স্বামী নির্যাতনে শীর্ষে মিশর, ভারত তৃতীয়!

স্বামীর হাতে স্ত্রীর নির্যাতিত হওয়ার ঘটনা এশিয়া ও আফ্রিকায় নিত্যদিনের বিষয় হিসেবেই দেখা হয়। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ান দেশ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানে ‘স্বামী’ মানেই যেন নির্যাতনকারী আর ‘স্ত্রী’ মানে অবলা আর অসহায়ত্বের প্রতীক। কিন্তু জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক জরিপে প্রকাশিত হয়েছে বিস্ময়কর তথ্য। সেই জরিপে উন্মোচিত হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্ত্রীর হাতে স্বামীর নির্যাতনের চিত্র। আর তাতে ভারতীয় নারীদের পাওয়া গেছে স্বামী নির্যাতনকারী স্ত্রীদের তালিকার ওপরের দিকেই।
ইউএন বা জাতিসংঘের এই জরিপে দেখা গেছে স্বামী নির্যাতনের ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে মিশরীয় নারীরা। দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য। অন্যদিকে, ভারতীয় নারীরা রয়েছে তৃতীয়স্থানে।
এই নির্যাতনের মধ্যে মৌখিক আক্রমণ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে শারীরিকভাবে আক্রমণের ঘটনাও।
জরিপের প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে, স্ত্রীরা কেবল খালি হাতে স্বামীকে নির্যাতন করে না। তারা নির্যাতনের সময় আলপিন, বেল্টস, বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র, রানাঘরে ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র (যেমন : রুটির বানানোর বেলুন), জুতা ইত্যাদি ব্যবহার করে। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে নির্যাতনের আগে স্বামীকে সুকৌশলে ঘুমের ঔষুধ খাওয়ানোরও প্রমাণ মিলেছে।
অবশ্য এসব নির্যাতনের ঘটনায় পুরুষদের দোষ কোনো অংশে কম নয় বলে জরিপে প্রতীয়মান হয়েছে। কারণ, বেশিরভার ক্ষেত্রে প্রতারণা, স্ত্রীকে ফাঁকি দিয়ে অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্ক, মদ ও বিভিন্ন প্রকার মাদকাসক্তির কারণে স্ত্রীর হাতে নির্যাতনের শিকার হন স্বামীরা।
সাধারণত ধর্মীয় সংস্কৃতির কারণে মুসলিম দেশগুলোর নারীদের স্বামীভক্ত বা স্বামীর অনুগত হিসেবেই ভাবা হয়। কিন্তু সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছে মুসলিম দেশ মিশরের নারীরা। সেখানে স্ত্রীর হাতে স্বামীর নির্যাতিত হওয়ার ঘটনা অহরহই ঘটে বলে জরিপের ফলে বলা হয়েছে। সঙ্গে এটাও বলা হয়েছে যে স্বামী নির্যাতনকারী স্ত্রীদের ৬৬ শতাংশই পরবর্তীতে স্বামীকে দোষারোপ করে পারিবারিক আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করে।
জাতিসংঘ পরিচালিত এই জরিপ যেন প্রমাণ করে দিচ্ছে যে পারিবারিক নির্যাতনের ক্ষেত্রে আসলে নারী-পুরুষ বলে কোনো কথা নেই; সেই লিঙ্গ ভেদাভেদ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে স্বামীরাও নীরবে নিভৃতে স্ত্রীদের কাছ থেকে নির্যাতন হজম করে চলেছেন।
No comments:
Post a Comment