Wednesday, May 10, 2023

 

আম ও লিচু বাগানে বস্তায় আদা চাষ, লাভবান চাষি রুহুল আমিন!

আম ও লিচু বাগানে বস্তায় আদা চাষ, লাভবান চাষি রুহুল আমিন!
আম ও লিচু বাগানে বস্তায় আদা চাষে সফল রুহুল আমিন। তিনি তাদের ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পেরেছেন। তারপর বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরতে হয়। কৃষি কাজ করে সংসারের আয় উপার্জন বাড়াতে চেষ্ট করেন। ধানের জমির পাশাপাশি বিভিন্ন ফল ও ফসল উৎপাদনের চেষ্টা করেন। তারপর তিনি আম ও লিচুর বাগানে বস্তায় আদা চাষ শুরু করেন। পরিক্ষামূলক চাষে প্রথমেই সফলতা পান তিনি। তারপর বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তাকে অনুসরণ করে অনেকেই আদা চাষে আগ্রহী হয়েছেন।


জানা যায়, রুহুল আমিন নওগাঁয় পত্নীতলা উপজেলার আমবাটী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি অনলাইনের মাধ্যমে দেখে আদা চাষে আগ্রহী হন। তারপর তিনি তার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ৪ হাজার বস্তায় আদার চাষ করেন। প্রথমবারের মতো চাষ করেই তারা লাভবান হতে পারেন। তারপর বাণিজ্যিকভাবে আম ও লিচু বাগানের ফাঁকা জায়গায় ও বাড়ির পাশে চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ১৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ করছেন। এতে তারা লাভবান হচ্ছেন। তাদের দেখাদেখি এলাকার অনেক চাষিরা বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

রুহুল আমিন বলেন, আমি অনলাইনের মাধ্যমের বস্তায় আদা চাষের বিষয়টি জানতে পারি। লাভজনক মনে হওয়ায় নিজেই চাষ করবো বলে পরিকল্পনা করি। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে ৪ হাজার বস্তায় আদা করেছি। বাজারে ভাল দাম থাকায় প্রথমবারের চাষে লাভবান হতে পেরেছি। সাধারন পদ্ধতি থেকে বস্তা পদ্ধতিতে ফলন বেশি পাওয়া যায়। এবারো বাজারদর ভালো থাকলে গত বছরের মতো লাভবান হতে পারবো।

তিনি আরো বলেন, আমি ২০১৯ সালে ৩৮ শতাংশ জমিতে বারি আম-৪ ও আম্রপালি জাতের ১৬০টি গাছ রোপন করে বাগান করি। সেই বাগানে গাছের ফাঁকে ৪ হাজার বস্তায় আদার চাষ করি। প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি করে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারি। তারপর ২০২১ সালে আরেকটি লিচুর বাগান তৈরী করি। বর্তমানে আম ও লিচুর বাগানে এছাড়াও বাড়ির আশেপাশে মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার বস্তায় আদার চাষ করছি। আশা করছি এবছর আদা বিক্রি করে ১০-১২ লাখ টাকা আয় করতে পারবো।

রুহুল আমিনের স্ত্রী নার্গিস বলেন, পরিমাণমতো জৈব, রাসায়নিক সার এবং বেলে দোআঁশ মাটির সঙ্গে দানাদার কীটনাশক মিশিয়ে বস্তাগুলো ভরা হয়। তারপর বস্তায় পরিপক্ক আদা ১০-১৫ দিন রেখে দেওয়া হয়। তারপর একেকটি আদা থেকে ৩-৪টি কুশি বের হয়। কুশিগুলো পরে বস্তায় রোপন করা হয়। বীজ বপন থেকে সংগ্রহ করা পর্যন্ত প্রতি ২৫ টাকা খরচ হয়। প্রতি বস্তায় ৬০০-৭০০ গ্রাম করে আদা পাওয়া যায়।

পত্নীতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, দেশের অন্যান্য কয়েকটি জেলায় এভাবে আদার চাষ হলেও নওগাঁয় নতুন। রুহুল আমিন ও তার স্ত্রী এই পদ্ধতিতে আদা চাষ করে সফল হয়েছেন। তাদের দেখাদেখি অনেকেই আদা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। বাগানগুলো ফাঁকা জায়গা খালি না রেখে সেখানে এমন উদ্যোগ নেওয়া খুবই প্রশংসনীয়। আমরা তাদের যথাসাধ্য সহযোগিতা করবো।

