Thursday, February 18, 2021

 অদ্ভুত মাছ বৃষ্টি

মেঘ থেকে বৃষ্টি হয়। তবে সব বৃষ্টিতেই যে শীতল জল আর বরফের দানা পড়ে এমন কিন্তু নয়। অদ্ভুত বৃষ্টিপাতের উদাহরণও রয়েছে। বৃষ্টিতে আকাশ থেকে মাছ, মাংস, স্কুইড, ব্যাঙ, মাকড়সা পতিত হয়েছে। অবাক বিস্ময়ের অদ্ভুত বৃষ্টি প্রকৃতির এক মজার খেলা। হন্ডুরাস এমন একটি স্পেনিস শব্দ যার অর্থ হল ‘গহীন’। ‘ওন্দোরাজ’ হল এর স্পেনিশ উচ্চারণ। এ দেশটিকে এক সময় বলা হত স্পেনিশ হুন্ডুরাস। কারণ ওই সময়ে ব্রিটিশ সম্রাজ্যে আর একটি দেশ ছিল হন্ডুরাস নামে। সে দেশটি এখন বেলিজ দেশের একটি অংশে পরিণত হয়েছে।
মাছ বৃষ্টি হন্ডুরাসের লোকlচার ঘটনায় একটি রহস্যময় ঘটনা। মে থেকে জুলাই মাসের মাঝামাঝি এই অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটে থাকে। প্রথমে আকাশে প্রচুর মেঘ জমে, এর পর শুরু হয় বৃষ্টিপাত। সেই সঙ্গে থাকে প্রবল বাতাস, থাকে বিদ্যুৎ চমক আর বজ্রপাত। এই বৃষ্টির সঙ্গে মাটিতে অসংখ্য জিবন্ত মাছ পড়ে এবং বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর অসংখ্য মাছ মাটির উপর পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ দেশের লোকজন এ মাছ নিয়ে রান্না করে। ১৯৯৮ সাল থেকে এ ঘটনার জন্য প্রতি বছর উৎসবের আয়োজন করা হয় এ দেশেটিতে। আটলান্টিক মহাসাগরের টর্নেডো এ মাছ উড়িয়ে নিয়ে এসে এ শহরে ফেলে। তাই প্রতি বছর একেই সময়ে এ মাছ বৃষ্টি হতে দেখা যায়। এ মাছ গুলো হল স্বাদু পানির মাছ। এ মাছ বৃষ্টি নিয়ে অনেক লোক কথাও প্রচলিত আছে।অনেকের মতে,এ স্বাদু পানির মাছগুলো ভূগর্ভস্থ জলধারে আশ্রয় নেয়। ভারী বৃষ্টিতে মাটি ধুয়ে গেলে মাছ গুলো দেখা যায়। অনেকে বলে, ১৮৫৬–১৮৬৪ সালে এ দেশে এক সাধু আসার কারণে এ মাছ বৃষ্টি হয়। প্রচলিত রয়েছে, এ দেশের অভাবী লোকদের জন্য সাধু সৃষ্টি কর্তার কাছে তাদের খাবারের জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। তারপর থেকেই এই মাছ বৃষ্টি শুরু হয়। হঠাৎ শ্রীলঙ্কার এক গ্রামে মাছ-বৃষ্টি। গ্রামবাসী পথের ধারে, মাঠে মাছ কুড়িয়ে বেড়াচ্ছেন। আকাশ থেকে বৃষ্টিজলের সঙ্গে অবাধে ঝরেছে এই মাছগুলো। আকারে বেশ ছোট ছোট এই মাছগুলো ছিল একদম তাজা। কোনোকোনোটা দিব্যি লাফাচ্ছিল। আগ্রহী মানুষ বাটিতে করে সংগ্রহ করেছেন মাছগুলো। কুড়ানো মাছভর্তি পাত্রে পানি ঢেলে দিতেই লাফিয়ে উঠল মাছ। পুরো ঘটনাটি গ্রামবাসীকে এতটাই মুগ্ধ করেছে যেমনটি হয় রূপকথার গল্প শুনে। এই অবাক করা ঘটনার সাক্ষী হয়েছে শ্রীলঙ্কার চিলাও জেলার একটি গ্রামের বাসিন্দারা। অস্বাভাবিক এই মাছ-বৃষ্টিতে দারুণ আনন্দিত তারা। মাছ-বৃষ্টির এই খবর ফলাও করে জানিয়েছে বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলো।
গ্রামবাসী জানিয়েছেন, ঘরের চালে আকাশ থেকে ভারী কিছু পড়ার শব্দে তারা বাইরে ছুটে আসেন। খোলা মাঠে, বাড়ির আশপাশে, রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে মাছ পড়ে থাকতে দেখেন তারা। ওই গ্রামের বাসিন্দারা সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ কিলোগ্রামের মতো মাছ কুড়িয়েছেন বলে জানায় বিবিসি। খাওয়ার উপযোগী এই মাছ-বৃষ্টিতে আনন্দ-ভোজ শুরু হয়ে যায় গ্রামটিতে। তিন থেকে পাঁচ ইঞ্চি লম্বা এই মাছগুলো শ্রীলঙ্কায় স্থানীয়ভাবে বেশ পরিচিত। তবে মাছ-বৃষ্টি হওয়ার বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, 'মাছ-বৃষ্টি' অস্বাভাবিক হলেও প্রকৃতিতে এটা ঘটে থাকে। মাছ সমৃদ্ধ কোনো কম গভীরতার জলাশয়ের ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের ঘূর্ণিবায়ুর কেন্দ্র বয়ে গেলে এমন জলঘূর্ণি ঘটতে পারে। এ সময় পানিতে থাকা মাছ, ব্যাঙসহ সবকিছুই ঘূর্ণিবায়ুর সঙ্গে আকাশে উঠে যায়। আকাশে উঠে যাওয়ার পর ঝড়ের সঙ্গে অনেকদূরে চলে যেতে পারে এসব জলজ প্রাণীও। এমনকি এই জলঘূর্ণি থেমে যাওয়ার পরও মেঘের স্তরের কারণে এরা সাময়িকভাবে আটকে থাকতে পারে ওপরেই। আর ঝড়, জলঘূর্ণি থেমে গেলে মেঘের ভেতর থেকে ঝরে পড়তে শুরু করে জলজ প্রাণীগুলো।
শ্রীলঙ্কায় এই মাছ-বৃষ্টি অবশ্য এবারই প্রথম নয়। ২০১২ সালে দেশটির দক্ষিণা লে 'চিংড়ি-বৃষ্টি' হওয়ার কথা জানা গিয়েছিল। একই বছর লাল ও হলুদ রঙের শিলাখণ্ডের অস্বাভাবিক শিলাবৃষ্টি হয় শ্রীলঙ্কায়। ওই শিলাগুলো মহাকাশ থেকে পতিত বলে ধারণা করেন বিজ্ঞানীরা। জলবায়ুর এই বিশেষ পরিবর্তন এবং শ্রীলঙ্কায় এই মাছ-বৃষ্টি ও মহাকাশের শিলাবৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করছেন মার্কিন ও ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা।
ভিডিও দেখতে ছবিতে ক্লিক করুনঃ
Hunduras mach bristi | হুন্ডুরাসের মাছ বৃষ্টি | Bangla infotainer

No comments:

Post a Comment