ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে যে মুখগুলিকে দেখার সম্ভাবনা জোরদার হয়ে উঠেছে, তার মধ্যে কম করে তিন জন কট্টর ‘মুসলিম-বিদ্বেষী’ থাকায় রীতিমতো উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে গোটা মুসলিম দুনিয়া। আতঙ্কে রয়েছে পশ্চিম এশিয়া ও জন্মসূত্রে মুসলিম বিশাল সংখ্যক মার্কিন নাগরিক। এই ‘মুখ’গুলির মধ্যে রয়েছেন ট্রাম্পের সম্ভাব্য উপদেষ্টা বা ট্রাম্পের ভাবী মন্ত্রিসভার সদস্য। সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে তিনটি নাম। নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল, সিআইএ-র ডিরেক্টর ও সম্ভাব্য জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। হোয়াইট হাউসের জনাকয়েক বিদায়ী ও নতুন আমলার শঙ্কা, এর ফলে আমেরিকার ‘বন্ধু রাষ্ট্র’ বলে পরিচিত আরব দেশগুলির সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্কের সমীকরণ বদলে যেতে পারে। সেটা আরও বেশি উদ্বেগের এই কারণেই যে, ওই আরব দেশগুলিকে সঙ্গে নিয়েই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘ইসলামিক স্টেট’-এর বিরুদ্ধে মার্কিন অভিযান চলছে।
মার্কিন মানবাধিকার সংগঠনগুলির তরফে জানানো হয়েছে, ভাবী প্রেসিডেন্ট অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইকেল ফ্লিনকে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত করায় সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন মুসলিমরা। মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা এজেন্সির প্রাক্তন প্রধান ফ্লিন এর আগে বেশ কয়েক বার মুসলিমদের ‘ক্যান্সার’ রোগের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘আমেরিকায় মুসলিমদের সম্পর্কে যে ভয়টা রয়েছে তা রীতিমতো যুক্তিযুক্ত।’’ মানবাধিকার সংগঠনগুলির আপত্তির দ্বিতীয় কারণ, সেনেটর জেফ সেশন্‌স। ভাবী প্রেসিডেন্ট যাঁকে পরবর্তী অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে বেছে রেখেছেন। যিনি প্যারিস হামলার ঘটনার পর আমেরিকায় সাময়িক ভাবে মুসলিম অনুপ্রবেশের বিরোধিতা করেছিলেন। আর ইসলাম ধর্মকে বলেছিলেন ‘বিষাক্ত মতাদর্শ’। তাঁদের অপছন্দের তৃতীয় কারণ, ট্রাম্প যাঁকে সিআইএ-র নতুন ডিরেক্টর করতে চলেছেন, সেই মাইক পম্পিও। যিনি মিশরের একটি মুসলিম সংগঠন ‘মুসলিম ব্রাদারহু়ড’কে মার্কিন মুলুকে নিষিদ্ধ করার বিলটি আনার ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা নিয়েছিলেন।
মাইকেল ফ্লিন: আমেরিকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার। অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফ্লিন মার্কিন ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির ডিরেক্টর ছিলেন। ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ফ্লিন জয়েন্ট ফাংশনাল কমপোনেন্ট কমান্ড ফর ইন্টেলিজেন্স, সার্ভেইল্যান্স অ্যান্ড রিকনাইসেন্সের কমান্ডার ও আমেরিকার মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার আগে ফ্লিন ছিলেন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টরের দায়িত্বে।

নয়া জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন
জেফ সেশন্‌স: রিপাবলিকান পার্টির সদস্য সেশন্‌স আলাবামার সেনেটর। ১৯৯৪ সালে ছিলেন আলাবামার অ্যাটর্নি জেনারেল। ১৯৯৬ সালে সেশন্‌স আসেন মার্কিন কংগ্রেসে। ২০০২, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালেও তিনি সেনেটে নির্বাচিত হন।

নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশন্‌স
মাইক পম্পিও: আমেরিকার ‘হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস’-এ পম্পিও ২০১১ সাল থেকে কানসাসের সদস্য।

সিআইএ-র নতুন ডিরেক্টর মাইক পম্পিও