষমতা ছিল মাত্র আট হাজার জন। সেটিও সমস্যা না। কারণ বিমান কর্তৃপক্ষ আরো ২০টি ফ্লাইটের অনুমতি পাচ্ছে। সেটি হলে সমস্যা থাকবে না।
এ বছর হজযাত্রা নিয়ে এমন বিশৃঙ্খলার নেপথ্যে অবশ্য সংশ্লিষ্টরা দুটি মূল কারণের কথা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধর্ম মন্ত্রণালয় ও বিমান এয়ারলাইনসের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার মতে, সরকারের দুই প্রতিষ্ঠান ধর্ম মন্ত্রণালয় ও বিমান এবং হাবের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট ইচ্ছে করেই হজ অব্যবস্থাপনা তৈরি করেছে। তারা চাইছে নানা জটিলতা তৈরি করে মূলত বিমান এয়ারলাইনসের হজ ফ্লাইট বাতিল করতে। এর ফলে শেষ দিকে হজযাত্রীদের থেকে টিকিটপ্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করবে। সে হিসেবে হাতিয়ে নেবে অতিরিক্ত ৫০-৬০ কোটি টাকা। এ ছাড়া বাতিল হওয়া হজ ফ্লাইটগুলো পরিচালনার মাধ্যমে সৌদি এয়ারলাইনস একচেটিয়াভাবে সব ভাড়া পাবে। সে হিসেবে বিমানের লোকসান গুনতে হবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। এসব কর্মকর্তা এমনও বলেন, এসব অর্থ এই সিন্ডিকেটের মধ্যে ভাগ হয়। গত বছরও এই সিন্ডিকেট এভাবে বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়।
কেন এমন হচ্ছে-এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত এই সিন্ডিকেটই এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এর মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের গাফিলতিই মূল কারণ। কারণ ২০১৫ ও ২০১৬ সালে যারা হজ করেছেন, তাদের জন্য অতিরিক্ত ফি হিসেবে দুই হাজার রিয়াল (৪৪ হাজার টাকা) দিতে হবে, তা ১০ মাস আগেই সৌদি কর্তৃপক্ষ ধর্ম মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সেই ফি হজ প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে শেষ মুহূর্তে অনেক হজযাত্রী এ অর্থ পরিশোধে অনীহা দেখানোয় ভিসা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক হজ এজেন্সি এখনো হজযাত্রীদের জন্য সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া সম্পন্ন করেনি। যদিও নির্দেশনা রয়েছে, সৌদি আরবে হাজিরা যে বাড়িতে থাকবেন, সেই বাড়ি বা হোটেলের নাম, তাসরিয়া নম্বরসংবলিত স্টিকার তাদের পাসপোর্টের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। হজ এজেন্সিগুলো শেষ সময়ে কম টাকায় বাড়ি ভাড়া সুবিধা নিতে দেরিতে বাড়ি ভাড়া করছেন বলে ভিসা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া সৌদি আরব এ বছর ই-হজ ব্যবস্থাপনা চালু করায় সৌদি আরব ও বাংলাদেশে দেখা দেওয়া কারিগরি সমস্যার কারণেও ভিসা দিতে সমস্যা হচ্ছে।
হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সৌদি আরবে মোয়াল্লেমদের ফি বেড়ে গেছে। বিগত বছরগুলোতে ৭২০ রিয়ালে মধ্যে মোয়াল্লেম ঠিক করলেও এ বছর হজ এজেন্সিগুলোর কাছে সৌদি আরবে মোয়াল্লেমরা ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ রিয়াল বাড়তি দাবি করছেন। এ বাড়তি ব্যয়ের বোঝা কমাতে কম টাকায় বাড়ি ভাড়া নেওয়া প্রবণতা বেড়েছে হজ এজেন্সিগুলোর।
এ প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যমান ও সিএ) আবুল হাসনাত জিয়াউল হক বলেন, হজযাত্রী পরিবহনে এয়ারলাইনসগুলোর প্রস্তুতি যথাযথ রয়েছে। কিন্তু যাত্রী না থাকায় ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। হজ এজেন্সি, ধর্ম মন্ত্রণালয় ভিসাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধান করলে ফ্লাইট নিয়ে জটিলতা থাকবে না।
এই অব্যবস্থাপনার খেসারত হিসেবে বিমান কর্তৃপক্ষকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে বলে জানিয়েছেন বিমানের কর্মকর্তারা। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর তাদের হজযাত্রী পরিবহনের কথা ৬৩ হাজার ৬০০ জন। এজন্য তারা ৩টি এয়ারক্রাফট ভাড়া নিয়েছে। কিন্তু রোববার পর্যন্ত তাদের ১৯টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এভাবে চললে আরো ১০টি ফ্লাইট বাতিল হতে পারে। সে হিসেবে শেষ পর্যন্ত কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ হাজার হজযাত্রী সাউদিয়া এয়ারলাইনসকে দিয়ে পরিবহন করাতে হবে। তাহলে বিমানকে কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে। কারণ স্লটের অভাবে যদি হজযাত্রী পরিবহন করতে না পারে, তাহলে একদিকে বসিয়ে বসিয়ে লিজ নেওয়া উড়োজাহাজের ভাড়া গুনতে হবে, অপরদিকে হজযাত্রীর পুরো বিমান ভাড়া থেকেও বঞ্চিত হবে। একইভাবে শেষ দিকে যাত্রীপ্রতি বিমান ভাড়া প্রায় ১০ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত আদায়েরও পাঁয়তারা করছে এই চক্র। 
লেখক: প্রতীক ইজাজ 

