অভিবাসী প্রশ্নে দীর্ঘ নিরাবতায় মনে হচ্ছিল, বুঝি বা একটু নরম হয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েতোর সঙ্গে বৈঠকের পরেই ফের ভোলবদল ডোনাল্ড ট্রাম্পের। রিপাবলিকান দলের এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বুধবার রাতে অ্যারিজোনার ফিনিক্সে এক সভায় অভিবাসী-প্রশ্নে ফিরে গেলেন নিজের কট্টর অবস্থানেই।

মেক্সিকোর সীমান্ত বরাবর দেওয়াল তিনি তুলবেনই এবং বেআইনি মার্কিন অভিবাসীদের উৎখাত করতে তিনি কখনওই পিছপা হবেন না— সেটা সভায় ফের বুঝিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা নিজেদের দেশ ফিরিয়ে নেব। যাঁরা বেআইনি ভাবে ঢুকেছেন, তাঁদের প্রত্যর্পণ করা হবে। ক্ষমার কোনও ব্যাপার নেই।’’ যা শুনে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন বলেছেন, ‘‘এত দিনের মধ্যে সব চেয়ে ন্যক্কারজনক বক্তৃতা।’’ টেলিপ্রম্পটারের মাধ্যমে ভিড়ের উদ্দেশে ভেসে আসে ট্রাম্পের গলা, ‘‘দক্ষিণ সীমান্ত বরাবর আমরা বিশাল দেওয়াল বানাব। মেক্সিকোই তার খরচ দেবে, ১০০ শতাংশ। যদিও ওরা এটা জানে না, কিন্তু ওদেরই দিতে হবে।’’ এই মন্তব্য নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। এক দিন আগে মেক্সিকোয় প্রেসিডেন্ট নিয়েতোর সঙ্গে বৈঠকের পরে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রাম্প জানান, আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্ত বরাবর দেওয়াল তৈরির খরচ কে দেবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়নি। তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘আমরা দেওয়াল নিয়ে কথা বলিনি। খরচ নিয়েও কথা হয়নি। সে সব পরে হবে। এটা একেবারেই প্রাথমিক বৈঠক।’’ বৈঠকের এক ঘণ্টা পরে নিয়েতো আবার টুইটারে লেখেন, ‘‘ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার শুরুতেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলাম দেওয়াল তৈরির খরচ মেক্সিকো দেবে না।’’তবে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে প্রচারের শুরু থেকেই ট্রাম্প বলে এসেছেন তিনি মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল তুলতে চান। এ জন্য তাঁকে বিস্তর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। নিউ ইয়র্কের ধনকুবের প্রার্থীর দাবি ছিল, ‘‘এমন নিরাপদ দেওয়াল আমাদের সার্বভৌম অধিকার এবং এটা দু’দেশের জন্যই কার্যকরী হবে।’’ ট্রাম্পের মন্তব্যে আঘাত পেয়েছিল গোটা মেক্সিকো। প্রেসিডেন্ট নিয়েতো তাঁকে তুলনা করেছিলেন হিটলারের সঙ্গেও। 

ট্রাম্প প্রথম মেক্সিকো সফরে যাওয়ার পরে অবশ্য নিয়েতো বলেন, ‘‘মানুষ ওঁর কথায় কষ্ট পেয়েছেন। কিন্তু আমি নিশ্চিত দু’দেশের মঙ্গলের জন্য উনি কিছু করতে চান।’’ ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পরে নিয়েতো কী বলবেন, সেটাই প্রশ্ন।