এমপি রানা আ. লীগ থেকে বহিষ্কার
টাঙ্গাইলের মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিন ভাইকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে জেলা আওয়ামী লীগ।সোমবার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খানের সভাপতিত্বে জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারীরা কখনোই আওয়ামী লীগে থাকতে পারেন না; তাই তাদের দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে চার ভাইকে বহিষ্কারের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে আ. লীগ ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে শহরে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। সবার মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এমপি রানার তিন ভাই হলেন টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র শহিদুর রহমান খান মুক্তি, টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টির সাবেক প্রেসিডেন্ট জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা।
অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যাকান্ড এবং ঘাটাইল উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আবু সাঈদ রুবেলকে হত্যাচেষ্টার প্রত্যক্ষ অভিযোগ ও প্রমাণ রয়েছে এমপি রানা ও তার তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ এবং টাঙ্গাইলের সর্বস্তরের মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বসম্মতিক্রমে চার ভাইকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যপদ বাতিলের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ করা হয়। সভায় নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী ও জেলা আ. লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহার আহমেদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে চার ভাইকে বহিষ্কারের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে আ. লীগ ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে শহরে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। সবার মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। মিছিলটি জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আ. লীগ কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় বক্তব্য দেন জেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহার আহমেদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক তানভীর হাসান, আহত আবু সাঈদ রুবেলসহ অন্যরা।
নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ বলেন, তাদের চার ভাইকে শুধু দল থেকে বাদ নয়। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন শেষ হবে না।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ যুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণ করা, মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদকে হত্যা করে শহরের কলেজপাড়ায় তার বাসার সামনে ফেলে রাখা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলা দীর্ঘ তদন্তের পর এমপি আমানুর রহমান খান রানাসহ চার ভাইয়ের নাম উঠে আসে। পরে এমপি রানাকে প্রধান আসামি করা হয়। এ মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর জেলখানায় বসেই ঘাটাইলের ছাত্রলীগ নেতা আবু সাঈদকে হত্যার নির্দেশ দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে এমপি রানার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
No comments:
Post a Comment