মেট্রোরেলের কোচ কেনা হচ্ছে সোয়া ৪ হাজার কোটিতে

জাপানি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৪ হাজার ২৫৭ কোটি টাকায় কেনা হচ্ছে স্বপ্নের মেট্রোরেলের কোচ ও রেল ট্রাক। আর এসব কোচ শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হচ্ছে। রাজধানীতে রেলকোচ ও ট্রাক সংগ্রহের বিষয়ে জাপানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। এই অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, হলি আর্টিজানে গত বছরের হামলার ঘটনায় প্রায় ৮ মাস পিছিয়েছে মেট্রোরেলের কার্যক্রম। তবে এখন ফুল সুইং (পুরোদমে) কাজ চলছে। এতে পিছিয়ে যাওয়া ওই সময় কভার করে নেওয়া যাবে। 
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৫ সেট ট্রেন উত্তরা-আগারগাঁও রুটে চালানো শুরু হবে। আর ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি ১৯ সেট ট্রেন ও ডিপোর যন্ত্রাংশ সরবরাহ করা হবে।  প্রকল্প সূত্র জানায়, উত্তরায় তৃতীয় ফেজে মেট্রোরেলের ডিপো নির্মাণ ও ডিপো এলাকার বিভিন্ন অবকাঠামোর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে।  প্রায় ২০ কিলোমিটারের মেট্রোরেল উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে শুরু হয়ে পল্লবী, ফার্মগেট, দোয়েল চত্বর, প্রেসক্লাব হয়ে মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে গিয়ে শেষ হবে। এ রেলপথে স্টেশন থাকবে ১৬টি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের মানুষের চাহিদা ও ব্যবহার উপযোগী হবে মেট্রোরেলের কোচগুলো। ৪ সেকেন্ডের মধ্যে মেট্রোরেলের গতি ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারবে।  সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে প্রথম ধাপে উত্তরা থেকে আগারগাঁও রুটে চলা শুরু করবে কোচগুলো। প্রতিটি কোচে যাত্রী ধরবে ১ হাজার ৭৩৮ জন। সিট থাকবে লম্বালম্বি আকারে। ট্রেনের বডি হবে স্টেইনলেস স্টিলের।
কর্মকর্তারা জানান, মেট্রোরেলের যে কোচগুলো সংগ্রহ করা হচ্ছে, সেগুলো খুবই আধুনিক ও উচ্চ গুণগত মানসম্মত স্টেইনলেস স্টিলে তৈরি। প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য হবে ১৮০ মিটার। পুরো ট্রেনে থাকবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। কোচের আসনগুলো লম্বালম্বি আকারে সাজানো থাকবে। প্রতিটি ট্রেনে থাকবে দু’টি হুইল চেয়ারও। আর স্মার্টকার্ড টিকিটিং পদ্ধতির মাধ্যমে যাত্রীরা ওঠা-নামা করবেন মেট্রোরেলে। জাপানি মানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হবে। 
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এন এম ছিদ্দিক জানান, মেট্রোরেলের উভয় পাশে ৪টি করে দরজা থাকবে। কোচগুলো দেশের মানুষ যেন স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করতে পারেন, সেজন্য আলাদাভাবে তৈরি করা হচ্ছে। একটি স্টেশন থেকে ছাড়ার ৩ থেকে ৪ সেকেন্ডের মধ্যে ১০০ কিলোমিটারে উঠবে মেট্রোরেলের গতি। প্রকল্প অনুসারে, ৮টি প্যাকেজে ভাগ করে চলছে মেট্রোরেল বাস্তবায়নের কাজ। এর মধ্যে প্যাকেজ ৩ ও ৪ এর কাজ শুরু করা হয় গত ০২ আগস্ট। ওই প্যাকেজের আওতায় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। 
উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত এ রুটে নির্মিত হবে ১২ কিলোমিটার উড়ালপথ। এই উড়ালপথেই মেট্রোরেলের লাইন নির্মাণ করা হবে। আর স্টেশনগুলোও হবে উড়ালপথেই। ৮ নম্বর প্যাকেজে হবে রেলকোচ ও ট্রাক পরিচালনা রক্ষণাবেক্ষণের কাজ। যার চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে জাপানি কোম্পানির সঙ্গে। এর সময়সীমা ৫১ মাস। কর্মকর্তারা বলছেন, এ সময়ের মধ্যেই রোলিং স্টক (বগি) ও ট্রেন সিমুলেটর এবং বগি পরিচালনা ও সংরক্ষণে ডিপোর যন্ত্রপাতি ও খুচরা যন্ত্রাংশ কেনা হবে। রোলিং স্টক প্রকৌশলী, পরিচালনা ও সংরক্ষণের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কমচারীদের প্রশিক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ সার্পোট সার্ভিসও চুক্তির অর্ন্তভুক্ত হবে। 

Saturday, August 5, 2017



গুগল এ্যাডসেন্স কি? গুগল এ্যাডসেন্স সার্চ ইঞ্জিন গুগলের একটি এ্যাডভার্টাইজিং প্রোগ্রাম। এ্যাডসেন্সের মাধ্যমে উপার্জনের জন্য নিজস্ব একটি ওয়েব সাইট/ব্লগিং সাইট থাকতে হবে। ফ্রি ওয়েব সাইটের মাধ্যমেও এ্যাডসেন্স দিয়ে উপার্জন করা সম্ভব।
এ্যাডসেন্সে আয়ের পরিমানঃ
এটা নির্ভর করে আপনার ব্লগিং পরিকল্পনা, এ্যাডসেন্সে দক্ষতা, এসইও/অনলাইন মার্কেটিং এ আপনি কতটা দক্ষ ইত্যাদি বিষয়ের উপর। তবে গুগল এ্যাডসেন্সে আয় হতে পারে মাসে ২০০, ৫০০, ১০০০ ডলার বা তদূর্ধে।
নিচের ভিডিওতে দেখুন- কিভাবে সহজেই এ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে ঘরে বসেই উপার্জন করা যায়গুগল এ্যাডসেন্সে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য কি কি শিখতে হবে?
কম্পিউরের ব্যাসিক বিষয়গুলো জানতে হবে। অতঃপর ধারাবাহিকভাবে শিখতে হবে
১. গুগল এ্যাডসেন্স ও ব্লগিং (নিয়মাবলীর জন্য)
২. ওয়েব সাইট পোষ্টিং/মেইনটেনেন্সের জন্য শিখতে হবে ওয়েব ডিজাইন ও ওয়ার্ডপ্রেস।
৩. ব্লগ পোষ্টিং এর জন্য ইমেজ এডিটিং প্রয়োজন, এজন্য শিখতে হবে গ্রাফিক্স ডিজাইন।
৪. ওয়েবসাইটে ভিজিটর বৃদ্ধির জন্য শিখতে হবে SEO ও অনলাইন মার্কেটিং (ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি)
>> কিভাবে ঘরে বসেই শিখতে পারবেন?
উপরোক্ত প্রেক্ষাপটে গুগল এ্যাডসেন্স ক্যারিয়ার উপযোগী ৬টি বিশেষ ভিডিও লার্নিং প্যাকেজ নিয়ে এসেছে আল-হেরা মাল্টিমিডিয়া। ভিডিও টিউটোরিয়ালগুলোর মাধ্যমে ঘরে বসেই হতে পারেন দক্ষ এ্যাডসেন্স প্রফেশনাল। এছাড়া, টিউটোরিয়ালগুলো ফলো করে অনলাইন আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসেও আপনি কাজ করতে সক্ষম হবেন।
একটি ভিডিও ডেমো টিউটোরিয়াল দেখুন:
 ফেসবুক মার্কেটিং টিউটোরিয়াল ডেমো
 
>> টিউটোরিয়ালগুলোর আরও বিস্তারিত রিভিউ, ডেমো ও ভিডিও ট্রেইলার দেখতে এই লিংকে ক্লিক করুন
 http://tinyium.com/2mEA

ডোনেটর গার্লসরা মাসে আয় করছেন ৭০ হাজার টাকা! 

