Monday, August 15, 2016

।।সুশাসনই উন্নয়নের পূর্বশর্ত।।

দেশে সুশাসন নেই বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে।জঙ্গিবাদ,হুমকি,হত্যা,গুম,ক্রসফায়ার সর্বত্রই আলোচনার বিষয়।পাশাপাশি আলোচনা হচ্ছে উন্নয়ন নিয়েও।এরমধ্যেই পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের নিজ কক্ষে বসে স্বয়ং পরিকল্পনামন্ত্রী দাবি করলেন যে,বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই,আগামী অর্থবছরে ৭.২শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবেই।পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রবৃদ্ধি নিয়ে এমন দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করে বলেছেন,জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে এযাবৎ সর্বকালের সর্ব সেরা প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এবছর ৭.০৫প্রবৃদ্ধি অর্জণ সম্ভব হয়েছে,যা আগামী বছর শুধু ৭.২নয় বরং আরো ওপরে থাকবে।
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়ে বাংলাদেশ এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জণে সক্ষম হয়েছে।উন্নয়নের চাকা এভাবে ঘুরিয়ে এগিয়ে যেতে পারলে ২০২১সনের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নীত হবে বাংলাদেশ। আবার ২০৩০সনের মধ্যে দারিদ্রমুক্ত ও ২০৪০সনে উন্নত দশটি দেশের কাতারে পৌঁছার লক্ষ্য নিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে,যা সরকারের দাবি। কিন্তু এই লক্ষ্য অর্জণের পথে সব বাঁধা কাটিয়ে আমরা কী পারবো রোল মডেল পরিচিতি নিয়ে উন্নত দেশের মর্যাদা লাভ করতে? শুধু প্রবৃদ্ধি অর্জণই সবকিছু নয়। এবারের বাজেট নিয়ে সিপিডির সংলাপে এসব প্রসঙ্গই আলোচিত হয়েছে। সংলাপের মূল প্রবন্ধে বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলো উঠে এসেছে।অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ,বরাদ্দ অনুযায়ী ব্যয় করার সক্ষমতা অর্জণ,বিদেশি সহায়তা আনা ও গুণগত মানোন্নয়নের প্রসঙ্গও উঠে আসছে বিভিন্ন আলোচনায়।অংশগ্রহণকারী আলোচকগন দেশের চলমান রাজনীতির গুণগত মানের বিষয়ে আলোকপাত করতে বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়েও অনেক কথাই বলেছেন।অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করে,উৎপাদন ব্যহত হয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গণে দেশ সম্পর্কে খারাপ বা নেতিবাচক বার্তা যায়।ফলে আন্তর্জাতিক সহযোগী গোষ্ঠী তাদের হাত গুটিয়ে নেয়।এখনো তাই দেশে বিদেশি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে আসছে না। সর্বত্র স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে উন্নয়নে গতি সঞ্চার করার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও শক্তিশালী করতে হবে। দেশের অগ্রজাত্রায় গণতন্ত্রের যেমন কোন বিকল্প নেই তেমনি টেকসই উন্নয়নেরও কোন বিকল্প নেই।আর দেশের উন্নয়নের স্বার্থেই প্রয়োজন গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষা করা।
একইসাথে দেশে গণতন্ত্র,উন্নয়ন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইনের শাসন বলবৎ করাও জরুরি।এসব সম্ভব হলেই কেবল দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত হবে।তবে সবার আগে দেশে সুশাসনের জন্য সময়োপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।কেবলমাত্র সুশাসনের মাধ্যমেই অর্জিত হতে পারে গণতান্ত্রিক পরিবেশে।দেশের সুষ্ঠ উন্নয়ন ও গণতন্ত্র রক্ষাকবচের সুরক্ষার জন্যই সর্বাগ্রে প্রয়োজন সুশাসন।

No comments:

Post a Comment