Thursday, February 23, 2023

 

✅মঙ্গলে বিলীন ★ মঙ্গল গ্রহে গিয়ে পৃথিবীতে আর ফিরে আসবে না যে মেয়েটি, তিনি হলেন এলিজা কার্সন, নাসার কনিষ্ঠতম সদস্য। এই মেয়ের আগ্রহ, তৃষ্ণা আর ডেডিকেশন দেখে মাত্র ১১ বছর বয়সে নাসা তাকে মনোনীত করে নেয় এবং ঘোষণা করে যে, সমস্ত অবস্থা অনুকূল হলে সে হবে ২০৩৩ সালে মঙ্গলে যাওয়া পৃথিবীর প্রথম মানুষ। এখন তার বয়স ১৭। যেহেতু সে মঙ্গলে গেলে ফিরে আসার সম্ভাবনা খুবই কম তাই নাসার কাছে সে কোন প্রকার সংসার, বিয়ে বা সন্তানধারণের নিষেধাজ্ঞাপত্রে সাক্ষর করেছে। ভাবতে অবাক লাগে, মানুষের স্বপ্ন কত বড় হতে পারে! এলিজা জানে যে, সে আর ফিরে আসবেনা এই পৃথিবীতে। আর মাত্র ১০/১১ বছর পরে একমাত্র নিঃসঙ্গ মানুষ হিসেবে কোটি কোটি মাইল দূরের লোহার লালচে মরিচায় ঢাকা প্রচন্ড শীতল নিষ্প্রাণ গ্রহের ক্ষীয়মাণ নীল নক্ষত্রের নিচে হারিয়ে যাবে সে। সেই একা হারিয়ে যাওয়া তার কাছে কত বড় আনন্দ! সেই আনন্দের কাছে পৃথিবীর সাজানো সংসার প্রেম সন্তানাদি এসবের আনন্দ তার কাছে তুচ্ছ। এলিজা কার্সন আমাদের স্বপ্ন দেখতে শেখায়। সে বলে- "Always follow your dream and don't let anyone take it from you." এই ডেডিকেশনকে কুর্নিশ জানাতেই হয়। 🙏 ✅সংকলিত !

 

✅মঙ্গলে বিলীন ★ মঙ্গল গ্রহে গিয়ে পৃথিবীতে আর ফিরে আসবে না যে মেয়েটি, তিনি হলেন এলিজা কার্সন, নাসার কনিষ্ঠতম সদস্য। এই মেয়ের আগ্রহ, তৃষ্ণা আর ডেডিকেশন দেখে মাত্র ১১ বছর বয়সে নাসা তাকে মনোনীত করে নেয় এবং ঘোষণা করে যে, সমস্ত অবস্থা অনুকূল হলে সে হবে ২০৩৩ সালে মঙ্গলে যাওয়া পৃথিবীর প্রথম মানুষ। এখন তার বয়স ১৭। যেহেতু সে মঙ্গলে গেলে ফিরে আসার সম্ভাবনা খুবই কম তাই নাসার কাছে সে কোন প্রকার সংসার, বিয়ে বা সন্তানধারণের নিষেধাজ্ঞাপত্রে সাক্ষর করেছে। ভাবতে অবাক লাগে, মানুষের স্বপ্ন কত বড় হতে পারে! এলিজা জানে যে, সে আর ফিরে আসবেনা এই পৃথিবীতে। আর মাত্র ১০/১১ বছর পরে একমাত্র নিঃসঙ্গ মানুষ হিসেবে কোটি কোটি মাইল দূরের লোহার লালচে মরিচায় ঢাকা প্রচন্ড শীতল নিষ্প্রাণ গ্রহের ক্ষীয়মাণ নীল নক্ষত্রের নিচে হারিয়ে যাবে সে। সেই একা হারিয়ে যাওয়া তার কাছে কত বড় আনন্দ! সেই আনন্দের কাছে পৃথিবীর সাজানো সংসার প্রেম সন্তানাদি এসবের আনন্দ তার কাছে তুচ্ছ। এলিজা কার্সন আমাদের স্বপ্ন দেখতে শেখায়। সে বলে- "Always follow your dream and don't let anyone take it from you." এই ডেডিকেশনকে কুর্নিশ জানাতেই হয়। 🙏 ✅সংকলিত !