ডিম্বাণু ডোনেট করছেন এই তরুণীরা

পরিচালক আয়ুষ্মান খুরানার ‘ভিকি ডোনর’ মুক্তির পর ভুরু কুঁচকে গিয়েছিল সমাজ সচেতনদের। ছবিতে স্পার্ম দেয়ার দৃশ্য দেখে অনেকেই নাক সিঁটকেছিলেন। কিন্তু পর্দার সেই ভিকির মতোই এবার বাস্তবে বন্ধ্যাত্ব মোকাবেলায় পথ দেখাচ্ছে ডোনেটর গার্লস নামে খ্যাত তরুণীরা। বন্ধ্যাত্বের কারণে যেসব দম্পতি সন্তানসুখ থেকে বঞ্চিত হন, তাদের জন্যই নিজেদের ডিম্বাণু ডোনেট করছেন বহু যুবতী। বিভিন্ন ফার্টিলিটি ক্লিনিকে গিয়ে নিজেদের ডিম্বাণু ডোনেট করে আসছেন তারা। প্রতিবার ডিম্বাণু দেয়ার জন্য পাচ্ছেন ২০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা। তবে টাকার অংকই শুধু কারণ না বলে জানিয়েছেন ডোনেটর তরুণীরা। নিঃসন্তান দম্পতিদের সন্তান লাভে সাহায্য করাই তাদের উদ্দেশ্য।
ডোনেশন সাইটে নাম নথিভুক্ত করার পর নির্দিষ্ট ক্লিনিক থেকে যোগাযোগ করা হয় ডোনেটরের সঙ্গে। গাইনোকোলজিস্ট খতিয়ে দেখেন একজন ডোনেটরের বয়স, উচ্চতা, ব্লাড গ্রুপ ও পরিবারে কোনও অসুখ-বিসুখ আছে কিনা। ডিম্বাণু ডোনেশনের জন্য ওই যুবতী শারীরিকভাবে কতটা সক্ষম, কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তা দেখে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে মনোবিদের সঙ্গে পরামর্শও চলতে থাকে। শরীর ও মন পুরোপুরি ডোনেশনের উপযুক্ত মনে হলে, ডাক্তার হরমোনাল ইনজেকশন দেন। যাতে বেশি সংখ্যায় ডিম্বাণু উৎপাদন হয়।
অনেকসময় এই ইনজেকশনের ফলেই বমি, মাথাঘোরা, মাথা যন্ত্রণা, খিটখিটে ভাব বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। পাশাপাশি  ডিম্বাণু ডোনেশনের ক্ষেত্রেও গায়ের রংয়ের কারণে টাকার অঙ্কে হেরফের লক্ষ্য করা যায়। বিয়ের বাজারের মত ডিম্বাণু ডোনেশনের ক্ষেত্রেও ডোনেটরের গায়ের রঙের উপর বাজারদর ওঠানামা করে বলেও জানা যায়।

