সোনায় গলদ : স্থগিত স্বর্ণ পদকের অনুষ্ঠান
তুলনামূলক কম মানের সোনা দিয়ে তৈরি করায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মেধাবী কর্মকর্তাদের ‘স্বর্ণ পদক’ প্রদান অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। পদক তৈরিতে দায়িত্ব পালনে কোনো কর্মকর্তার অবহেলা রয়েছে কি না, তা তদন্তের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরীকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন গভর্নর ফজলে কবির। এর আগে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা বিদেশি বন্ধুদের দেওয়া সম্মাননা পদকে সোনায় কারসাজির ঘটনা দেশজুড়ে সমালোচিত হয়েছিল।
বুধবার বেলা ১১টায় মতিঝিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে দুই ক্যাটাগরিতে ২২ জন কর্মকর্তার হাতে পদক তুলে দেওয়ার কথা ছিল গভর্নরের। কিন্তু অনুষ্ঠান শুরুর আগে দেখা যায়, যে স্বর্ণ পদকগুলো তৈরি করা হয়েছে সেগুলো ২১ ক্যারেট মানের সোনা দিয়ে তৈরি। অথচ পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত ছিল এগুলো ২২ ক্যারেট দিয়ে তৈরি করতে হবে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গভর্নরের নজরে এলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি পদক প্রদান অনুষ্ঠান স্থগিত ঘোষণা করেন এবং তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন।
এ বিষয়ে এস কে সুর চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আসলে এখানে আর্থিক কোনো অনিয়ম হয়নি। ২২ ক্যারেট মানের স্বর্ণ দিয়ে পদক তৈরির কথা ছিল, সেখানে ২১ ক্যারেট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ওজনে প্রতিটি পদক ১২ গ্রাম হওয়ার কথা ছিল, তৈরি হয়েছে প্রায় ১৩ গ্রামের। অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের ১২ গ্রাম সোনা দিয়ে একটি পদক তৈরি করতে যে খরচ হত, সেই একই পরিমাণ টাকা দিয়ে ওজনে একটু বেশি প্রায় ১৩ গ্রামের পদক তৈরি করা হয়েছে। আর্থিক অনিয়ম না হলেও কারও দায়িত্ব পালনে অবহেলা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান এই ডেপুটি গভর্নর। দায়িত্ব পালনে কোনো কর্মকর্তার অবহেলা থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট এই পদক তৈরির দায়িত্বে ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাতিষ্ঠানিক কাজের পারদর্শিতার স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কারের জন্য দুই ক্যাটাগরিতে ২২ জন কর্মকর্তাকে মনোনীত করা হয়। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৩৬৬তম সভায় তাদের পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। দুই ক্যাটাগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে পাঁচজনকে স্বর্ণ পদক দেওয়ার কথা ছিল। এই কর্মকর্তারা হলেন- নাজিম উদ্দিন (যুগ্ম পরিচালক), রণজিৎ কুমার রায় ( যুগ্ম পরিচালক), প্রদীপ পাল ( যুগ্ম পরিচালক), মাসুমা বেগম (সিস্টেমস এনালিস্ট) ও আশ্রাফুল আলম (ডিজিএম)। তাদের স্বর্ণপদকের বাইরে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ১৭ জন কর্মকর্তাকে ১০ গ্রাম ওজনের ‘রৌপ্য পদক’ এবং ২৫ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড দেওয়ার কথা ছিল।
No comments:
Post a Comment