Tuesday, January 31, 2017

স্তন্যদানের পরীক্ষা প্রকাশ্যে...!

ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর দিয়ে তিনি তার শিশুকে ছাড়াই সফর করছিলেন।এসময় তার কাছে একটি ব্রেস্ট পাম্প দেখে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাকে সন্দেহ করেন।জার্মানির বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা একজন নারীকে স্তন্যদাত্রী কি না এই পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গায়ত্রী বোস নামের এই নারী জার্মান পুলিশের কাছে এ বিষয়ে একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন।তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সামনে স্তন টিপে তাকে প্রমাণ করতে হয়েছে যে তিনি তার সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান। তিনি আরও বলেন, জার্মানিতে এরকম একটি ঘটনায় তিনি 'অপমানিত' বোধ করছেন। এভাবে এবার প্রকাশ্যে বিমানবন্দরে স্তন্যদনের পরীক্ষা দিলেন এক মা।'অপমানজনক' এই পুরো পরীক্ষা শেষ হতে সময় লাগে ৪৫ মিনিট।
জার্মান পুলিশ এই অভিযোগের ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে বলেছে, এটি তাদের রুটিন কাজের কোন অংশ নয়।বরং তোমার বাচ্চা কোথায়? প্রশ্ন করে নিরাপত্তা বাহিনীর লোকেরা তখনই তাকে পরীক্ষা করে দেখার জন্যে থামায়।ওই নারীর হাত ব্যাগেই ছিলো একটি ব্রেস্ট পাম্প। সেটি এক্স-রে মেশিনের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে তাকে সেখান থেকে অন্য একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের কণ্ঠে ছিলো অবিশ্বাসের সুর। তুমি দুধ খাওয়াচ্ছো? তাহলে তোমার বাচ্চা কোথায়? তোমার বাচ্চা সিঙ্গাপুরে থাকে? তিনি জানান, অফিসাররা তার কথা কিছুতেই বিশ্বাস করছিলো না। তখন তারা তার কাছ থেকে পাসপোর্ট নিয়ে নেন। তারপর একজন নারী পুলিশ অফিসার তাকে একটি ঘরে নিয়ে যান আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে।
মিস বোস বলেন, ওই পুলিশ অফিসার তখন আমাকে বলেন আমি যে স্তন্যদাত্রী একজন মা সেটা প্রমাণ করে দেখাতে। তিনি আমাকে ব্লাউজ খুলে তাকে আমার স্তন দেখাতে বলেন। তারপর তিনি জানতে চান তুমি যদি বাচ্চাকে দুধ খাইয়ে থাকো তাহলে তোমার স্তনের সাথে কিছু লাগানো নেই কেন। আমি বলি, স্থায়ীভাবে লাগানোর মতো কোন জিনিস তো নেই। যখন দরকার হয় তখনই আমরা পাম্পটি ব্যবহার করি। তখন তিনি হাত দিয়ে আমাকে একটু করে দেখাতে বললেন।মিস বোস বলেন, এই ঘটনায় তিনি হতবাক হয়ে পড়েন। আমি তখন একা ছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না আমার কি হতে পারে। একসময় আমি কাঁদতে শুরু করি। তিনি জানান, পরীক্ষা করে দেখার পর কর্মকর্তারা তার পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেন এবং তাকে বিমানে উঠার অনুমতি দেন। তিনি ওই মহিলা অফিসারের নাম জানতে চাইলে তিনি এক টুকরো কাগজে তার নামটা লিখে দেন।
মিস বোস জানান, যখন তারা আমাকে ছেড়ে দেয় তখন তাদেরকে আমি বলি নিরাপত্তা পরীক্ষার জন্যে এটা কোন উপায় হলো না। আমি তাদেরকে বলি, তোমার কী বুঝতে পারছো যে এইমাত্র তোমরা আমাকে কি করেছো? তোমরা আমাকে আমার স্তন দেখাতে বলেছো! তিন জানান, অফিসার তখন বললেন, পরীক্ষা শেষ। আপনি এখন যান। প্লিজ। মনে হয়নি যে আমার প্রতি তার কোন ধরনের সহানুভূতি ছিলো।
মিস বোস একটি পরিবহন কোম্পানির ম্যানেজার। তার দুটো বাচ্চা। একটি তিন আর অপরটি সাত মাস বয়সী। ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে জার্মান পুলিশের একজন মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান আলটেনহোফেন বিবিসিকে বলেছেন, তথ্যের গোপনীয়তার কারণে এবিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে পারবেন না। তিনি বলেন, কোন যাত্রীর কাছে বিস্ফোরক রাখার সন্দেহ হলে তাকে ও তার লাগেজ পরীক্ষা করে দেখা অবশ্যই প্রয়োজন। তবে স্তন্যদাত্রী মায়ের ওপর এভাবে পরীক্ষা চালানোর কথা কোথাও বলা হয়নি।

No comments:

Post a Comment