Friday, August 4, 2017

সমুদ্র অর্থনীতিতে বাংলাদেশ  

বিংশ শতাব্দীজুড়ে পরিবেশগত নানা আন্দোলন ও সম্মেলন আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে একের পর এক পরিবেশবান্ধব মডেল। এসব মডেলের মধ্যে গ্রিন ইকোনমি মডেল বা সবুজ অর্থনীতি মডেল ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। একবিংশ শতাব্দীতে এসে প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল এই মডেলের অধিকতর সম্প্রসারণের। গ্রিন ইকোনমি মডেলের পরবর্তী ধাপ তথা সম্প্রসারণই ব্লু-ইকোনমি নামে পরিচিত, যা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার একটি কার্যকর বিকল্প হিসেবে ইতোমধ্যেই পৃথিবীজুড়ে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছে।
১৯৯৪ সালে অধ্যাপক গুন্টার পাউলি ভবিষ্যতের অর্থনীতির রূপরেখা প্রণয়নের জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক আমন্ত্রিত হন। বিস্তারিত আলোচনা, গবেষণা আর নিজের অধীত জ্ঞানের মিশ্রণ ঘটিয়ে পাউলি একটি টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব মডেল হিসেবে ব্লু-ইকোনমির ধারণা দেন। গত দুই দশকের নানা পরিমার্জন-পরিবর্ধনের মধ্য দিয়ে ব্লুু ইকোনমি মডেল আজ একটি প্রতিষ্ঠিত ধারণা। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমা নির্ধারণ সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির পর বাংলাদেশের কাছে বর্তমানে ব্লুু ইকোনমির বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। এ অর্থনীতিকে সমুদ্র অর্থনীতি ও বলা হয়। তার উপাদানগুলো হচ্ছে জাহাজে বাহিত বা সমুদ্র-বাহিত বাণিজ্য, সাগর তলদেশে বিদ্যমান তেল-গ্যাস, বন্দর, খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান, উপকূলীয় পর্যটন শিল্প, নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন ।
সমুদ্র ব্যবহার করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে বাংলাদেশের রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। সাগর থেকে প্রাপ্ত বায়ু, তরঙ্গ ঢেউ, জোয়ার-ভাটা, জৈব-তাপীয় পরিবর্তন এবং লবণাক্তর মাত্রা ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যাপক পরিমাণে নবায়নযোগ্য শক্তির জোগান পাওয়া সম্ভব। প্রতিবছর পৃথিবীতে সমুদ্রবর্তী বায়ু ব্যবহারের সক্ষমতা ৪০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ববাণিজ্যের ৮০ ভাগ সম্পাদিত হয় সমুদ্রপথে। বাংলাদেশকে যদি চীন বা তার মতো বৃহৎ অর্থনীতি থেকে উপকৃত হতে হয়, তাহলে আমাদের চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর আধুনিকায়ন করে এগুলোকে গমন-পথ হিসেবে ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।
বিশ্বের ৩৫ কোটি মানুষের জীবিকা সরাসরি সমুদ্রের ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের মৎস্য উৎপাদনের শতকরা ২০ ভাগ জোগান আসে সমুদ্র থেকে। বিশ্বের মোট মৎস্য উৎপাদনের ১৬ ভাগের অবদান খোদ বঙ্গোপসাগরের। সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এ উৎপাদন আরো বহু গুণে বৃদ্ধি করা সম্ভব। কেবল সমুদ্র অর্থনীতির সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাংলাদেশে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখেই যথেষ্ট আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধন করা যেতে পারে। পরিবেশ দূষণ রোধের বিষয়কে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে ব্লুু-ইকোনমি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অনবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার হ্রাস ও জাতীয় আয় বৃদ্ধিকে গুরুত্বারোপ করে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৫৪ লাখ লোক সরাসরি এ অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত, যাদের বার্ষিক মোট আয় প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ইউরো। সামুদ্রিক সম্পদকে কাজে লাগানোর জন্য বাংলাদেশের বিনিয়োগ ব্যুরো ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সেমিনারের আয়োজন করে। সেখানে এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশের অনুসৃত কৌশল ও বিশেষজ্ঞগণের অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এখন বাংলাদেশ সরকারকেই তার ভূকৌশলগত সুবিধার ভিত্তিতে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।
বঙ্গোপসাগরে রয়েছে ৪৭৫ প্রজাতির মাছ। প্রতি বছর সেখান থেকে ৬৬ লাখ টন মৎস্য আহরণ করা যেতে পারে; কিন্তু বাস্তবে আমরা সেখান থেকে খুব কমই আহরণ করছি। আমাদের মোট দেশজ উৎপাদনে মৎস্য খাতের অবদান সাড়ে চার ভাগেরও কম। অথচ সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা তা অনেকাংশে বাড়িয়ে ফেলতে পারি। এ জন্য আমাদের আধুনিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মাছ ধরার কৌশলে ও পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে।
মৎস্য সম্পদ ছাড়া ও আমাদের সমুদ্রের তলদেশে রয়েছে বহু খনিজ সম্পদ। খনিজ সম্পদগুলোর মধ্যে লবণের কথা বললে আমাদের উপকূলে রয়েছে ৩০০ লবণ শোধনাগার যেগুলো বিগত সাত বছর যাবত বছরে ৩.৫ লাখ টন করে লবণ উৎপাদন করছে। যা বাজারের চাহিদার তুলনায় খুব একটা যথেষ্ট নয়। লবণ শিল্পের দিকে একটু মনোযোগ দিলেই লবণ শিল্পকে একটি রফতানিমুখী লাভজনক শিল্পে পরিণত করা সম্ভব।
এছাড়াও বাংলাদেশ সমুদ্র থেকে যে সকল সম্পদ পেতে পারে তাহলো বিভিন্ন খনিজ পদার্থ যেমন—গ্যাস, তেল, কপার, ম্যাগনেসিয়াম, নিকেলসহ অনেক মূল্যবান ধাতু যেমন—কোবাল্ট ইত্যাদি। তাছাড়া আমরা সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগিয়ে জাহাজ নির্মাণ ও ভাঙা এবং ওষুধ শিল্পেও আরো উপকৃত হতে পারি। ব্লু-ইকোনমির প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমুদ্রবিজ্ঞান বিষয় চালু ও সেখানে পর্যাপ্ত আসন সংখ্যার ব্যবস্থা করতে হবে। সামুদ্রিক সম্পদকে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করে অর্থনৈতিক বিকাশ সাধনের জন্য আমাদের আগে সুনির্দিষ্ট খাতগুলো যেমন—অ্যাকুয়াকালচার, পর্যটন, মেরিন বায়োটেকনোলজি, শক্তি (তেল-গ্যাস), সমুদ্রতলে খনি-খনন ইত্যাদিকে চিহ্নিত করতে হবে।
সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধের অবসানের পর আমরা বাংলাদেশের আয়তনের ৮০ শতাংশের মতো বিশাল সমুদ্র এলাকা লাভ করি, যা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য খুবই গৌরবের ও আনন্দের; কিন্তু এ সুবিশাল সম্পদকে যদি আমরা সঠিকভাবে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে না পারি, তাহলে আমাদের এ অর্জনের কোনো মূল্য থাকবে না।
বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ৭০ শতাংশ আসে সমুদ্রে মাছ আহরণ, সামুদ্রিক খাদ্য ও বাণিজ্যিক সমুদ্র পরিবহন হতে। প্রায় তিন কোটি লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এসব কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আর বিশ্বব্যাংক বলছে, মাছ খাত সংশ্লিষ্ট পেশায় বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ নিয়োজিত আছে। এর মধ্যে কেবল সামুদ্রিক মাছ আহরণে নিয়োজিত আছে ৫০ লাখ মানুষ। এর পরও সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের অনুপস্থিতি, দক্ষ মানব সম্পদের অভাব, স্টেক হোল্ডারদের মাঝে সমন্বয়হীনতা, পর্যাপ্ত অবকাঠামোর অভাব এবং সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সামর্থ্যরে অভাবে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ বাড়ছে না বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক ও অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।
সমুদ্রে মাছ আহরণের পরিমাণ বাড়াতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপনের জন্য প্রস্তাবটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একনেকের অনুমোদন পেলে ২০২২ সালের মধ্যে ‘টেকসই উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে মৎস্য অধিদফতর। মূলত উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য আহরণের পরিমাণ বাড়ানোর লক্ষ্যে সামনে রেখে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তাছাড়া দারিদ্র্যবিমোচন এবং পরিবেশের ভারসাম্যও প্রকল্পটির অন্যতম উদ্দেশ্য। এছাড়া প্রকল্পটির মাধ্যমে উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য আহরণের ব্যবস্থাপনার উন্নতি করা হবে। মৎস্য চাষ ও আহরণে নিয়োজিত জনশক্তির জীবনমান উন্নয়নেও গুরুত্ব দেওয়া হবে।
২০ কোটি ডলারের মধ্যে সুশাসন ও টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে প্রকল্পটির আওতায় সাত কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করা হবে। এর মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো, সরকারি ব্যবস্থাপনার পূর্ণাঙ্গ সংস্কার, ২০০৮ সালে প্রণীত মৎস্যনীতির সংস্কার এবং উপকূলীয় মৎস্য ব্যবস্থাপনায় মৎস্য অধিদফতরের সক্ষমতা বাড়ানো হবে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় মৎস্য আহরণে সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন, জীবনযাত্রার মানের উন্নতি ও কাক্সিক্ষত পুষ্টি নিশ্চিত করতে ব্যয় করা হবে ৫ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার। মাছ আহরণে নিয়োজিত জনশক্তির দক্ষতা বাড়ানো হবে। তাছাড়া অবকাঠামো উন্নয়ন ও উপকূলীয় জলবায়ু রক্ষায়ও অর্থ বরাদ্দ থাকবে। শৃঙ্খলা রক্ষায় মৎস্য আহরণে নিয়োজিত জনশক্তিকে পরিচয়পত্র দেওয়া হবে প্রকল্পের আওতায়। মাছ আহরণে নিয়ন্ত্রণ আনতে এসব পরিচয়পত্রের আলোকে দেওয়া হবে খাদ্য সহায়তা (সূত্র বিশ্বব্যাংক)।
টেকসই উন্নয়নের জন্য টেকসই ব্লু-ইকোনমি ও প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নয় যদি না সমুদ্রাঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সমুদ্রের পরিবেশ এবং জীব ও অজীব সম্পদের সংরক্ষণ এবং সমুদ্রকে দূষণের হাত থেকে বাঁচানো যায়। জলদস্যুতা, মাদক, অস্ত্র, মানব পাচার ইত্যাদি আমাদের সমুদ্রাঞ্চলের খুব স্বাভাবিক ঘটনা। এছাড়া উপকূলীয় শিল্প কলকারখানাগুলোর বর্জ্য নিঃসরণ, জাহাজ ভাঙা শিল্প ও বৈষয়িক জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি সাগরের স্বাভাবিক পরিবেশের জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি তৈরি করছে। এসব সমস্যাগুলোকে যথাযথভাবে বিবেচনায় নিয়ে সামুদ্রিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের নিমিত্তে একটি কার্যকর কৌশল অবলম্বন করা বাংলাদেশ সরকারের জন্য সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লেখক: মামুনুর রশীদ
সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন একুশে পুরষ্কার, বাংলা একাডেমী পুরষ্কার। এশিয়ার নোবেলখ্যাত ‘র‍্যামন ম্যাগসেসে’ পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন ২০০৪ সালে। শুধু শিক্ষাবিস্তার নয়, সমাজ সংস্কারেও ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। ‘বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন’ করেছেন তিনি, পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অনেকদিন ধরেই। ঢাকায় যখন ডেঙ্গু মহামারী আকার নিয়েছে, তিনি তখন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে নেমেছেন রাস্তায়, মানুষকে সচেতন করেছেন, প্রচার করেছেন ডেঙ্গু মোকাবেলায় করণীয়। স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করেছেন, নিজের হাতে রাস্তাঘাটের ময়লা পরিষ্কার করেছেন, ডেঙ্গুর আবাসস্থল খুঁজে ধ্বংস করেছেন সবাইকে নিয়ে।
যেখানেই গিয়েছেন, নিজের অসামান্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন দারুণভাবে। টেলিভিশনে ১৯৬৪ সালে তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন মুস্তফা মনোয়ার, কবি জসিমউদ্দিনের সাক্ষাৎকার নিয়ে শুরু হয়েছিল টিভি পর্দায় তাঁর পথচলা। স্বাধীনতার পরে ‘স্বপ্তবর্ণ’ নামের অনুষ্ঠান করে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। ষাটের দশকে সাহত্য আন্দোলনে রেখেছিলেন ভূমিকা, তিনি তখন সবে চাকুরীজীবনে প্রবেশ করেছেন। ঢাকা কলেজে যখন শিক্ষকতা করতেন, তাঁর ক্লাস উপচে পড়তো ছাত্রদের ভীড়ে। অন্যান্য ক্লাস বা অন্যবর্ষের ছেলেরাও ভীড় জমাতো তাঁর কথা শোনার জন্যে। স্মিত হাসির এই মানুষটার বক্তৃতা শোনার জন্যে উপচে পড়া ভীড় হয় এখনও।
১৯৩৯ সালের আজকের এই দিনে জন্মেছিলেন বাংলাদেশের এই সূর্যসন্তান, খুব অল্প কিছু মানুষের মধ্যে একজন তিনি, যাকে নিয়ে দলমত নির্বিশেষে আমরা গর্ব করতে পারি। শিক্ষার আলোয় নিরক্ষরতা দূরীকরণের কাজ করে চলেছেন যিনি নিরলসভাবে, স্বার্থহীনভাবে। শুভ জন্মদিন জ্ঞানের ফেরিওয়ালা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

