মুগ্ধ করতেন যিনি
কয়েকদিন আগে ভারতের একটি চ্যানেলে দেখলাম বাংলাদেশের তুমুল জনপ্রিয় একটি নাটক সেদেশে প্রচারিত হবে। বিষয়টি আমার খুব ভালো লাগল। কারণ, সে দেশের সিরিয়াল দেখতে দেখতে আমরা যখন বিরক্ত তখন অন্তত আমাদের দেশের সংস্কৃতির একটা অংশ সেদেশে দেখানো হবে ভেবে আনন্দ পেলাম। যে নাটকটি সেখানে দেখানো হবে সেটি হুমায়ূন আহমেদের আজ রবিবার। একসময় যা আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখেছি। তিনি দেখিয়েছেন বাংলা সাহিত্যে কীভাবে পাঠক টানতে হয় এবং ধরে রাখতে হয়, কীভাবে নাটকে গুণগত পরিবর্তন এনে মানুষকে টিভি সেটের সামনে বসিয়ে রাখা যায়। তিনি আমাদের দেশের প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ।
একটা সময় একেকজন লেখকের বা সম্মিলিত কয়েকজন লেখক কবির লেখায় প্রভাবিত হয়ে লেখালেখি চলে। এখন বেশিরভাগ লেখাতেই হুমায়ূন আহমেদের লেখার ছায়া, নাটকগুলোতেও হুমায়ূন আহমেদ। মোটকথা, হুমায়ূন আহমেদ বাঙালি জাতির প্রাণের মাঝে বসে আছেন।
১৩ নভেম্বর বাংলা সাহিত্যের নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন। তার কাজ, তার সৃষ্টি বিশাল। তা বিশ্লেষণ করার জ্ঞান বা দক্ষতা কোনোটাই আমার নেই। আমি তা করবও না। হুমায়ূন আহমেদকে স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে গণ্য করা হয়। বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন বলতে যাকে বোঝায় তিনি ছিলেন সেরকম মানুষ। তিনি ছোটগল্প লিখেছেন, উপন্যাস লিখেছেন, চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। বিভিন্ন সময়ে তার নাটক ও সিনেমায় প্রচারিত গানগুলো তো মানুষের মুখে মুখে। তার হাত ধরে অনেক গুণী অভিনেতা নাট্যজগতে এসেছেন। পৃথিবীজুড়েই তার বহু ভক্ত-পাঠক রয়েছে। তার অসংখ্য পাঠকের মধ্যে একজন আমি। কোনো দিন তার কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ হয়নি। আমার অনেক ইচ্ছার মধ্যে যদিও এটি একটি ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তার সৃষ্টির কাছাকাছি থাকাও তো তার কাছাকাছি থাকারই সমান। ছোটবেলায় যখন কোথাও কেউ নেই নাটক মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখতাম, সত্যি কথা বলতে কি তখনো কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে ভালো জানতাম না। বয়সটাও অনেক কম ছিল। তখন শুধু বাকের ভাই, বদি এসব চরিত্র নিয়ে এক ধরনের ইমোশন ছিল। বহুব্রীহি দেখেছি, কিন্তু তখনো হূমায়ুন আহমেদকে জানতাম না। পরে বহুব্রীহি উপন্যাস পড়ে এক অন্যরকম অনুভূতি হয়েছিল। মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হয়ে কলেজে পড়ার সময় বই পড়ার সুযোগ এলো। কলেজ লাইব্রেরিতে প্রচুর বই ছিল। প্রথম বছরে একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটি কার্ড বরাদ্দ ছিল। প্রতি কার্ডে আঠারোটি বই পড়া যেত। আমি আমার কার্ড দিয়ে প্রথম তুললাম হুমায়ূন আহমেদের ১৯৭১ উপন্যাসটি। শেষ করলাম এক নিঃশ্বাসে। আমার প্রাণ তখন আরো বই চায়। প্রথম বছর নিজের আঠারোটি বই পড়া শেষে বন্ধুর কার্ড দিয়ে আরো আঠারোটি পড়েছিলাম। তবে এ সময়টাতে হুমায়ূন আহমেদের কোনো বই পড়া হয়নি। তখন মফস্বল বা গ্রামে বই পড়ার রীতি এতটা ছিল না। বিশেষ করে তা যদি আমার মতো নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার হয়। