Thursday, March 9, 2017

রাসায়নিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ সংস্থার শীর্ষ পদে বাংলাদেশ

রাসায়নিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ সংস্থার (ওপিসিডব্লিউ) প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও ওপিসিডব্লিউতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি শেখ মুহম্মদ বেলাল হতে যাচ্ছেন সংস্থার নতুন চেয়ারপারসন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সংস্থাটির শীর্ষ পদে নির্বাচিত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে ওপিসিডব্লিউর সদর দপ্তর।  
গত ৭ মার্চ থেকে দ্য হেগে ওপিসিডব্লিউর নির্বাহী পর্ষদের ৮৪তম অধিবেশন শুরু হয়। আগামী কাল পর্যন্ত ওই অধিবেশন চলবে। ৪১ সদস্যের ওপিসিডব্লিউর নির্বাহী পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে মুহম্মদ বেলালকে সংস্থার শীর্ষ পদে নির্বাচন করেন।    
১৯৯৭ সাল থেকে ওপিসিডব্লিউর যাত্রা শুরুর পর থেকে মুহম্মদ বেলাল হবেন পর্ষদের ২০তম চেয়ারপারসন। পর্যায়ক্রমিক আবর্তনের ফলে প্রতি পাঁচ বছর পরপর এশিয়া গ্রুপ এই গুরুত্বপূর্ণ পর্ষদের চেয়ারপারসন হওয়ার সুযোগ পেয়ে আসছে এবং এ পর্যন্ত এশিয়া গ্রুপ থেকে চারবার এই দায়িত্ব পালন করা হয়েছে। এই চারবারের মধ্যে দুবার ভারত, শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপাইন একবার করে চেয়ারপারসনের দায়িত্বে নির্বাচিত হয়েছেন। ভারতের প্রখ্যাত রাষ্ট্রদূত প্রভাকর মেনন ছিলেন পর্ষদটির প্রথম চেয়ারপারসন। 
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, গত ৬ মার্চ ২০১৭ তারিখে ৫৩ সদস্যবিশিষ্ট এশিয়া গ্রুপ রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলালকে অনানুষ্ঠানিক ভোটের মাধ্যমে নির্বাহী পর্ষদের চেয়ারপারসন পদে ২০১৭-২০১৮ মেয়াদের জন্য ঐক্যমতের ভিত্তিতে মনোনীত করে, যার মাধ্যমে রাষ্ট্রদূত বেলাল সহজেই তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের বিপরীতে সমর্থন লাভ করেন। এই অনানুষ্ঠানিক ভোট পাকিস্তানের তাঁদের প্রার্থীর পক্ষে মাসব্যাপী নজিরবিহীনভাবে আন্তর্জাতিক প্রচারণাকে পরাভূত করে। অন্যদিকে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় এবং উন্নয়নে তার অগ্রণী ভূমিকা এবং তার প্রার্থী রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলালের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে। সংস্থার বিভিন্ন কার্যক্রম এবং এর একাধিক কমিটিতে রাষ্ট্রদূত বেলালের সক্রিয় অংশগ্রহণ তাঁর প্রার্থিতাকে সব সময়ই এগিয়ে রেখেছে। 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন হলো আন্তর্জাতিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি যা রাসায়নিক অস্ত্রের উন্নয়ন, উৎপাদন, মজুদ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে এবং বিদ্যমান মজুদ একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিনষ্টের বাধ্যবাধকতা আরোপ করে। দ্য হেগে অবস্থিত ওপিসিডব্লিউ হলো রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন বাস্তবায়নকারী সংস্থা, যা সদস্য দেশগুলোকে পর্যবেক্ষণ করে থাকে এবং সদস্য দেশগুলোর বাধ্যতামূলক বার্ষিক প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাই করে। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত নির্দিষ্ট রাসায়নিক দ্রব্যের চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং সচিবালয়ের পরিদর্শকদের নিয়মিত পরিদর্শনের ব্যবস্থা করে থাকে।  
রাসায়নিক অস্ত্র বিস্তার প্রতিরোধে অসামান্য অবদানের জন্য ওপিসিডব্লিউ ২০১৩ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। ১৯২ সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে সংস্থাটি ১৯৯৩ সালে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন বাস্তবায়ন করেছে। বাংলাদেশ ১৪ জানুয়ারি ১৯৯৩ তারিখে এই কনভেনশনে স্বাক্ষর করে এবং ২৫ এপ্রিল ১৯৯৭ তারিখে তা অনুসমর্থন করে। 
দীর্ঘ প্রায় এক দশক বিরতির পর ২০১৫ সালে বাংলাদেশ দুই বছরের জন্য (২০১৬-২০১৮) পুনরায় নির্বাহী পর্ষদের সদস্য নির্বাচিত হয়।   

No comments:

Post a Comment