Friday, November 25, 2016

পেশাদার ধর্ষক!

নাটোরের বড়াইগ্রামে চাঁন্দাই গ্রামে কবিরাজির আড়ালে পর্নব্যবসা করে আসছেন আকিল আহমেদ (৪৮) নামের এক কবিরাজ। স্থানীয় এক কেবল ব্যবসায়ীর সহায়তায় ভুক্তভোগীদের ভিডিওচিত্র ধারণ করে তা দিয়েই ব্যবসা করছে এই সিন্ডিকেট। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে নির্যাতিত এক স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় কবিরাজসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।মামলায় অভিযুক্তরা হলেন—কবিরাজ আল আমিন ওরফে আকিল কবিরাজ, আকিলের সহযোগী তাছলিমা খাতুন এবং ভিডিওগ্রাফার রঞ্জু। অভিযুক্তরা বড়াইগ্রামের চান্দাই গ্রামের বাসিন্দা। জানা গেছে, মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কবিরাজির নামে কিশোরী ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়লে বুধবার রাতে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী আকিল আহমেদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে। ঘটনার পর থেকে আকিল পলাতক রয়েছে। আকিল চাঁন্দাই গ্রামের আব্দুল বারী সরদার ঝুলনের ছেলে।
এলাকাবাসী ও ভূক্তভোগীরা জানায়, এক বছর আগে চাঁন্দাই উচ্চবিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৫) কবিরাজির মাধ্যমে তার সাবেক প্রেমিকের সঙ্গে মিলিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখায় আকিল আহমেদ। পরে তার কথামতো রাত ১১টার দিকে মেয়েটি তার বাড়িতে এলে কবিরাজির ভান করে এক পর্যায়ে তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় স্থানীয় কেবল ব্যবসায়ী রঞ্জুসহ কয়েক সহযোগীর সহায়তায় ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ধারণ করে রাখে। পরে এ ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে গত এক বছর যাবৎ একাধিকবার মেয়েটিকে ধর্ষণ করে আকিল।কিছুদিন আগে বিকেলে ওই ছাত্রীর সঙ্গে আকিলের শারীরিক মিলনের সময় অপর এক মেয়ে (১৩) দেখে ফেলে। বিষয়টি বুঝতে পেরে পরেরদিন কৌশলে ওই মেয়েটিকেও আকিল তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে ভিডিও করে রাখে। সম্প্রতি মেয়ে দুটি তার সঙ্গে শারীরিক মেলামেশায় রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়ে দুটিকে ধর্ষণের ভিডিওচিত্র এলাকায় ছড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানে ফুটেজটি এলাকায় সবার মোবাইলে ছড়িয়ে পড়লে লোকলজ্জায় মেয়ে দুটির পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। এখন তারা ও তাদের পরিবারের সদস্যরাও বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না।
আকিল ও রঞ্জুদের আরো অপকর্মের প্রমাণ মিলছে এলাকাজুড়ে। ওই দুই ছাত্রী ছাড়াও আরো ৭-৮ জন তরুণীর সঙ্গে এমন আচরণের খবর প্রকাশ পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার মানুষদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়ায় ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।জানা গেছে, আকিল রঞ্জুসহ একটি চক্র প্রথমে কবিরাজি ও পরে গোপন ভিডিও ধারণ করে তার ফাঁদে ফেলে গ্রামের সহজ-সরল মেয়েদের সর্বনাশ করতো। শুধু তাই নয়, নানাভাবে এসব ভিডিও ধারণ শেষে তার সিডি তৈরি করে বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করতো। এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর আকিল ও রঞ্জু পলাতক রয়েছেন। চক্রের অন্য সদস্যদের ব্যাপারে অনেকে মুখ খুলছেন না লোকলজ্জার ভয়ে। এ ঘটনায় ওই দুইছাত্রীর অভিভাবকরা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
চাঁন্দাই উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইয়াহিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বর্তমানে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা আর স্কুলে আসছে না। এমন কাজ যাতে পুনরায় না হয় সে ব্যাপারে সবার সজাগ থাকা দরকার। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহরিয়ার খান জানান, এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে। দোষীদের আটকের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

No comments:

Post a Comment