Sunday, December 25, 2016

এবার ঢাকায় আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ!

মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো এবার ঢাকায়ও আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটালেন এক জঙ্গী নারী।শনিবার রাজধানী ঢাকার পূর্ব আশকোনায় জঙ্গি আস্তানা থেকে ৪ জনের আত্মসমর্পণের পর এক নারী একটি শিশুকে নিয়ে বেরিয়ে এসে নিজের দেহের সঙ্গে থাকা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। আজ ভোররাত থেকে পুলিশি অভিযানের মধ্যে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিশুটিকে নিয়ে ওই নারী বেরিয়ে এসে এ আত্মঘাতী বোমর বিস্ফোরণ ঘটান বলে কর্তব্যরত পুলিশের দাবি। অভিযানে থাকা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. ছানোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বোরকা পরা ওই নারী শিশুটিকে নিয়ে বাইরে এসেই সুইসাইড ভেস্টের বিস্ফোরণ ঘটান।
পুলিশ জানায়, আত্মসমর্পণে সাড়া না দেয়ায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শুরু করে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় ভবনের ভেতর থেকে একটি বোমা বাইরে ছুঁড়ে মারা হয়। এতে পুলিশের ইন্সপেক্টর শফি আহমেদ আহত হন। এছাড়াও দুপুরের দিকে এক নারী দরজা খুলে শরীরে থাকা গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটান। এতে তিনি ছাড়াও আরেক শিশু গুরুতর আহত হয়। প্রাথমকিভাবে জানা গেছে, ইতোপূর্বে জঙ্গি আস্তানায় নিহত সুমনের স্ত্রী তৃশা ওই গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটান। এ সময় নিহত আরেক জঙ্গি ইকবালের ৭ বছরের মেয়ে আহত হয়।
মেয়েটিকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ওই নারী ও আরেকজন ভবনের ভেতরেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীর সঙ্গে থাকা ব্যক্তিই আজিমপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নিহত জঙ্গি তানভীর কাদেরীর ছেলে আবীর।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ কাউকে কাছে ভিড়তে না দিলেও এই সময় ওই বাড়িতে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গিয়েছিল। স্থানটিও ধোঁয়ায় ভরে যায়। ওই নারী জঙ্গি সুমনের স্ত্রী বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তার সঙ্গে থাকা মেয়েটি জঙ্গি ইকবালের মেয়ে বলে জানিয়েছেন তারা। ওই নারী রক্তাক্ত অবস্থায় ওই বাড়ির প্রাঙ্গণেই রয়েছেন। আরও এক জঙ্গি ভেতরে থাকায় পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করতে যেতে পারেনি। তবে শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ভেতরে তিনজন রয়েছেন। তাদের কাছে প্রচুর এক্সপ্লোসিভ (বিস্ফোরক) ও সুইসাইডাল ভেস্ট রয়েছে। ঘটনাস্থলে থাকা উত্তরা ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, যারা ভেতরে আছে তাদের বারবার অত্মসমর্পণ করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু তারা ভেতর থেকে বলছে-তাদের শরীরে গ্রেনেড বাঁধা, গ্রেপ্তারের চেষ্টা করলে বিস্ফোরণ ঘটাবে বলেও হুমকি দেয়।
জানা যায়, নব্য জেএমবির অন্যতম শীর্ষনেতা সাবেক মেজর জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী জেবুন্নাহারসহ ৪ জন সকালে ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পিস্তলসহ পুলিশের হাতে ধরা দেন। হজ ক্যাম্পের কাছে ৩ তলা ওই বাড়ি সূর্যভিলা ভোররাতে ঘিরে ফেলে অভিযান শুরু করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। এই শাখার প্রধান মনিরুল ইসলাম তখন বলেছিলেন, নব্য জেএমবির বেশ কয়েকজন সদস্য ভেতরে আছেন বলে তথ্য পাওয়ার পর অভিযানে নামেন তারা।

No comments:

Post a Comment