Tuesday, September 28, 2021

 

ঘাতকব্যাধি হৃদরোগ প্রতিরোধের উপায়

ঘাতকব্যাধি হৃদরোগ প্রতিরোধের উপায়

আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর বুধবার বিশ্ব হার্ট দিবস। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হবে এ দিনটি। গত ১৮ মাসে ভয়াবহ কভিডে সারা বিশ্ব হারিয়েছে প্রায় ৪০ লাখ মানুষের জীবন। আর গত ১৮ মাসে হৃদরোগ ও রক্তনালির রোগে বিশ্ব হারিয়েছে ২ কোটি ৭৯ লাখ মানুষের জীবন। 

কার্ডিওভাসকুলার রোগের এই নীরব মহামারীর আঘাত প্রায়ই আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। হৃদরোগের ক্ষেত্রে ঘটনার ঘনঘটা দৃশ্যমান হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত হৃদরোগ ও রক্তনালীর জটিলতায় সবচেয়ে বেশি (সব মৃত্যুর ৩১%) মানুষ মারা যায়। প্রতি বছর সারা বিশ্বে ৫২ কোটি মানুষ এ রোগে ভুগছে। গত এক বছরে বাংলাদেশে ১ লাখ ১২ হাজার মৃত্যুর ৪০ হাজারই মারা গেছে হৃদরোগ ও রক্তনালির জটিলতায়।

প্রতিরোধের উপায় কী?
প্রথমেই বলে রাখি, হৃদরোগ সংক্রান্ত জটিলতা শতকরা ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে প্রতিরোধযোগ্য। বাকি ২০ ভাগ চিকিৎসাযোগ্য কিন্তু ব্যয়বহুল। আক্রান্ত হলে জীবনের কর্মক্ষমতা, শরীরের উৎপাদনক্ষমতা উল্লেখযোগ্যহারে কমিয়ে দেয়। তাহলে যেটি ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে প্রতিরোধযোগ্য সেদিকেই মনোযোগ দিতে হবে সবার আগে।

সবার আগে সচেতন সংকল্প
সবার আগে আপনাকে ঠাণ্ডা মাথায় ভাবতে হবে, আপনি এই রোগকে প্রতিরোধ করতে চান কিনা। আপনার মাইন্ডসেট পরিবর্তন করুন। দায়সারা গোছের সিদ্ধান্ত চাই না। দৃঢ় সংকল্প করুন। আগামীকাল থেকে নয়, আজকে থেকেও নয়। এখন থেকে করুন। আপনি প্রস্তুত? যদি হ্যাঁ হয়, তবে আপনার কাজ ইতিমধ্যে ৫০% হয়ে গেল!

বাকি ৩০% অর্জনে কী কী করবেন?
ওজন কমান, ব্যায়াম করুন : শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলুন। গুগল সার্চ করে জেনে নিন আপনার উচ্চতায় আদর্শ ওজন কত হওয়া উচিত। উচ্চতা আর ওজনের অনুপাত করে নড়ফু সধংং রহফবী বা ইগও বের করে নিন। (দেখুন Google BMI Calculator)। আমাদের আদর্শ BMI হলো ১৯ থেকে ২৪.৯। এর নিচে হলে কম ওজন আর ২৫ থেকে ৩০ পর্যন্ত হলো স্থূলতা বা obesity, ৩০-এর বেশি হলে বলি মারাত্মক স্থূলতা (বা morbid obesit)। ওজন বাড়ানো কঠিন কাজ নয়। কোনো রোগ না থাকলে খাদ্য গ্রহণ বাড়ালেই ওজন বেড়ে যাবে। মূলত সমস্যা হলো ওজন কমানো। ওজন কমানোর দুটি উপায় আছে- 

