যে আলোয় ভূবন-ভরা, সেই আলোই কি এ বার ‘অন্ধকারে’ ঢেকে দিতে পারে অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের মুখ?
আর ক’টা দিন পরেই বড় ‘পরীক্ষা’য় বসতে চলেছেন আইনস্টাইন। তাঁর মেপে দেওয়া দৃশ্যমান আলোর (ভিজিব্ল লাইট) গতিবেগ সত্যি-সত্যিই একটি নির্দিষ্ট মানের নাকি তা বাড়া-কমা করে, এ বার তা একেবারে হাতেকলমে পরীক্ষা করে দেখা হবে। তাতে কি পাশ করবেন আইনস্টাইন শেষ পর্যন্ত, এই নিয়েই এখন বিশ্বজুড়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। ১০০ বছর পর সবে একটি পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন আইনস্টাইন, গত ফেব্রুয়ারিতে। যখন তাঁর সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদে বলা মহাকর্ষীয় তরঙ্গের (গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ) ধাক্কাটা সত্যি-সত্যিই অনুভব করা সম্ভব হয়েছিল লাইগো ডিটেক্টরে। এ বার আলোর পরীক্ষায় বসতে চলেছেন আইনস্টাইন! ১০০ বছর আগে তাঁর সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদেই একেবারে অঙ্ক কষে আইনস্টাইন বলে দিয়েছিলেন, দৃশ্যমান আলোর গতিবেগ সেকেন্ডে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার মাইল। আর এটা কোনও ভাবেই বদলায় না। তার কোনও বাড়া-কমা হয় না। এই আলোর চেয়ে বেশি গতিবেগে এই ব্রহ্মাণ্ডে আর কোনও কিছুই ছুটতে পারে না।
আলোয় ভূবন ভরা...
এই সেই গবেণাপত্র
লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের পদার্থবিদ অধ্যাপক জোও মাগুএইজো ও কানাডার পেরিমিটার ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নিয়ায়েশ আফশোর্দির দাবি, ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির পরপরই আলো নাকি আরও অনেক বেশি জোরে ছুটতো। কিন্তু ধীরে ধীরে তার পায়ে অদৃশ্য কেউ বেড়ি পরিয়ে দেয়। ফলে, কমে আসে আলোর গতি। নেমে আসে এখনকার চেনা, জানা গতিতে। অঙ্ক কষে-টষে যে গতিবেগের মানটা জানিয়েছিলেন প্রথম আইনস্টাইনই। দাবিটা যে একেবারেই আনকোরা, নতুন, তা কিন্তু নয়। গত শতাব্দীর ’৯০-এর দশকের শেষাশেষিই এই দাবিটা করেছিলেন একদল পদার্থবিদ। তখন তা নিয়ে কিছুটা হাসাহাসিও হয়েছিল। কিন্তু তার পর জল অনেক দূর গড়িয়েছে। এই তত্ত্বটি আরও আরও বেশি করে গাণিতিক ভিত্তি পেয়েছে। তারই পরিণতিতে মাগুএইজো ও আফশোর্দির গবেষণাপত্রটি (‘ক্রিটিক্যাল জিওমেট্রি অফ আ থার্মাল বিগ ব্যাং’) এই নভেম্বরের গোড়ার দিকে প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘ফিজিক্যাল রিভিউ ডি’-তে।
No comments:
Post a Comment