Thursday, December 15, 2016

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কাজে লাগানোর ঘোষণা অর্থমন্ত্রীর

অবশেষে দেশের বিশাল আকারের বৈদেশিক মুদ্রার অলস রিজার্ভকে কাজে লাগানোর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি জানান, বিশাল অংকের এ রিজার্ভকে অলস না রেখে এর একাংশ বিনিয়োগে আনতে একটি তহবিল গঠন করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। আর এ তহবিল হবে ৫০০ কোটি ডলারের। তবে প্রাথমিকভাবে ১০০ কোটি ডলার নিয়ে যাত্রা শুরুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে নিজের সুনির্দিষ্ট এ পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। বড় ও লাভজনক প্রকল্পগুলোতে অর্থ জোগাতে এ তহবিল ব্যবহারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখন যার জন্য বিদেশি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে সুদ গুণতে হচ্ছে।
প্রসঙ্গত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ উত্তরোত্তর বাড়ছে, বৃহস্পতিবার এর পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। খাদ্য মজুদ সন্তোষজনক থাকায় এই বিপুল পরিমাণ ডলার অলস রাখার সমালোচনা হচ্ছে কয়েক বছর ধরে। তা বিনিয়োগে আনতে সুপারিশও করে আসছেন অর্থনীতিবিদরা। বেশ কয়েক বছর দরে আলোচনায় থাকা ‘সভরেন ফান্ড’ নিয়ে একটি কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর তাদের রিজার্ভ ব্যবহারে তহবিল গঠনের পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
শুরুতেই উচ্চ রিজার্ভের বিষয়টি তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, রিজার্ভ ইজ কোয়াইট হাই। ৩১ বিলিয়ন ডলার, যেটা আট মাসের আমদানির সমান। সেখানে যে টাকা হয়েছে, আমরা এখন বিদেশ থেকে টাকা না নিয়ে যদি আমি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এই টাকা নিই, এটা দেশের জন্যও ভালো। তাতে ঋণের সুদ বাংলাদেশ ব্যাংক পাবে বলে অর্থ দেশেই থাকবে, যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বলেও মনে করছেন তিনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ তহবিল থেকে কী ধরনের প্রকল্পে অর্থ জোগানো হবে, তা নিয়েও কথা বলেন তিনি। এই ফান্ডে প্রকল্প যেগুলো আমরা নেব, দে মাস্ট বি ইকোনোমিকালি ভেরি সাউন্ড। যে কোন প্রকল্প নেওয়া যাবে না। এমন প্রকল্প নিতে হবে, যেগুলো থেকে শেষ পর্যন্ত টাকা আসবে।
মুহিত বলেন, সভরেন বন্ড ইস্যু নিয়ে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে এমন সুপারিশ এসেছে। তবে এই তহবিলটি গঠন করতে একটু সময় লাগবে। তিনি বলেন, পুরো রিপোর্ট এখনও পড়ি নাই, যতটুকু শুনেছি ও পড়েছি, তাতে আমার মনে হয়, আই শ্যাল হ্যাভ এ ল ফর ক্রিয়েটিং দিস সভরেন ফান্ড। ল করতে গেলে ৩-৪ মাস সময় লেগে যাবে। পরবর্তী সেশনে দেব। ইচ্ছা থাকল। আই নিড দ্য মানি ফর দ্য মেগা প্রজেক্টস। দিস উড বি সামথিং নিউ ফর বাংলাদেশ। আগামী মাসেই বিষয়টি মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলার ইচ্ছার কথাও জানান তিনি।
সভরেন বন্ড বিষয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশের পর অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে বিশেষ তহবিলের বিষয়টি উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী বলেন, আজকে আমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাবজেক্ট ছিল, সভরেন ফান্ড। আমি কয়েকবার বোধহয় এটা নিয়ে বলেছি যে, আমরা আমাদের রিজার্ভে যে পয়সা আছে, সেটা দিয়ে সভরেন ফান্ড করতে চাই। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী বলেন, দিস ইজ নট বন্ড, ফান্ড।
বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে মুসলিম চৌধুরী বলেন, যেহেতু আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ একটা বড় উচ্চতায় পৌছেছে, সেহেতু সেখান থেকে একটা পোরশন (অংশ) সরিয়ে নিয়ে একটা ফান্ড গঠন করা হবে। সেই ফান্ড থেকে সরকার বড় বড় প্রকল্পে প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যবহার করতে পারবে। এটা নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। মন্ত্রিসভায় যাবে। সুদের হার কী হবে, কীভাবে শোধ করবে, সেগুলো পরে সিদ্ধান্ত হবে।

No comments:

Post a Comment