Thursday, August 25, 2016

ঘরে ঘরে এ বার কম খরচে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবে ব্যাকটেরিয়া!

ব্যাকটেরিয়া দিয়ে বানানো ন্যানো-ওয়্যার আমার,আপনার ঘরে এ বার বিদ্যুৎ পৌছে দেবে ! অফুরান বিদ্যুৎ,খুবই কম খরচে। যে-বিদ্যুতে চলবে মোবাইল ফোন। ট্রানজিস্টর, ক্যাপাসিটর। চলবে মোবাইল টেলিভিশন, অডিও, ভিডিও রেকর্ডার। অপারেশন থিয়েটারে হৃদযন্ত্রের ধুকপুকানি বা কিডনির কাজকর্ম বোঝার মেডিক্যাল সেন্সরেও বিদ্যুৎ জোগাবে এ বার ‘দধীচী’ ব্যাকটেরিয়ার শরীর দিয়ে গড়া বিদ্যুৎ পরিবাহী তার। আমাদের জীবনে, যাপনে আরও বেশি করে ঢুকে পড়বে ব্যাকটেরিয়ারা। এই অণুজীব আরও বেশি করে হয়ে উঠবে আমাদের বন্ধু!
আপাদমস্তক ব্যাকটেরিয়ার শরীর দিয়ে গড়া বিদ্যুৎ পরিবাহী তার-ই (ন্যানো-ওয়্যার) আর কয়েক বছর পর আমাদের ঘর, সংসার, কাজের জগতে ব্যবহৃত যাবতীয় ইলেকট্রনিক গ্যাজেটস চালাবে। তাকে যখন তখন, যত্রতত্র বয়ে নিয়ে বেড়ানোর সাহস জোগাবে। যুদ্ধক্ষেত্রে জওয়ানদের খাবারদাবার, জামাকাপড়, ওষুধপত্র, অস্ত্র পাঠাতে বিমানের বিকল্প জ্বালানি বানানোরও মূল রসদটা জোগাবে এই ব্যাকটেরিয়াই।
কোনও গল্পকথা নয়। নয় কোনও কল্প কাহিনীও। নজরকাড়া এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান-জার্নাল ‘নেচার-ন্যানোটেকনোলজি’-র অগস্ট সংখ্যায়। যার শিরোনাম- ‘সিন্থেটিক বায়োলজিক্যাল প্রোটিন ন্যানো-ওয়্যারস্‌ উইথ হাই কনডাক্টিভিটি’। মূল গবেষক আমহার্স্টের ম্যাসাচুসেট্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, মাইক্রো-বায়োলজিস্ট ডেরেক লাভলে গবেষণাপত্রে লিখেছেন, ‘‘ব্যাকটেরিয়ার শরীর দিয়ে গড়া এই বিদ্যুৎ পরিবাহী তার বা ন্যানো-ওয়্যার বানানো যাবে সৌরশক্তি, কার্বন ডাই-অক্সাইড বা উদ্ভিদের বর্জ্য পদার্থের মতো পরিবেশ-বান্ধব অপ্রচলিত শক্তির উৎসগুলিকেো ব্যবহার করেই। ব্যাকটেরিয়ার শরীর দিয়ে গড়া এই বিদ্যুতের তারগুলি শিশুরা মুখে দিলেও, তা ক্ষতিকর হবে না (নন-টক্সিক)। এর মধ্যে থাকবে বিশেষ একটি প্রোটিন। ‘ট্রিপ্‌টোফান’। এই বিদ্যুতের তারের ব্যাস হবে দেড় ন্যানো-মিটার। মানে, আমাদের চুলের চেয়ে ৬০ হাজার গুণ বেশি পাতলা (থিনার)। ফলে, এই তারগুলি ব্যবহার করে সূক্ষ্ণ থেকে সূক্ষ্ণতর ইলেকট্রনিক গ্যাজেটস বানানো যাবে। যা খুব সহজে বহনযোগ্যও হবে।’’ গবেষকদলে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে দুই ভারতীয়ের। এক জন বাঙালি- রমেশ ওয়াই অধিকারী। অন্য জন- মুম্বইয়ের সন্তান নিখিল মভলঙ্কর।
যে ভাবে ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে দিয়ে চলে বিদ্যুৎ
--------------------------------------------------------
ব্যাকটেরিয়া দিয়ে গড়া বিদ্যুৎ পরিবাহী ন্যানোওয়্যার।কোন ব্যাকটেরিয়া দিয়ে বানানো যাবে এই কম খরচে বেশি বিদ্যুৎ বয়ে নিয়ে যাওয়ার তার? ইয়েল বিশ্ববিদ্যালেয়ের বায়োফিজিক্স, ন্যানো-টেকনোলজি ও মাইক্রো-বায়োলজির গবেষক রমেশ ওয়াই অধিকারী বলছেন, ‘‘আমরা গবেষণাটা চালিয়েছি বিশেষ এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার ওপর। যারা মাটিতে মিশে থাকে। তাই তাদের নাম ‘জিওব্যাকটার’। যাদের বৈজ্ঞানিক নাম- ‘জিওব্যাকটার মেটালিরেডিওসেন্স’। থাকে মাটিতে। এরাই আপাতত প্রথম হদিশ মেলা কোনও ব্যাকটেরিয়া যারা জৈব পদার্থকে (যৌগ) মরচের মতো এক ধরনের খনিজ পদার্থ আয়রন অক্সাইড দিয়ে জারিত করে (অক্সিডাইজ) কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস তৈরি করে। মানে, ওই ব্যাকটেরিয়াকে এই কাজে বাড়তি শক্তি জোগায় আয়রন অক্সাইড, তার হবে অক্সিজেন।

No comments:

Post a Comment