ক) প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো শর্করা জাতীয় খাবার নিয়ন্ত্রণ করা। ভাত, আলু, চিনি, মিষ্টি, মিষ্টান্ন, চাল ইত্যাদি যাবতীয় খাবার কমিয়ে দিতে হবে। পরিমাণ মতো চর্বি, পর্যাপ্ত মাছ, সাদা মাংস (মুরগি), কুসুমসহ একটি ডিম, ইচ্ছে মতো শাকসবজি, সালাদ, পরিমিত তাজা ফল এবং কমপক্ষে দুই লিটার পানি খেতে পারবেন। 

খ) ওজন কমানোর দ্বিতীয় কিন্তু কম কার্যকর পদ্ধতি হলো নিয়মিত ব্যায়াম করা। খোলা জায়গায় সপ্তাহে কমপক্ষে ৫ দিন ৩০ থেকে ৪০ মিনিট জোরে জোরে হাঁটবেন যাতে শরীরে ঘাম ঝরে পড়ে এবং হার্টবিট ১২০ পর্যন্ত ওঠে। শুধু হাঁটাচলা বা ব্যায়ামে ওজন তেমন একটা না কমলেও তা হৃদপিণ্ড এবং রক্তনালিকে সতেজ রাখে, ব্লকমুক্ত রাখে, প্রেসার ও ডায়াবেটিস কমায়, কোলেস্টেরল কমায় এবং মনকে সতেজ রাখে।

উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন 

উচ্চরক্তচাপ বা হাই প্রেসার হলো এক নীরব ঘাতক। নীরব এজন্য যে, ৯০% ক্ষেত্রে সে কোনো উপসর্গ বা কষ্ট দেয় না। অনেক রোগী ২০০/১০০ প্রেসার নিয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যেহেতু তার কোনো কষ্ট হচ্ছে না তাই চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হচ্ছেন না। অন্য কোনো কারণে চেকআপের সময় প্রেসার ধরা পড়লেও রোগী সেটা তত গুরুত্ব সহকারে নিতে চান না। অনেকে ওষুধ শুরু করলেও পরে তা ছেড়ে দেন। কারণ হাই প্রেসারে তার তো কোনো অসুবিধা হচ্ছে না! মনে রাখতে হবে উচ্চ রক্তচাপ ক্রমাগত বহাল থাকলে তা হার্ট, কিডনি, ব্রেন, চোখের রেটিনা এবং পায়ের রক্তনালিসহ সারা শরীরের ক্ষতি করবে। যখন উপসর্গ দেখা দিবে তখন দেখা গেল ওই সব অঙ্গ ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তাই উপসর্গের অপেক্ষায় না থেকে হাই প্রেসারের চিকিৎসা করুন। নিজে নিজে ওষুধ বন্ধ করবেন না। ওষুধে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করুন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করুন
বয়স ৩০ হলেই ডায়াবেটিস চেক করুন। বছরে একবার চেক করুন। একটা স্যাম্পলে অনেক সময় প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায় না। তাই কমপক্ষে দুটো স্যাম্পল (যেমন নাশতার ২ ঘণ্টা পরের সুগার এবং তিন মাসের গড় সুগার জানতে HbA1C) পরীক্ষা করুন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই টেস্টই যথেষ্ট।

ডায়াবেটিস হলে কী করবেন?
ডায়াবেটিস মেটাবলিক কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ। অর্থ হলো এটি শুধু মেটাবলিক বা হরমোনাল সমস্যা নয়। এটি শরীরের সব রক্তনালিকে আক্রান্ত করে। তাই হার্টের সঙ্গে এটি সরাসরি যুক্ত। এর গুরুত্ব তাই অনেক বেশি। ডায়াবেটিসের মাত্রার ওপর নির্ভর করে চিকিৎসার ধরন। তবে প্রথম ধাপ হলো ডায়েট এবং ব্যায়াম। এ পদ্ধতিতে সুগার নিয়ন্ত্রণ না হলে ওষুধ প্রয়োজন হয়। প্রথমে খাবার বড়ি তারপর ইনসুলিন। সুগার কত রাখবেন? খালি পেটে ৬ থেকে ৭ এবং খাবার দুই ঘণ্টা পর ৭ থেকে ৯, তবে কোনোভাবে ১০-এর উপরে নয়। তিন মাসের গড় HbA1C অবশ্যই ৭-এর মধ্যে রাখার চেষ্টা করতে হবে। 

