Saturday, December 31, 2016

নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ এমপি লিটনের মৃত্যু

নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি... রাজেউন)।আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. বিমল চন্দ্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এমপি লিটনের বুকে ও হাতে ৬টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর আগে আজ সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের শাহাবাজ এলাকায় এমপির নিজ বাড়িতে গিয়ে ৩ জন দুর্বৃত্ত তাকে গুলি করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই তিনি মারা যান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লা আল ফারুক জানান, সাংসদের স্ত্রী ফোন করে তার গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি আমাদের জানিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত সুন্দরগঞ্জের বহুল আলোচিত শিশু শাহাদাত হোসেন সৌরভকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলার আসামি এমপি লিটন। তিনি জামিনে ছিলেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পৌনে ৭টার দিকে এমপি লিটনকে হাসপাতালে আনা হয়। এদিকে এমপি লিটনকে গুলি করার খবর ছড়িয়ে পড়লে বামনডাঙ্গা এলাকায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ছে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। রাস্তায় নেমে তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন। বন্ধ করা হয়েছে বামনডাঙ্গার সব দোকানপাট। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে অজ্ঞাতনামা ৩ যুবক একটি মোটরসাইকেলে করে এমপির সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গার বাড়িতে যান। একজন মোটরসাইকেলে বসে ছিলেন। বাকি দুজন সাংসদের বাড়ির বৈঠকখানায় যান। তিনি তখন বৈঠকখানায় ছিলেন। এ সময় ৩টি গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। এর পরপরই দুজন দ্রুত বৈঠকখানা থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সাংসদ মনজুরুলকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা যায়, ২০১৫ সালের ২ অক্টোবর সকালে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার গোপালচরণ গ্রামের বাড়ির পাশের সড়কে চাচার সঙ্গে হাঁটতে বের হয় শিশু শাহাদাত। তখন সে সাংসদ মনজুরুলের গুলিতে আহত হয়। এই ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক আন্দোলন হয়। ৩ অক্টোবর রাতে শাহাদাতের বাবা সাজু মিয়া হত্যাচেষ্টা ও গুরুতর জখমের অভিযোগে সাংসদ মনজুরুলের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। ওই দিনই সন্ধ্যায় সাংসদ তার আত্মীয়ের মাধ্যমে দুটি অস্ত্র থানায় জমা দেন। ৬ অক্টোবর রাতে বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে উপজেলার উত্তর শাহবাজ গ্রামের হাফিজার রহমান মণ্ডল বাদী হয়ে সাংসদকে প্রধান আসামি করে মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে একই থানায় আরেকটি মামলা করেন। ১৪ অক্টোবর রাতে গ্রেপ্তার হন তিনি। এর পর তিনি জামিন নিয়ে মুক্তি পান।

No comments:

Post a Comment