জেলাপরিষদ নির্বাচন
‘আইয়ুবি আমলের বুনিয়াদি গণতন্ত্রের ভোট!’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেনন, এখন যে জেলা পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণভাবে সংবিধান পরিপন্থি।কারণ হিসেবে তিনি বলেন, জেলা পরিষদের নির্বাচনে সকল মানুষের ভোটাধিকার নাই।এখানে যেটা সরকার করছেন, সিলেক্টিভ- ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বাররা মিলে ভোট। তিনি আরও বলেন, এই পদ্ধতির মানে আইয়ুব খানের ওই যে বেসিক ডেমেক্রেসি, যার একটা খানদানি নাম হল বুনিয়াদি গণতন্ত্র। এখন সেই আইয়ুব খানের বুনিয়াদি গণতন্ত্র এই সরকার আনতে চাচ্ছে। তাই জেলা পরিষদে ‘আইয়ুবি গণতন্ত্রের ভোট’ করেছে তারা।জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘চেতনায় বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ নামে সংগঠনের উদ্যোগে ‘মেজর জিয়া ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, সদস্য সচিব শাহ আবদুল্লাহ আল বাকী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী, অধ্যাপক আলী নুর, ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বক্তাগন জেলা পরিষদ নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আরও ধ্বংস করবে বলে মন্তব্য করেন। মওদুদ আহমেদ বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন সরাসরি ভোটে দেওয়ার আইন না করার ক্ষেত্রে সরকারের ভয় কাজ করছে। নারায়ণগঞ্জের সিটি নির্বাচনে এভাবে জেতার পরে আবার ইনডাইরেক্ট লাগে নাকি জিততে? তারা তো সরাসরি নির্বাচন দিয়ে দিলে পারতেন। তাহলে বুঝতেন, তাদের কতটুকু সমর্থন আছে, না আছে। তিনি বলেন, এখানে নির্বাচন হচ্ছে না, আপনারা সবাই জানেন। এটা একদলীয় একটা নির্বাচন। তারা নিজেদের মধ্যে নিজেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই নির্বাচন একটি তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়।সংবিধানের ব্যাখ্যা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, আমাদের সংবিধানের আর্টিক্যাল ৫৯ ও ৬০ তে আছে, বাংলাদেশের সমস্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচিত, জনগণের ভোটের দ্বারা নির্বাচিত হতে হবে। তারা (আওয়ামী লীগ) যখন একদলীয় শাসন (১৯৭৪ সালে বাকশাল গঠন) করলেন, তখন এই দুটি আর্টিক্যাল ডিলিট করে দিলেন, যাতে নিজেরাই ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভায় সব নির্বাচন করতে পারেন। এই আর্টিক্যালগুলো আমরা চতুর্থ সংশোধনীতে সংযুক্ত করে দিয়েছিলাম। এটাকে আরও উন্নত গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক চর্চা করার জন্য নেত্রী সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করলেন দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। সেই সংশোধনীতে আর্টিকেল ৫৯ ও ৬০ আবার রেস্ট্রোড করলাম।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে মওদুদ বলেন, এই নির্বাচনের ফলাফলে সরকার খুব খুশি। তারা বলতে চায় যে, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে, এতে প্রমাণ হয়েছে যে, তাদের জনপ্রিয়তা অনেক বেড়েছে। ভালো কথা, তাহলে এখনি নির্বাচনটা দিয়ে দেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হয়ে যাক। তাহলে বোঝা যাবে, এই যে জনপ্রিয়তার কথা বলছেন, সত্যিকার অর্থে জাতীয় পর্যায়ে সেটার প্রতিফলন ঘটবে কি না।প্রসঙ্গত, পার্বত্য ৩টি জেলা বাদে ৬১টি জেলায় ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, মেয়র, কাউন্সিলর, ভাইস চেয়ারম্যানরা জেলা ও উপজেলা সদরে স্থাপিত কেন্দ্রে এই ভোট দেবেন। তবে এরই মধ্যে ২১ জেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। অবশ্য চেয়ারম্যান পদে না হলেও সদস্য পদে সেখানে নির্বাচন হয়েছে।
No comments:
Post a Comment