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেওয়ার পর আমার হাতে এলো মিসির আলীর অমনিবাশ বই। বলা বাহুল্য, ধার করা। যে বইটির গল্প নিয়ে পরে কয়েকটি আলাদা আলাদা বই প্রকাশিত হয়েছে। এর প্রথম লেখা ছিল খুব সম্ভবত দেবী। মিসির আলীর নামের শক্ত লজিকের মানুষের সঙ্গে সেই পরিচয়। ভালো লাগাও তখন থেকেই। এত স্পষ্ট বর্ণনা বলে আমার মনে হয়েছে যে, চোখ বন্ধ করলেই আমার মন মিসির আলীকে তৈরি করে নিতে পারে। হিমুর সঙ্গে পরিচয় হয় আরো পরে। তবে রুপা এবং শুভ্রর সঙ্গে ততদিনে পরিচয় হয়েছে। আমার বই পড়ার শখের পূর্ণতা পায় অনার্স পড়াকালীন। যে মেসে উঠেছিলাম সেখানে এক বড় ভাইয়ের বই পড়ার নেশা ছিল। তার রুমে প্রচুর বই ছিল। বাংলাদেশ, ভারতসহ পাশ্চাত্য দেশের বইগুলোও ছিল প্রচুর। যদিও তিনি কাউকে বই দিতেন না, কিন্তু আমার আগ্রহ দেখে শুধু আমাকেই বই ধার দিতেন। কিন্তু আমার মন খুঁজত যে লেখকের বই তার বই বড় ভাইয়ের কাছে ছিল না। ফলে সেই অতৃপ্তি থেকেই যাচ্ছিল। যাওয়া শুরু করলাম পাবলিক লাইব্রেরিতে। সেখানে খুঁজে পেলাম আমার মনের চাওয়া বইগুলো।
আমি প্রথমেই বলেছি, হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে আমার খুব বেশি কিছু জানা নেই। আমি শুধু একজন পাঠকের অন্তরের উপলব্ধিই লিখতে চেয়েছি। হুমায়ূন আহমেদের স্পর্শ যেন সফলতার অন্য নাম। সহজ, সরল সাবলীল ভাষায় পাঠককে গল্পের ভেতর টেনে নেওয়ার যে ক্ষমতা তা তার ছিল। প্রতি ঈদের দিন আজো আমি সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে চ্যানেল আইয়ের সামনে বসে থাকি হুমায়ূন আহমেদের নাটক দেখার জন্য। তিনি যেখানেই হাত দিয়েছেন সেখানেই সফল হয়েছেন। নাটকের দর্শকদের এক নির্মল বিনোদন দেয় তার নাটকগুলো। চলচ্চিত্রের কথা যদি বলি, তাহলে সেই আগুনের পরশমণি থেকে শুরু করে সবই দেখেছি। বাদশা নামদার পড়ে মনে হয়েছে ইতিহাসের এমন চমৎকার একটি বিষয় গল্পের মাধ্যমে জানা যায়, না পড়লে বিশ্বাস করাই কষ্ট। আবার দেয়াল পড়ে নিজ দেশের ইতিহাসের অনেকখানি জানতে পেরেছি। রাবণের দেশে আমি এবং আমরা বইটি পড়ে সেদেশের বিভিন্ন খুঁটিনাটি তথ্য জেনেছি। অনিল বাগচীর একদিন আমি কমপক্ষে পাঁচবার পড়েছি। প্রতিবারই পড়া শেষে অনিল ছেলেটার জন্য আমার মন এক ধরনের বিষণ্নতায় ডুবে গেছে। এ রকম অনেক অনেক স্মৃতি রয়েছে হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টিকর্মের সঙ্গে।
আমার মনে আছে, হুমায়ূন আহেমেদের মৃত্যুর খবর যখন শুনি তখন একেবারেই বিশ্বাস হয়নি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল চিকিৎসা শেষে তিনি আবার ফিরে আসবেন। আমাদের জন্য আবারো লিখবেন। প্রতি বইমেলায় খোঁজ নেব হুমায়ূন আহমেদের কী বই এসেছে। আগ্রহ নিয়ে সেই বই কিনব। তারপর রাত জেগে একটানে পড়ে শেষ করব। আমরা মিসির আলীর নতুন যুক্তি নিয়ে উপন্যাস পাব। হিমুরা হলুদ পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে রাতে রাতে রাজপথে হেঁটে বেড়াবে। সেই পাঞ্জাবির কোনো পকেট নেই। পায়ে কোনো জুতা নেই, কিন্তু তা হয়নি। যে মানুষটা জ্যোৎস্না ভালোবাসত, বৃষ্টির জল ভালোবাসত, বৃষ্টি এলেই ভিজতে নেমে যেত বলে তার অনেক লেখায় পড়েছি। তিনি চলে গেলেন। চলে গিয়েও এই আমাদের ভেতর বেঁচে রইলেন।
অলোক আচার্য্