চালকবিহীন বাস!

এস্তোনিয়ার রাজধানী তালিনে গত তিনদিন ধরে দুটো চালকবিহীন বাস চলছে। সরকারি সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান ইআরআর জানিয়েছে, অন্য কোনো যানবাহন বা পথচারীর সাথে কোনো দুর্ঘটনা হয়নি।
তবে বেশ কবার শেষ মুহূর্তে দুর্ঘটনা এড়ানো গেছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, সোমবার সাইরেন এবং ফ্লাশ লাইটসহ একটি পুলিশ কারকে সাইড দেয়নি একটি বাস। একজন ফটোগ্রাফার দেখেছেন, মানুষ পারাপারের জায়গায় লাল বাতি ভেঙে চলে যায় একটি বাস। তখন পথচারীরা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে ছিলেন। 
ইআরআর বলছে, যদিও চালক নেই, তবুও ট্রাফিক আইনের অনুসরণ নিশ্চিত করতে বাসে একজনকে থাকতেই হবে।বাসগুলোর দাম পড়েছে এক লাখ ইউরো। বেসরকারি খাত থেকে এই বিনিয়োগ এসেছে ।
আগামী ছয় মাসের জন্য এস্তোনিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সভাপতি। এই গৌরব উদযাপনের জন্যই তালিনে চালকবিহীন এই বাস চালু করা হয়েছে। ছয় মাস পরও এই বাস সার্ভিস চালু থাকবে কিনা তা জানা যায়নি।

Thursday, August 3, 2017

হজ থেকে সৌদি আরবের আয় কত ?

বিশ্বের লাখ লাখ মুসলমান প্রতিবছর হজ করতে যান সৌদি আরবে। এসময় দেশটির আর্থিক লেনদেনের হার বেড়ে যায় বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।
সঙ্গত কারণেই অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, হজ ও ওমরাহ পালন করতে আসা মুসলমানদের কাছ থেকে প্রকৃতপক্ষে কত আয় করে সৌদি সরকার? 
গেলো বছর মোট ৮৩ লাখ মানুষ হজ করতে যান। এরমধ্যে ৬০ লাখের বেশি মানুষ ওমরাহ পালন করেন।
গেলো বছর হজ থেকে সৌদি আরবের সরাসরি রোজগার হয়েছিল প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া যারা হজ করতে সৌদি আরবে যান তারা মোট ২৩ বিলিয়ন ডলার খরচ করেন। মক্কার চেম্বার অব কমার্সের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাইরের দেশ থেকে আসা মুসলমানরা মাথাপিছু ব্যয় করেন ৪৬০০ ডলার। তবে একেক দেশ থেকে আসা হজপ্রত্যাশীদের জন্য আবার একেক রকম খরচ। যেমন ইরান থেকে আসা মানুষদের মাথাপিছু ৩ হাজার ডলার খরচ হয়। এরমধ্যে যাত্রা, খাওয়া, কেনাকাটা সব খরচই ধরা হয়। পাকিস্তান ও বাংলাদেশিদেরও মোটামুটি এরকমই খরচ হয়।
বিভিন্ন দেশে থেকে সৌদি আরবে হজ করতে আসা মুসলমানদের মধ্যে মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার মুসলমানের সংখ্যাই বেশি। সেখান থেকে ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ প্রতিবছর হজে যান। এটা মোট হজপ্রত্যাশীর সংখ্যার প্রায় ১৪%।এরপরই রয়েছে পাকিস্তান (১১%), ভারত (১১%) ও বাংলাদেশ (৮%)। গেলো এক দশকে গড়ে ২৫ লাখ মুসলমান হজ করেছেন। নানা দেশ থেকে মুসলমানদের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষই ওমরাহ করেন। ৭ বছর আগে ওমরাহ করতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ছিল ৪০ লাখের কাছাকাছি। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত খবরে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

‘হজের ভিসা জটিলতায় দায়ী এজেন্সি’:র্মমন্ত্রী

হজযাত্রীদের ভিসাসংক্রান্ত যে জটিলতা দেখা দিয়েছে এর জন্য হজ এজেন্সিগুলোকে দায়ী করেছেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। বলেছেন, তাদের গাফিলতির কারণেই দুর্ভোগে পড়েছেন হজযাত্রীরা। কোন কোন এজেন্সির গাফিলতি আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চিহ্নিত এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে তাদের লাইসেন্সও বাতিল হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সরকার প্রতিটি হজযাত্রীকে যথাসময়ে পাঠানোর চেষ্টা করছে। দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, একজন হজযাত্রীও থাকবেন না, সবাই যেতে পারবেন। অধ্যক্ষ মতিউর রহমান জানান, গত বছরের এই সময়ে ২৫ হাজার হজযাত্রী গিয়েছিলেন, এবার এই সময়ে গিয়েছেন ৩১ হাজার। সে হিসেবে হজযাত্রা এখনো সন্তোষজনক।আগামী ১৭ আগস্টের মধ্যে হজযাত্রী সবাই ভিসা পেয়ে যাবেন। এ ব্যাপারে সবাইকে সরকারের ওপর আস্থা রাখতে বলেছেন মন্ত্রী।
নিয়মানুযায়ী হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার প্রথম দশ দিনেই অধিকাংশ হজযাত্রী চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু এবার সেটা হয়নি। ৯১টি হজ এজেন্সির মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি ও ভিসা জটিলতার কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও সৌদি এয়ারলাইনস পর্যাপ্ত হজযাত্রী পাচ্ছে না। গত পাঁচদিনে দুটি এয়ারলাইনসের ১৫টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। পাঁচদিনে দুটি বিমান সংস্থার হজযাত্রী পরিবহন ক্ষমতা কমেছে প্রায় পাঁচ হাজার। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এক সংবাদ সম্মেলনে হজযাত্রী পাঠানো নিয়ে জটিলতার কথা জানান।