ধূমপানসহ তামাকজাত দ্রব্য পরিবার 
যে কোনো তামাক, জর্দা, গুল, বিড়ি, সিগারেট বর্জন করুন। তামাক শুধু হৃদরোগ, স্ট্রোক সৃষ্টি করে না; নানান ক্যান্সার, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদির কারণও সে। এছাড়া এলকোহল ছেড়ে দিন। এটি প্রেসার বাড়ায়। রক্তের চর্বি ট্রাইগ্লিসারাইড বৃদ্ধি করে হার্ট অ্যাটাক, প্যানক্রিয়াটাইটিসসহ নানা অপকর্ম ঘটায়।
 
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করুন
অনেকে হাই কোলেস্টেরলের ওষুধ শুরু করে কিছুদিন পর নিজে নিজে বন্ধ করে দেন। এমনকি কোনো কোনো ডাক্তার সাহেবকেও দেখেছি বুঝে না বুঝে চর্বির ওষুধ বন্ধ করে দেন। এটি মারাত্মক একটি ভুল। হাই কোলেস্টেরল নিজেই ডায়াবেটিসের মতো একটি দীর্ঘস্থায়ী, সম্ভবত আজীবন সঙ্গী একটি সমস্যা। রক্তনালিতে ব্লক তৈরির মূল উপাদান হলো চর্বি। তাই সুগার কন্ট্রোল করার মতো চর্বিও সারা জীবন কন্ট্রোল করতে হবে।

দুটো ওষুধ কখনো বন্ধ করবেন না
যাদের একবার হৃদরোগ, রক্তনালিতে ব্লক ধরা পড়েছে, হার্ট অ্যাটাক হয়েছে, ব্রেন স্ট্রোক করেছে তারা দুটো ওষুধ সারাজীবন খেয়ে যাবেন। একটি হলো কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ (statin), আর দ্বিতীয়টি হলো রক্ত পাতলা করার ওষুধ (যেমন Aspirin, clopidogrel)। শুধু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শক্রমে বিশেষ ক্ষেত্রে সাময়িক স্থগিত রাখা যেতে পারে।

ডায়াবেটিসে কোলেস্টেরলের ওষুধ
যাদের একবার ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে তাদের বয়স চল্লিশ বা বেশি হলে সারাজীবন কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ কমবেশি খেয়ে যেতে হবে। এমনকি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা যাই থাকুক না কেন অনির্দিষ্টকালের মতো স্ট্যাটিন খেতে হবে।

সরাসরি চিকিৎসার অংশ ২০%
প্রতিরোধের পালা শেষ হলে বা আগেই আক্রান্ত হয়ে পড়লে যথাযথ চিকিৎসা তো শুরু করতে হবে। সেখানে ইসিজি, ইটিটি, ইকোকার্ডিওগ্রাম, এনজিওগ্রাম, রিং বা এনজিওপ্লাস্টি, ওপেনহার্ট বা বাইপাস সার্জারিসহ নানান ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং চিকিৎসা পদ্ধতির ব্যাপার চলে আসবে। 

লেখক : সিনিয়র কনসালটেন্ট, ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল, ধানমণ্ডি।


Wednesday, August 11, 2021

 

