২০ জানুয়ারি শপথ নিচ্ছেন রিপাবলিকান দলের আলোড়িত-আলোচিত যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিন ক্যাপিটল হিলে বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্তত ৯৯টি সংগঠন। এরই মধ্যে ২৭টি সংগঠন শপথ অনুষ্ঠানের বাইরে বিক্ষোভ দেখানোর অনুমতি পেয়েছে বলে ওয়াশিংটন ডিসি পুলিশ জানিয়েছে। বাকিদের আবেদনও বিবেচনা করা হচ্ছে। অন্যদিকে এদিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থান থেকে আট লাখেরও বেশি রিপাবলিকান সমর্থক ওয়াশিংটনে জড়ো হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। শপথ অনুষ্ঠান সুসম্পন্ন করতে পুলিশ ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে পুলিশি প্রস্তুতি থাকলেও বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তারা ট্রাম্পকে ‘শান্তিতে শপথ নিতে দেবেন না’। ওয়াশিংটন ডিসি পুলিশের প্রধান পিটার নিউশ্যাম বলেন, বিক্ষোভ দেখানোর সুযোগ দিলেও শপথ অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করার যেকোনো চেষ্টা ‘কঠোর হস্তে দমন করা হবে’। তিনি বলেন, ‘যেকোনো গোলযোগ শক্তহাতে প্রতিহত করার জন্যে যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’ শপথ অনুষ্ঠান যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে ক্যাপিটল পুলিশ, এফবিআই, ন্যাশনাল গার্ড, সিক্রেট সার্ভিস, ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিসসহ ১২টি সংস্থার সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, রিপাবলিকান সমর্থকদের ওয়াশিংটনে জড়ো হওয়ার ব্যবস্থাও করছে কর্তৃপক্ষ। তাদের যাতায়াতের জন্য নিউইয়র্ক মেট্রো এরই মধ্যে বিশেষ ট্রানজিট কার্ড বাজারে ছেড়েছে। নেওয়া হচ্ছে নিরাপত্তাসহ নানান ব্যবস্থা। নিউশ্যাম বলেন, সেদিন নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার জন্য তিন হাজার ২০০ পুলিশের পাশাপাশি ন্যাশনাল গার্ডের ৮ হাজার আর সামরিক বাহিনীর ৫ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হবে।
এদিকে, শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ডিজরাপ্ট জে ২০’ কর্মসূচির সমন্বয়কারী লেগবা কেয়ারফোর বলেন, ‘আমরা কখনোই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে দেব না। আমরা ট্রাম্পকে দমিয়ে রাখতে চাই।’ ট্রাম্পবিরোধী এ আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র ডেভিড থার্স্টন জানান, শপথের দিন কাপিটল হিলে প্রবেশের ১২টি প্রবেশপথে অবস্থান নিয়ে তারা লোকজনকে ভেতরে প্রবেশে বাধা দেবেন। তিনি আরো বলেন, ‘শপথ নেওয়ার পর আড়াই মাইল প্যারেড গ্রাউন্ডের পুরোটাই দখলে নিয়ে ট্রাম্প ও তার সমর্থকদের ব্যানার-পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড দেখানো হবে।’
গত বছরের ৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। টানা দুই সপ্তাহ বিক্ষোভ দেখানোর পর ট্রাম্পের শপথের দিন বড় ধরনের বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নেয় শতাধিক সংগঠন। একই দিন অন্তত ৪০টি শহরে বড় ধরনের বিক্ষোভ আয়োজনেরও পরিকল্পনা করা হয়েছে। আন্দোলনকারীরা নারী বিষয়ে ট্রাম্পের ‘বিকৃত মনোভাবের’ প্রতিবাদে শপথের দিন হোয়াইট হাউসের সামনে দুই লাখ নারীর বিক্ষোভ সমাবেশ করারও প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন এসব আন্দোলনে ‘সক্রিয়ভাবে’ অংশ নিচ্ছে বলে ইমিগ্র্যান্টস রাইটস অ্যান্ড রেসিয়াল জাস্টিস সেন্টারের পরিচালক কিসা ম্যাটোস জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার সুরক্ষায় ট্রাম্পের গণবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই।
No comments:
Post a Comment