Wednesday, August 2, 2017

বৈধ ব্যবসায়ীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আনতে পারবে’

রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে যেসব গরু ব্যবসায়ী বৈধভাবে দেশে ভারতীয় গরু আনতে চায় আগামী কোরবানি ঈদে ভারতীয় গরু আনার ক্ষেত্রে সীমান্তে তাদেরকে কোন বাধা দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন।
বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) আধুনিকায়নে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরতে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবির সদর দপ্তরে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকায় যেসব ঘাটাল রয়েছে সেসব ঘাটালের মাধ্যমে বৈধভাবে ভারতীয় গরু বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হবে। বাংলাদেশে যেসব গরু ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে চায় তাদের ব্যবসা করতে দেয়া হবে। এজন্য শুধুমাত্র তাদের রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।তিনি বলেন, ভারতীয় গরু আনার জন্য বাংলাদেশি রাখাল ও ব্যবসায়ীরা কোনোভাবেই সীমান্তের জিরো লাইন অতিক্রম করতে পারবে না। তবে ভারতের ব্যাপারিরা জিরো লাইনে গরু নিয়ে আসলে নিয়ম অনুযায়ী এদেশের ব্যবসায়ীরা তা নিয়ে আসতে পারবেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, দেশের সীমান্ত রক্ষার জন্য অাধুনিকায়নসহ বিজিবিকে সময়ের সঙ্গে যুগোপযোগী গড়ার লক্ষ্যে ভিশন ২০৪১ হাতে নেয়া হয়েছে। সেই ভিশনে অন্তর্ভূক্ত থাকবে বর্ডারগুলোতে সার্বক্ষণিক ও বিশেষ নজরদারির জন্য এ্যাডহক ভিত্তিতে রিজিয়ন সুজন, সন্ত্রাস ও চোরাচালান দমনে যৌথবাহিনী সম্বনয় করা, মাদক পাচারে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীদের সঙ্গে সুসর্ম্পক স্থাপন করা হবে। ‘এছাড়া সারাদেশে বিজিবির নতুন ৩টি সেক্টর, ৮টি ব্যাটারিয়ন স্থাপনসহ ৪টি রির্জাভ ব্যাটালিয়ন করা হবে। পুরো বর্ডার সুরক্ষার জন্য পাঁচ হাজার ফোর্স নিযোজিত রয়েছে ভবিষ্যতে আরও বাড়ানো হবে। অাইনশৃঙ্খলাবাহিনী, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সহযোগিতায় সীমান্ত হত্যা বর্তমানে কমিয়ে আনা হয়েছে। বর্ডারে গরু ব্যবসায়ী নিহতের সংখ্যাও এখন কমে এসেছে।’
সীমান্ত সুরক্ষায় বাংলাদেশ-ভারতে ৯৩৫ কিলোমিটার সীমান্ত রাস্তা এবং বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে ২৮৫ কিলোমিটার রাস্তা ও কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে বলে জানিয়েছেন বিজিবির মহাপরিচালক। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে যেন রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও শিবগঞ্জ বর্ডার দিয়ে দেশিয় অস্ত্র ঢুকতে না পেরে সে ব্যাপারে বিজিবি সর্তক অবস্থানে বিজিবি রয়েছে। এছাড়া সীমান্ত এলাকায় অপরাধ কমাতে সমন্বিত টহল পরিচালনা, গোয়েন্দা কার্যক্রম আরো জোরদার, প্রতিবেশী বাহিনীর সাথে সম্পর্ক গড়ে মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধ এবং সীমান্ত এলাকার জীবন মান উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচির কথা বলেন বিজিবির মহাপরিচালক।
৫৭ ধারায় মামলা নিতে অনুমতি লাগবে: আইজিপি‘
এই ধারা বাতিলের চেয়ে অপপ্রয়োগ ঠেকানো জরুরি: ওবায়দুল কাদের

তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় কোনো মামলা নিতে পুলিশ সদরদফতরের আইন শাখার অনুমতি লাগবে। ইতোমধ্যেই শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক পুলিশ সদরদফতরে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এই নির্দেশ দিয়ে বলেন, দেশের যে কোনো থানায় ৫৭ ধারায় মামলা নিতে হলে পুলিশ সদরদফতরের আইন শাখার অনুমতি লাগবে। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার অপব্যহার হচ্ছে অভিযোগ করে এই ধারাটি বাতিলে দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন করে আসছেন সাংবাদিকরা। এই আন্দোলনে অনেক সামাজিক সংগঠনও রয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশনা দেয়া হলো।অপরদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের চেয়ে এর অপপ্রয়োগ ঠেকানো জরুরি। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণের জন্য ৫৭ ধারা করা হয়েছিল। কিন্তু তুচ্ছ কারণে এর অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে কি না সেটি খতিয়ে দেখতে হবে। মন্ত্রী বলেন, খুলনায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা ও গ্রেফতার তথ্যপ্রযুক্তি আইনের অপপ্রয়োগ। এই অপপ্রয়োগ বন্ধ করা দরকার। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্যাকেজ-৩ ও প্যাকেজ ৪-এর আওতায় উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভায়াডাক্ট (উড়াল রেলপথ) ও নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যয় হবে চার হাজার ২৩০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের মধ্যে এ কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই দুই প্যাকেজের ঠিকাদারি কাজ পেয়েছে ইটালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড (ইটাল-থাই) এবং চীনের প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড। গত ৩ মে প্রতিষ্ঠান দুটির সঙ্গে এ-সংক্রান্ত চুক্তি করা হয়। প্যাকেজ ২-এর আওতায় এক হাজার ৫৯৬ কোটি টাকায় মেট্রো রেলের ডিপোও নির্মাণ করবে ইটাল-থাই ও সিনোহাইড্রো।
প্রতিষ্ঠান দুটি বিমানবন্দর থেকে চিটাগাং রোডের কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়ালপথ) নির্মাণ করছে। এ প্রকল্পে কাঙ্ক্ষিত গতি না থাকলেও, প্রতিষ্ঠান দুটি সরকারের অগ্রাধিকারের মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ পেয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ১০ প্যাকেজে সাতটির ঠিকাদার সিনোহাইড্রো। প্রতিষ্ঠানটি পদ্মা সেতুর নদীশাসনের কাজও করছে। এ দুটি প্রকল্পেই ধীরগতিতে কাজের অভিযোগ রয়েছে সিনোহাইড্রোর বিরুদ্ধে। যদিও সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, সকল নিয়মনীতি মেনে মেট্রোরেলে ঠিকাদারি কাজ পেয়েছে ইটাল-থাই ও সিনোহাইড্রো।
গত নভেম্বরে মেট্রো রেল নির্মাণ এলাকা, মিরপুর ১০ থেকে আগারগাঁও ভূগর্ভস্থ পরিসেবা লাইন স্থানান্তর কাজ শুরু হয়। এতে ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের ব্যাপক দুর্ভোগ হচ্ছে। ভায়াডাক্ট ও স্টেশন নির্মাণকাজের কারণে একই রকম দুর্ভোগের শঙ্কা রয়েছে। উন্নয়নের স্বার্থে সাময়িক দুর্ভোগ মেনে নগরবাসীর প্রতি একাধিকবার অনুরোধ জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্যাকেজ-৫ ও ৬-এর আওতায় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভায়াডাক্ট ও স্টেশন নির্মাণ করা হবে। উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রো রেল প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা ঋণ দেবে জাইকা। বাকি টাকা জোগাবে সরকার।