আবেগ যখন বিবেকহীন

হানিফ সংকেত

আবেগ যখন বিবেকহীনএকসময় বাংলাদেশে টিভি বলতে ছিল শুধু বিটিভি বা বাংলাদেশ টেলিভিশন। তারপর আকাশ সংস্কৃতির বিস্তৃতির যুগে হুজুগে এবং নানান সুযোগে সৃষ্টি হয়েছে অনেক চ্যানেল। আর এসব চ্যানেলের পর্দা ভরাতে প্রচার হচ্ছে অনেক খবর, অনেক অনুষ্ঠান, অনেক নাটক। সৃষ্টি হচ্ছে অনেক নাট্যকার, ডিরেক্টর, অ্যাক্টর, কন্ডাক্টর আর নিউজের জন্য শত শত রিপোর্টার। টিভি চ্যানেলের সংখ্যা যতই বেড়েছে, আশঙ্কাজনকভাবে নাটকের মান ততই কমেছে। নাটকের পাশাপাশি রাশি রাশি মানহীন অনুষ্ঠান কোন মানদন্ডে চলে তার মানে বোঝা কঠিন। নাটকের নায়ক-নায়িকাদের গর্বিত উচ্চারণ চ্যালেঞ্জিং নাটকে চ্যালেঞ্জিং চরিত্র। এসব চ্যালেঞ্জিং নাটক দেখে ‘চ্যালেঞ্জ’ শব্দটিও এর গুরুত্ব হারাতে বসেছে। এখন আবার একক নাটকের যুগ নেই, চলে সিরিয়াল-মেগা সিরিয়াল। এক পর্ব থেকে শুরু করে কয়েক শ কিংবা যত চান তত পর্ব গর্বের সঙ্গে অনেকেই করে থাকেন। একসময় এক ঘণ্টার একটি নাটক একটু বড় হলেই সেটাকে টেলিফিল্ম নাম দিয়ে চালানো হতো। এরপর টেলিফিল্মকে টেনেটুনে ফিল্মে রূপান্তর করা হলো। ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার নাম দিয়ে শুরু হলো প্রদর্শন। তবে এসব প্রদর্শনে দর্শকের সেভাবে দর্শন না থাকলেও অর্থের আকর্ষণ থাকে প্রবল। ইদানীং এ সিরিজ নাটক ঈদকেও আক্রমণ করেছে। টেলিফিল্ম-মার্কা নাটকগুলোকে ভেঙে কয়েক টুকরা করে ছয় থেকে আট পর্ব বানিয়ে চ্যানেলগুলোয় চালান করে দেওয়া হয় ‘ঈদের বিশেষ ধারাবাহিক’ নাম দিয়ে। এখানে শিল্পী, নির্মাতা এবং চ্যানেল পয়সা পেলেও ১২টা বাজে দর্শকের। ঈদের ব্যস্ততম সময়ে কেউ যদি নাটকের একটি পর্ব না দেখে থাকেন তাহলে গল্পের কিছুই বুঝতে পারবেন না। তখন ভরসা ইউটিউব। কিন্তু ঈদের সময় টিভিতে সবাই মিলে সপরিবারে নাটক দেখার যে আনন্দ তা আর থাকে না। বলা যায়, চ্যানেলের নাট্যাকাশে এখন দুর্যোগের ঘনঘটা। চলছে শিডিউল বেচাকেনার নাটক। ভর করেছে পিঁয়াজ-রসুনের মতো সিন্ডিকেট আর এজেন্সির উৎপাত। কিছু নির্বোধ পরিচালকের বিচরণ, মুষ্টিমেয় কয়েকজন শিল্পীর সিন্ডিকেটে নাট্যবাজার নিয়ন্ত্রণ।

টেলিভিশনের পাশাপাশি এখন ইউটিউবের জন্যও নাটক বানান প্রযোজক, পরিচালক এবং মিডিয়া ব্যবসায়ীরা। উদ্দেশ্য সংস্কৃতি সেবা নয়, ব্যবসা। ভিউ এবং ভাইরাল। এদের কারণেই নাটক এখন মেধাহীনদের হাতে চলে যাচ্ছে। যাদের কোনো পরিমিতিবোধ নেই। উপযুক্ত শিক্ষা নেই। নাটকে কী বলতে হবে, কতটুকু বলতে হবে, কী বলতে হবে না- সেই বোধটাই নেই। তাই জরুরি হচ্ছে পরিচালকের এ সম্পর্কিত জ্ঞান এবং সমাজ ও দেশের প্রতি দায়বোধ। আর তখনই সম্ভব সেলফ সেন্সরশিপ। যেটা এখনকার নাটকের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। এখন এজেন্সির কাছে চাঙ্ক বিক্রি করার কারণে চ্যানেলগুলোর প্রিভিউ করার সুযোগও থাকে না। শুধু টিভিতে একবার প্রচারের স্বত্ব দেওয়া হয়। এরপর সরাসরি চলে যায় ইউটিউবে। দু-তিন বার বিক্রির কারণে সিন্ডিকেটের শিল্পীদেরও লাভ হয়। এরা নাটকের কিংবা বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন না। অনেকে বিষয়ই বোঝেন না। রাত জাগা পাখির মতো মধ্যরাত কিংবা ভোররাত পর্যন্ত শুটিং করে সকালে ঝিমুতে ঝিমুতে গাড়িতে করে বাড়িতে ফেরেন। দুপুরের পর কিংবা সন্ধ্যায় এদের শিফট শুরু হয়। এদের নির্দেশনা অনুযায়ী নাটক নির্মাণের জন্য ক্যামেরাম্যাননির্ভর কিছু পরিচালক থাকেন।