কয়েকদিন আগে ভারতের একটি চ্যানেলে দেখলাম বাংলাদেশের তুমুল জনপ্রিয় একটি নাটক সেদেশে প্রচারিত হবে। বিষয়টি আমার খুব ভালো লাগল। কারণ, সে দেশের সিরিয়াল দেখতে দেখতে আমরা যখন বিরক্ত তখন অন্তত আমাদের দেশের সংস্কৃতির একটা অংশ সেদেশে দেখানো হবে ভেবে আনন্দ পেলাম। যে নাটকটি সেখানে দেখানো হবে সেটি হুমায়ূন আহমেদের আজ রবিবার। একসময় যা আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখেছি। তিনি দেখিয়েছেন বাংলা সাহিত্যে কীভাবে পাঠক টানতে হয় এবং ধরে রাখতে হয়, কীভাবে নাটকে গুণগত পরিবর্তন এনে মানুষকে টিভি সেটের সামনে বসিয়ে রাখা যায়। তিনি আমাদের দেশের প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ।
একটা সময় একেকজন লেখকের বা সম্মিলিত কয়েকজন লেখক কবির লেখায় প্রভাবিত হয়ে লেখালেখি চলে। এখন বেশিরভাগ লেখাতেই হুমায়ূন আহমেদের লেখার ছায়া, নাটকগুলোতেও হুমায়ূন আহমেদ। মোটকথা, হুমায়ূন আহমেদ বাঙালি জাতির প্রাণের মাঝে বসে আছেন।
১৩ নভেম্বর বাংলা সাহিত্যের নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন। তার কাজ, তার সৃষ্টি বিশাল। তা বিশ্লেষণ করার জ্ঞান বা দক্ষতা কোনোটাই আমার নেই। আমি তা করবও না। হুমায়ূন আহমেদকে স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে গণ্য করা হয়। বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন বলতে যাকে বোঝায় তিনি ছিলেন সেরকম মানুষ। তিনি ছোটগল্প লিখেছেন, উপন্যাস লিখেছেন, চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। বিভিন্ন সময়ে তার নাটক ও সিনেমায় প্রচারিত গানগুলো তো মানুষের মুখে মুখে। তার হাত ধরে অনেক গুণী অভিনেতা নাট্যজগতে এসেছেন। পৃথিবীজুড়েই তার বহু ভক্ত-পাঠক রয়েছে। তার অসংখ্য পাঠকের মধ্যে একজন আমি। কোনো দিন তার কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ হয়নি। আমার অনেক ইচ্ছার মধ্যে যদিও এটি একটি ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তার সৃষ্টির কাছাকাছি থাকাও তো তার কাছাকাছি থাকারই সমান। ছোটবেলায় যখন কোথাও কেউ নেই নাটক মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখতাম, সত্যি কথা বলতে কি তখনো কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে ভালো জানতাম না। বয়সটাও অনেক কম ছিল। তখন শুধু বাকের ভাই, বদি এসব চরিত্র নিয়ে এক ধরনের ইমোশন ছিল। বহুব্রীহি দেখেছি, কিন্তু তখনো হূমায়ুন আহমেদকে জানতাম না। পরে বহুব্রীহি উপন্যাস পড়ে এক অন্যরকম অনুভূতি হয়েছিল। মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হয়ে কলেজে পড়ার সময় বই পড়ার সুযোগ এলো। কলেজ লাইব্রেরিতে প্রচুর বই ছিল। প্রথম বছরে একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটি কার্ড বরাদ্দ ছিল। প্রতি কার্ডে আঠারোটি বই পড়া যেত। আমি আমার কার্ড দিয়ে প্রথম তুললাম হুমায়ূন আহমেদের ১৯৭১ উপন্যাসটি। শেষ করলাম এক নিঃশ্বাসে। আমার প্রাণ তখন আরো বই চায়। প্রথম বছর নিজের আঠারোটি বই পড়া শেষে বন্ধুর কার্ড দিয়ে আরো আঠারোটি পড়েছিলাম। তবে এ সময়টাতে হুমায়ূন আহমেদের কোনো বই পড়া হয়নি। তখন মফস্বল বা গ্রামে বই পড়ার রীতি এতটা ছিল না। বিশেষ করে তা যদি আমার মতো নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার হয়। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেওয়ার পর আমার হাতে এলো মিসির আলীর অমনিবাশ বই। বলা বাহুল্য, ধার করা। যে বইটির গল্প নিয়ে পরে কয়েকটি আলাদা আলাদা বই প্রকাশিত হয়েছে। এর প্রথম লেখা ছিল খুব সম্ভবত দেবী। মিসির আলীর নামের শক্ত লজিকের মানুষের সঙ্গে সেই পরিচয়। ভালো লাগাও তখন থেকেই। এত স্পষ্ট বর্ণনা বলে আমার মনে হয়েছে যে, চোখ বন্ধ করলেই আমার মন মিসির আলীকে তৈরি করে নিতে পারে। হিমুর সঙ্গে পরিচয় হয় আরো পরে। তবে রুপা এবং শুভ্রর সঙ্গে ততদিনে পরিচয় হয়েছে। আমার বই পড়ার শখের পূর্ণতা পায় অনার্স পড়াকালীন। যে মেসে উঠেছিলাম সেখানে এক বড় ভাইয়ের বই পড়ার নেশা ছিল। তার রুমে প্রচুর বই ছিল। বাংলাদেশ, ভারতসহ পাশ্চাত্য দেশের বইগুলোও ছিল প্রচুর। যদিও তিনি কাউকে বই দিতেন না, কিন্তু আমার আগ্রহ দেখে শুধু আমাকেই বই ধার দিতেন। কিন্তু আমার মন খুঁজত যে লেখকের বই তার বই বড় ভাইয়ের কাছে ছিল না। ফলে সেই অতৃপ্তি থেকেই যাচ্ছিল। যাওয়া শুরু করলাম পাবলিক লাইব্রেরিতে। সেখানে খুঁজে পেলাম আমার মনের চাওয়া বইগুলো।
আমি প্রথমেই বলেছি, হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে আমার খুব বেশি কিছু জানা নেই। আমি শুধু একজন পাঠকের অন্তরের উপলব্ধিই লিখতে চেয়েছি। হুমায়ূন আহমেদের স্পর্শ যেন সফলতার অন্য নাম। সহজ, সরল সাবলীল ভাষায় পাঠককে গল্পের ভেতর টেনে নেওয়ার যে ক্ষমতা তা তার ছিল। প্রতি ঈদের দিন আজো আমি সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে চ্যানেল আইয়ের সামনে বসে থাকি হুমায়ূন আহমেদের নাটক দেখার জন্য। তিনি যেখানেই হাত দিয়েছেন সেখানেই সফল হয়েছেন। নাটকের দর্শকদের এক নির্মল বিনোদন দেয় তার নাটকগুলো। চলচ্চিত্রের কথা যদি বলি, তাহলে সেই আগুনের পরশমণি থেকে শুরু করে সবই দেখেছি। বাদশা নামদার পড়ে মনে হয়েছে ইতিহাসের এমন চমৎকার একটি বিষয় গল্পের মাধ্যমে জানা যায়, না পড়লে বিশ্বাস করাই কষ্ট। আবার দেয়াল পড়ে নিজ দেশের ইতিহাসের অনেকখানি জানতে পেরেছি। রাবণের দেশে আমি এবং আমরা বইটি পড়ে সেদেশের বিভিন্ন খুঁটিনাটি তথ্য জেনেছি। অনিল বাগচীর একদিন আমি কমপক্ষে পাঁচবার পড়েছি। প্রতিবারই পড়া শেষে অনিল ছেলেটার জন্য আমার মন এক ধরনের বিষণ্নতায় ডুবে গেছে। এ রকম অনেক অনেক স্মৃতি রয়েছে হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টিকর্মের সঙ্গে।
আমার মনে আছে, হুমায়ূন আহেমেদের মৃত্যুর খবর যখন শুনি তখন একেবারেই বিশ্বাস হয়নি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল চিকিৎসা শেষে তিনি আবার ফিরে আসবেন। আমাদের জন্য আবারো লিখবেন। প্রতি বইমেলায় খোঁজ নেব হুমায়ূন আহমেদের কী বই এসেছে। আগ্রহ নিয়ে সেই বই কিনব। তারপর রাত জেগে একটানে পড়ে শেষ করব। আমরা মিসির আলীর নতুন যুক্তি নিয়ে উপন্যাস পাব। হিমুরা হলুদ পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে রাতে রাতে রাজপথে হেঁটে বেড়াবে। সেই পাঞ্জাবির কোনো পকেট নেই। পায়ে কোনো জুতা নেই, কিন্তু তা হয়নি। যে মানুষটা জ্যোৎস্না ভালোবাসত, বৃষ্টির জল ভালোবাসত, বৃষ্টি এলেই ভিজতে নেমে যেত বলে তার অনেক লেখায় পড়েছি। তিনি চলে গেলেন। চলে গিয়েও এই আমাদের ভেতর বেঁচে রইলেন।
অলোক আচার্য্
No comments:
Post a Comment