কম্বোডিয়া থেকে আসছে ১০ লাখ টন  

তবু আশানুরূপ কমছে না চালের দাম  

সরকারি গুদামে গত মাসে চাল ছিল এক লাখ ৯১ হাজার টন। বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ১০ হাজার টনে। অর্থাৎ এক মাসে মজুদ বেড়েছে মাত্র ১৯ হাজার টন। অথচ গত বছর এ সময় মজুদ ছিল পাঁচ লাখ ৮২ হাজার টন। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ছয় লাখ ৯৬ হাজার টন; ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সাত লাখ ৯৭ হাজার টন; ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ছয় লাখ ৫৮ হাজার টন; ২০১২-১৩ অর্থবছরে ছয় লাখ ৯৯ হাজার টন এবং ২০১১-১২ অর্থবছরের একই সময়ে চালের মজুদ ছিল নয় লাখ ৯৮ হাজার টন। অর্থাৎ গত পাঁচ বছর ধরে খাদ্য মজুদের পরিমাণ এই সময়ে কখনোই পাঁচ লাখ টনের নিচে নামেনি। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন চাহিদা অনুযায়ী কমপক্ষে ছয় লাখ টন চাল মজুদ থাকার কথা।
অন্যদিকে, চালের মজুদ বাড়াতে গত ২২ জুন চালের আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করে সরকার। তুলে নেয় ৩ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি। এর আগে গত ১৯ জুন বিনা জামানতে চাল আমদানির সুযোগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে বাড়তে থাকে চাল আমদানি। গত মাসে বেসরকারি পর্যায়ে এক লাখ ২০ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে, যা প্রায় গত এক বছরের সমান আমদানি। গত অর্থবছরে এক লাখ ৩৩ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছিল। একইভাবে পাঁচ দেশ থেকে ১২ লাখ টন চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ টন চালবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে। তবে এখন পর্যন্ত সরকারি পর্যায়ে আমদানিকৃত কোনো চাল গুদামে পৌঁছেনি।
ফলে গত জুনের শেষের দিকে সরকারি গুদামে তলানিতে নেমে আসা চালের মজুদ এখন পর্যন্ত আশানুরূপ বাড়েনি। তারওপর কমেছে অভ্যন্তরীণ ধান উৎপাদন। গত কয়েক মাসে হাওরে বন্যা ও বোরো ধানে ব্লাস্ট রোগের কারণে ২০ থেকে ২৫ লাখ টন চাল নষ্ট হয়েছে। আর এসবের প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। প্রায় দেড় মাস ধরে চালের বাজারে দেখা দেওয়া অস্থিরতা কাটছে না। বেসরকারি উদ্যোগে চাল আমদানি বাড়লেও আশানুরূপ কমছে না চালের দাম। এর আগে গত ২২ জুন আমদানি শুল্ক কমানোর সময় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছিলেন, মোটা চাল কেজিপ্রতি ছয় টাকা করে কমবে। কিন্তু গত দেড় মাসে কমেছে গড়ে দুই টাকা করে। বিশেষ করে মোটা চালের দর কিছুটা কমলেও প্রায় আগের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সরু চাল। অথচ এর ফলে কেবল সাধারণ মানুষের দুর্ভোগই বাড়েনি; খাদ্যাভাব পূরণ করতে গিয়ে বেড়েছে আমদানি ব্যয়ও। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রমতে, সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে খাদ্য আমদানিতে ব্যয় বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর দৈনিক কেনাবেচার তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বুধবার বাজারে মোটা চাল কেজি প্রতি ৪২ টাকা ও মিনিকেট চাল কেজি প্রতি ৫৪ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া টিসিবির মতে, মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪৭ টাকা। তবে বাজারে গিয়ে টিসিবির মূল্য তালিকার মিল পাওয়া যায়নি।
চালের দাম কেন কমছে না জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বলেন, আমদানি করা চালের উচ্চমূল্যের প্রভাবে দেশি চালের দাম কমছে না। উপরন্তু ধানের দাম কিছুটা বাড়ায় চালের দাম ফের বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছেন তারা। এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী মায়ের দোয়া জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমদানির চাল বেশি দামে বিক্রি হওয়ায় দেশি চালের দামও কমছে না। ইসমাইল অ্যান্ড সন্স এর স্বত্বাধিকারী ও চাল ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, বাজারে চাল সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। মিল মালিকরা অর্ডার অনুযায়ী, এখন চাল দিচ্ছেন। মিল মালিকদের ওপর চালের দাম নির্ভর করছে। তবে আল্লাহর দান ট্রেডিংয়ের এক বিক্রেতা জানান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে যে চাল আসছে তার দাম বেশি। ফলে দেশের বাজারে দাম খুব বেশি কমবে না।
চালের মজুদ বৃদ্ধি ও বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, মজুদ বাড়াতে সরকারি পর্যায়ে (জিটুজি) ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ টন চাল আমদানি করা হচ্ছে। এরই মধ্যে কিছু চাল দেশে এসেছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক দরপত্রে দুই লাখ টন চাল কেনার জন্য চারটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এসব চালও শিগগিরই আসবে। ভারত ও থাইল্যান্ড থেকে জিটুজিতে চাল আমদানির আলোচনা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বেশি দরের কারণে দুই দেশের সরকারের কাছ থেকে চাল কেনা হচ্ছে না। গত সোমবার রাতে কম্বোডিয়ায় গেছেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। পাশাপাশি ভিয়েতনাম থেকে আরো আড়াই লাখ টন চাল আমদানির চিন্তা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর হচ্ছে সরকার । যেসব চালকল মালিক সরকারকে চাল দেয়নি, তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ধান-চাল সংগ্রহ চলছে। এ ব্যাপারে খাদ্য সচিব কায়কোবাদ হোসেন বলেন, খাদ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল কম্বোডিয়া গেছেন। সেখানকার অবস্থা জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী ৯ আগস্ট খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেখানে অর্থমন্ত্রীসহ সরকারের নীতিনির্ধারকরা থাকবেন। মূলত সেখানেই চালের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। আশা করছি শিগগির চালের বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
কিন্তু ব্যবসায়ী, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা আপাতত চালের বাজার স্বাভাবিক হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছেন না। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, সরাসরি আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমেও চাল কেনার প্রক্রিয়ায় কাক্সিক্ষত সাড়া মিলছে না। গত এপ্রিলে ৬টি দরপত্রের মাধ্যমে তিন লাখ টন চাল কেনার প্রক্রিয়া শুরু হলেও এখন পর্যন্ত এক কেজি চালও গুদামে ওঠেনি। এসব চালের দুটি চালান আগামী সপ্তাহে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে ভিড়তে পারে। একইভাবে খাদ্য অধিদফতর সূত্রগুলো বলেছে, অভ্যন্তরীণ উৎস বা চালকলের মালিকদের কাছ থেকে চাল সংগ্রহের চিত্রও হতাশাজনক।
আগামী পাঁচ বছরে ১০ লাখ টন চাল আমদানির লক্ষ্যে কম্বোডিয়ার সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। দেশটির রাজধানী নমপেনে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এবং কম্বোডিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী প্যান সোরাসাক এই চুক্তিতে সই করেন। চুক্তির অংশ হিসেবে চলতি বছরেই ২ লাখ টন সাদা চাল এবং ৫০ হাজার টন আধা সিদ্ধ চাল কিনবে বাংলাদেশ। কম্বোডিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী প্যান সোরাসাক রয়টার্সকে বলেন, এই চুক্তির পর আগামী অক্টোবরের মধ্যেই এই আড়াই লাখ টান চাল আমরা বাংলাদেশে রপ্তানি করতে পারব।
বাংলাদেশকে বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ চাল উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে তুলে ধরে রয়টার্সের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিলে বন্যায় ধানের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর তারা এখন এই শস্যের অন্যতম বড় আমদানিকারকে পরিণত হয়েছে। হাওরে ফসলহানির পর বাংলাদেশে চালের মজুদ কমে যাওয়া এবং অভ্যন্তরীন বাজারে দাম বাড়ার প্রসঙ্গও তুলে ধরা হয় এতে।
কম্বোডিয়া সফররত খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম রয়টার্সকে বলেন, বন্যার কারণে এ বছর আমাদের সমস্যা হয়েছে। কম্বোডিয়ার সঙ্গে একটি সমঝোতা চু্ক্তি বাস্তবায়নে আমরা এখানে এসেছি।বাংলাদেশের সঙ্গে এই চুক্তিই কম্বোডিয়ার সবচেয়ে বড় চাল রপ্তানির চুক্তি জানিয়ে রয়টার্স জানায়, দেশটি চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৫৬২ টন চাল রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। খরায় উৎপাদন ব্যাহত হলেও গত বছরে কম্বোডিয়া প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টন চাল রপ্তানি করেছে।
গতবছর এপ্রিলে যেখানে সরকারি গুদামগুলোতে সাড়ে ৭ লাখ মেট্রিক টনের বেশি চাল ছিল, সেখানে এ বছর জুনে তা ১ দশমিক ৯৩ লাখ মেট্রিক টনে ঠেকেছে। ফলে ভরা মৌসুমেও বেশ কিছু দিন ধরে বাজারে চালের দাম বেড়ে চলেছে। ফসলহানীর পাশাপাশি ধানের দাম বেশি থাকার কথা বলে চালের বাড়তি দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় চাল আমদানিতে ২০১৫ সালে ২৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া শুল্কহার এবার ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। এরপর সরকার ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির চুক্তি করে, যার মধ্যে দুই দফায় ইতোমধ্যে ৪৭ হাজার মেট্রিক টন চাল দেশে এসেছে।