টেলিভিশনের সেই সোনালি যুগ থাকলে এখনকার এ সিন্ডিকেট-মার্কা শিল্পীরা কখনই আবদুল্লাহ আল মামুন, আতিকুল হক চৌধুরী কিংবা মোস্তফা কামাল সৈয়দের নাটকে অভিনয় করার সুযোগ পেতেন না। কারণ তারা গল্পনির্ভর নাটক করতেন, শিল্পীনির্ভর নয়। নাটকের প্রয়োজনে যাকে দরকার তাকেই নিতেন। লোকে বলত এটা আবদুল্লাহ আল মামুনের নাটক কিংবা আতিকুল হক চৌধুরীর নাটক। শিল্পীর নামে নাটক চলত না।

আর এখন এ সিন্ডিকেট-মার্কা শিল্পীরা নায়ক-নায়িকা মিলে দ্বৈত শিফট দিয়ে নিজেরাই খেটেখুটে নাটক বানিয়ে নেন। তারপর ওই কোম্পানিগুলো টিকটক, ফেসবুকসহ নানাবিধ ওটিটি প্ল্যাটফরমে দিয়ে ফেসবুকে নিজস্ব কমেন্ট বাহিনী লাগিয়ে দেয়। যাদের কমেন্টে বোঝানো হয়- এদের মার্কেট এখন চড়া। চটুল এবং সুড়সুড়ি দেওয়া সংলাপের কারণে একশ্রেণির দর্শকের কাছে এই সিন্ডিকেট-শিল্পীদের কদর রয়েছে। আর এদের কারণেই এসব নাটকের ভিউও হয়। আর এজেন্সিও ঝাঁপিয়ে পড়ে ভিউ লক্ষ্য করে। মূলত এদের নাটকের মান নির্ধারিত হয় ইউটিউবের ভিউর মাধ্যমে। অথচ ‘ভিউ’ই যে নাটকের মান নির্ধারণের একমাত্র মাপকাঠি নয় সেই বোধটাও এদের নেই। একটি শাড়ির দোকানে অনেক কাস্টমারই শাড়ি দেখেন কিন্তু কেনেন একজন। আগে যারা  শাড়িটিকে ভিউ করেছেন তারা কেউ-ই পছন্দ করেননি, তাই কেনেননি। অর্থাৎ ভিউ মানেই পছন্দ নয়- এ বিষয়টিও এদের মস্তিষ্কে নেই। চিত্তানন্দে এরা আত্মহারা। আর হবেনই বা না কেন, এদের পেছনে বানরনাচের মতো ডুগডুগি বাজানোর লোকের অভাব নেই। কিছু পত্রিকার অনলাইনে হামেশাই এদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। চুক্তিটা যেন এমন ‘তোমরা আমাদের জন্য করবে- আমরা তোমাদের জন্য করব’, কিন্তু ওইসব অনুষ্ঠানের মন্তব্যের ঘরে যেসব কমেন্ট আসে তা নিজের লোক দিয়ে মুছেও বোধহয় শেষ করতে পারে না, দু-একটি থেকেই যায়। তার পরও লজ্জা হয় না।

