Tuesday, February 28, 2017

‘পপসম্রাট’ আজম খানের জন্মদিনে


২৮ ফেব্রুয়ারি 'পপসম্রাট' বা 'পপগুরু' খ্যাত বাংলা সংগীতের সম্রাট আজম খানের জন্মদিন। বাংলাদেশে স্বাধীনতা পরবর্তী একটি প্রজন্মকে রীতিমতো কাঁপিয়েছেন তিনি। শুধু বাংলাদেশেই নয় গোটা উপমহাদেশেও আজম খান পেয়েছিলেন অসাধারণ জনপ্রিয়তা। আজম খানকে তাই বলা হয় 'পপসম্রাট'।
১৯৭১ সালের পর আজম খান 'উচ্চারণ' নামে একটি ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন। উচ্চারণের গান সঙ্গীত জগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। সেখানে আজম খানের সঙ্গে তার বন্ধু নিলু আর মনসুর গিটার বাজিয়েছিলেন, সাদেক বাজিয়েছিলেন ড্রাম আর আজম খান প্রধান ভোকাল হিসেবে গান করেন।
১৯৭২ সালে বিটিভিতে একটি গানের অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার মাধ্যমে তাদের গান তরুনদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সেই অনুষ্ঠানের 'এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে' ও 'চার কালেমা সাক্ষী দেবে' গান দু'টি সরাসরি প্রচার হলো। ব্যাপক প্রশংসা আর তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দেয় এ দু'টো গান। দেশজুড়ে পরিচিতি পায় তাদের গান।
১৯৭৪ সালের তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে আরেকটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ (রেললাইনের ঐ বস্তিতে) শিরোনামের গানটি গেয়ে হৈ-চৈ ফেলে দেন।
আজম খানের পাড়ার বন্ধু ছিলেন ফিরোজ সাঁই। পরবর্তীকালে তার মাধ্যমে পরিচিত হন ফকির আলমগীর, ফেরদৌস ওয়াহিদ, পিলু মমতাজের সাথে। এক সাথে বেশ কয়েকটা জনপ্রিয় গান করেন তারা। এরই মধ্যে আরেক বন্ধু ইশতিয়াকের পরামর্শে সৃষ্টি করেন একটি এসিড-রক ঘরানার গান 'জীবনে কিছু পাবোনা এ হে হে!' বলা হয়, এটি বাংলা গানের ইতিহাসে- প্রথম হার্ডরক!
বিশ্বের বেশ ক'টি দেশে কনসার্ট পরিবেশন করেন আজম খান। আজম খানের জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে: বাংলাদেশ, ওরে সালেকা, ওরে মালেকা, আলাল ও দুলাল, অনামিকা, অভিমানী, আসি আসি বলে ইত্যাদি।
ব্যক্তিগত জীবনে সহজ সরল জীবন যাপন করতেন তিনি। আজম খান বাংলাদেশের প্রখ্যাত সুরকার আলম খানের ছোটভাই। ১৯৭১ সালে একজন সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঢাকায় সংঘটিত কয়েকটি গেরিলা অভিযানে অংশ নেন আজম খান। একবছর ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে ২০১১ সালের ৫ জুন ৬১ বছর বয়সে মারা যান তিনি।

No comments:

Post a Comment