Tuesday, August 1, 2017

৪০ হাজার যাত্রীর হজ অনিশ্চিত ?

ই-ভিসা ও পরিবহন জটিলতার সমাধান না হলে এ বছর ৪০ হাজার যাত্রীর হজ পালনে সৌদি আরব যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। রাজধানীর আশকোনা ক্যাম্পের হজ কার্যালয়ে ধর্ম ও বিমান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিমানমন্ত্রী। 
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘৪৫ হাজারের ভিসা হয়েছে; কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে এজেন্সিগুলো, তারা যাত্রী নিচ্ছে না। কেন? কারণ দেখা যাচ্ছে যে ওই ৪৫ হাজারের মধ্যে গ্রুপ যেটা আছে, সেই গ্রুপ হয়তো চারজনের গ্রুপ, সেখানে একজন নাই, সুতরাং তারা দিচ্ছে না। এটা তো বিমানের কিছু করার নেই। কারণ যাত্রী না পেলে তো কিছু করার নেই। টিকেট তো আমরা আগেই রেখেছি। দুই নম্বর হচ্ছে হজ এজেন্সিগুলোর এখনো অনেকেই বাড়িভাড়া করতে পারেনি বলে আমাদের কাছে খবর এসেছে।’ 
বৈঠকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতা ও হাব কার্যালয়ের ধীরগতির সমালোচনা করেন রাশেদ খান মেনন। মন্ত্রী জানান, সব পক্ষের সমন্বয়ের মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব। এদিকে গত সাত দিনে যাত্রী সংকটের কারণে মোট ১২টি হজ ফ্লাইট বাতিল করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
দুদকের হটলাইনে ব্যাপক সাড়া

চালু হওয়ার মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যেই সারাদেশের জনগণের কাছ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) শুল্কমুক্ত হটলাইন নম্বর ১০৬-এর মাধ্যমে অসংখ্য অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছে দুদক।
দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, এই হটলাইনের মাধ্যমে কয়েক হাজার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই ভূমি অফিসের ঘুষ সংক্রান্ত। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে হটলাইন চালুর ৫ দিনের মাঝেই দুর্নীতি ও অনিয়মের কয়েক হাজার অভিযোগ পেয়েছি। এরমধ্যে সারাদেশে বেশিরভাগ অভিযোগ এসেছে ভূমি অফিসের ঘুষ নিয়ে।
তিনি আরো বলেন, দুদকের হটলাইনের মাধ্যমে টিআর (টেস্ট রিলিফ) ও কাবিখা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য)-সহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মতো কর্মসূচিতে অনেক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগও পাওয়া গেছে। অভিযোগগুলো অনেক ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নয় উল্লেখ করে প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে টেলিফোনের মাধ্যমে জনগণ বিভিন্ন ব্যক্তির অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ ও নিজেদের ব্যক্তিগত ভূমির মালিকানার ওপর সমস্যা নিয়ে অভিযোগগুলো তালিকাভূক্ত করেছেন। তিনি জানান, দুদক কেবলমাত্র আইনের দ্বারা নির্ধারিত অভিযোগগুলোই বিবেচনায় নিয়েছে। গত ২৭ জুলাই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার লক্ষ্যে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এই হটলাইন উদ্বোধন করেন।
শুল্কমুক্ত এই হটলাইনে সকল কর্মদিবসে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়। দুদক অভিযোগের ধরণ ও প্রকৃতি নিয়ে একটা নীতিমালা তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এর মধ্যে রয়েছে অভিযোগকারিদের পরিচয় গোপন রাখা।