Wednesday, February 15, 2017

জাতিসংঘে আইপিইউ শুনানি

জলবায়ু পরিবর্তনে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে  বাংলাদেশ

সমুদ্রের সুরক্ষা ও মানবতার কল্যাণে বিশ্ববাসীকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি। গত সোমবার সমুদ্র সম্পদ ও টেকসই উন্নয়নে এর ভূমিকা নিয়ে জাতিসংঘ সদর দফতরে শুনানির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ নিম্ন অববাহিকার দেশ, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের উচ্চতা বাড়লে সমগ্র অঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। দুই দিনব্যাপী আইপিইউর এ বার্ষিক শুনানি গতকাল মঙ্গলবার শেষ হয়। বাংলাদেশের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সারোয়ার কামাল এবং কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘এ ওয়ার্ল্ড অব ব্লু : প্রিজার্ভিং দ্য ওশানস, সেইফগার্ডিং দ্য প্ল্যানেট, এনশিউরিং হিউম্যান ওয়েল-বিয়িং ইন দ্য কনটেক্সট অব দ্য টোয়েন্টি থার্টি এজেন্ডা’ শিরোনামে এ শুনানি আয়োজনের প্রশংসা করেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি পিটার টমসন। তিনি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য পূরণসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সংসদ সদস্যরা সম্মিলিত উদ্যোগ নিয়ে মতবিনিময় করতে পারছেন। জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল য়ু হংবোও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ৫৫ দেশের ১৭৯ জন সংসদ সদস্য, ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং ১৯টি এনজিওর প্রতিনিধিরা আইপিইউর বার্ষিক এ শুনানিতে অংশ নেন। আইপিইউর প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ নিম্ন অববাহিকার দেশ, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে সমগ্র অঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, সমুদ্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো অনুধাবন, অনুশীলন ও সম্মিলিতভাবে সমাধান করতে যে ধরনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন, তা করতে এখনো অনেকে সজাগ হননি। তাই সমুদ্রের সুরক্ষা ও মানবতার কল্যাণে বিশ্ববাসীকে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি সমুদ্রের দূষণ, মানুষ ও পরিবেশের সঙ্গে সমুদ্রের আন্তসম্পর্ক, সমুদ্র সম্পদ ও এর সঙ্গে সম্পর্কিত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের তাৎপর্য তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ ডেলিগেশনের প্রধান ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এজেন্ডা ২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সমুদ্রের সব সম্ভাবনাকে উন্মোচন করতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সম্মিলিত প্রয়াস তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ, প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন এবং বন্যপ্রাণীর সুরক্ষা, উন্নয়ন ও সংরক্ষণে আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার রূপকল্প-২০২১-এ নির্দিষ্টভাবে উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ সন্নিবেশিত করেছে। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার আর্থসামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষেত্রে ব্যাপক রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে, যা বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে সাহায্য করবে।

No comments:

Post a Comment