Wednesday, August 2, 2017

৫৭ ধারায় মামলা নিতে অনুমতি লাগবে: আইজিপি‘
এই ধারা বাতিলের চেয়ে অপপ্রয়োগ ঠেকানো জরুরি: ওবায়দুল কাদের

তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় কোনো মামলা নিতে পুলিশ সদরদফতরের আইন শাখার অনুমতি লাগবে। ইতোমধ্যেই শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক পুলিশ সদরদফতরে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এই নির্দেশ দিয়ে বলেন, দেশের যে কোনো থানায় ৫৭ ধারায় মামলা নিতে হলে পুলিশ সদরদফতরের আইন শাখার অনুমতি লাগবে। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার অপব্যহার হচ্ছে অভিযোগ করে এই ধারাটি বাতিলে দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন করে আসছেন সাংবাদিকরা। এই আন্দোলনে অনেক সামাজিক সংগঠনও রয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশনা দেয়া হলো।অপরদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের চেয়ে এর অপপ্রয়োগ ঠেকানো জরুরি। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণের জন্য ৫৭ ধারা করা হয়েছিল। কিন্তু তুচ্ছ কারণে এর অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে কি না সেটি খতিয়ে দেখতে হবে। মন্ত্রী বলেন, খুলনায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা ও গ্রেফতার তথ্যপ্রযুক্তি আইনের অপপ্রয়োগ। এই অপপ্রয়োগ বন্ধ করা দরকার। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্যাকেজ-৩ ও প্যাকেজ ৪-এর আওতায় উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভায়াডাক্ট (উড়াল রেলপথ) ও নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যয় হবে চার হাজার ২৩০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের মধ্যে এ কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই দুই প্যাকেজের ঠিকাদারি কাজ পেয়েছে ইটালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড (ইটাল-থাই) এবং চীনের প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড। গত ৩ মে প্রতিষ্ঠান দুটির সঙ্গে এ-সংক্রান্ত চুক্তি করা হয়। প্যাকেজ ২-এর আওতায় এক হাজার ৫৯৬ কোটি টাকায় মেট্রো রেলের ডিপোও নির্মাণ করবে ইটাল-থাই ও সিনোহাইড্রো।
প্রতিষ্ঠান দুটি বিমানবন্দর থেকে চিটাগাং রোডের কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়ালপথ) নির্মাণ করছে। এ প্রকল্পে কাঙ্ক্ষিত গতি না থাকলেও, প্রতিষ্ঠান দুটি সরকারের অগ্রাধিকারের মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ পেয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ১০ প্যাকেজে সাতটির ঠিকাদার সিনোহাইড্রো। প্রতিষ্ঠানটি পদ্মা সেতুর নদীশাসনের কাজও করছে। এ দুটি প্রকল্পেই ধীরগতিতে কাজের অভিযোগ রয়েছে সিনোহাইড্রোর বিরুদ্ধে। যদিও সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, সকল নিয়মনীতি মেনে মেট্রোরেলে ঠিকাদারি কাজ পেয়েছে ইটাল-থাই ও সিনোহাইড্রো।
গত নভেম্বরে মেট্রো রেল নির্মাণ এলাকা, মিরপুর ১০ থেকে আগারগাঁও ভূগর্ভস্থ পরিসেবা লাইন স্থানান্তর কাজ শুরু হয়। এতে ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের ব্যাপক দুর্ভোগ হচ্ছে। ভায়াডাক্ট ও স্টেশন নির্মাণকাজের কারণে একই রকম দুর্ভোগের শঙ্কা রয়েছে। উন্নয়নের স্বার্থে সাময়িক দুর্ভোগ মেনে নগরবাসীর প্রতি একাধিকবার অনুরোধ জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্যাকেজ-৫ ও ৬-এর আওতায় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভায়াডাক্ট ও স্টেশন নির্মাণ করা হবে। উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রো রেল প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা ঋণ দেবে জাইকা। বাকি টাকা জোগাবে সরকার।

No comments:

Post a Comment