আগে বিজ্ঞ সমালোচকরা প্রতিটি শিল্পীর অভিনয়, বাচনভঙ্গি, উচ্চারণ, সেট, আবহ সংগীত সবকিছু নিয়েই সমালোচনা লিখতেন। যা দেখে শিল্পীরা সাবধান হতেন, শিখতে পারতেন। আর এখন চ্যানেলের মার্কেটিং বিভাগের মতো কিছু কিছু সাংবাদিকও ইউটিউবের ভিউ দেখে রিভিউ লেখেন। যে নাটকের যত ভিউ সেই নাটক নাকি তত হিট। এ-জাতীয় ভিউসর্বস্ব হিট নাটকের একটি হচ্ছে ‘ঘটনা সত্যি’ নামের অঘটন। যে নাটকের মূল বক্তব্য সত্য নয় মিথ্যা। এ নাটকটি প্রচারিত হওয়ার পর সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছেন, নিন্দা জানিয়েছেন, শাস্তির দাবি তুলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করেছেন নানান মন্তব্য। নাটকটি সম্পর্কে এসব ক্ষুব্ধ মন্তব্যের কিছু শব্দ হলো- অনাকাক্সিক্ষত, আপত্তিকর, কুৎসিত, নোংরা, দায়িত্বহীন, মহা অন্যায়, নিন্দনীয়। কেউ লিখেছেন- শিল্পীসমাজ লজ্জিত, কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়, শাস্তিযোগ্য অপরাধ, ক্ষমার অযোগ্য। প্রশ্ন উঠেছে- এসব নাটক বানান কারা, এদের উদ্দেশ্য কী, এদের যোগ্যতা নির্ধারণ করে কে? এসব নাটক চালান কারা, কীভাবে চালান, তাদের আদৌ মানদন্ড নির্ধারণের কোনো ব্যবস্থা আছে কি না, নাকি ব্যবসাই মূল বিষয়? এসব নাটকের শিল্পীর ভূমিকা কী, শুধুই কি অভিনয় করা? ভিউ দেখেই আত্মতৃপ্তি? এদের যোগ্যতা বা মেধা কতটুকু? এদের নাটকে মা-বাবার চরিত্র দেখা যায় না কারণ মা-বাবা থাকলে পুরো নাটকে তাদের খুনসুটি করার সুযোগ থাকে না। আবার এরা নিজেরাও মা-বাবা হতে চান না। চরিত্রের প্রয়োজনেও এদের কোনো সন্তান থাকতে পারবে না। তাহলে ললিপপ-মার্কা ইমেজ থাকে না। অথচ এদের বেশির ভাগের ঘরেই ‘স্কুল গোয়িং’ ছেলেমেয়ে আছে। নিজেদের যতটা কচি বোঝাতে চান তারা ততটা কচি নন। এ শিল্পীরা দায় এড়ান কীভাবে?

সব মহলেই একটি কথা উচ্চারিত হচ্ছে- নাটক এখন দায়িত্বজ্ঞানহীন, মেধাহীন, বিবেকহীনদের হাতে চলে যাচ্ছে। আবেগ যখন বিবেকহীন হয়- তাদের কাছ থেকে কী আশা করা যায়? শুধু পরিচালক বা শিল্পীই নন- যে চ্যানেলে এ নাটক প্রচারিত হয়েছে সেখানে তো অনেক কান্ডজ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তা আছেন, তারাই বা কোন যুক্তিতে এ ধরনের একটি নাটক চালালেন?

অটিজম বলতে অনেকে মানসিক রোগ বোঝালেও এটা মূলত এক ধরনের স্নায়বিক বিকাশগত সমস্যা। এ সমস্যাকে ইংরেজিতে নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার বলা হয়। কেউ বলেন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বা স্পেশাল চাইল্ড। অটিজমে আক্রান্তরা সামাজিক আচরণে দুর্বল হয়। এরা কারও চোখের দিকে সরাসরি তাকায় না। এরা অনেক জ্ঞানীও হয়। এরা রাগলে অভিযোগ করতে পারে না। কষ্ট পেলে প্রকাশ করতে পারে না। আত্মযন্ত্রণায় ভুগতে থাকে। তাই প্রত্যেক মা-বাবাকেই থাকতে হয় নানান চাপে। মানসিক, আর্থিক, পারিবারিক আর সামাজিক চাপ তো আছেই। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আমি এ অটিজম আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছিলাম। একজন প্রতিবন্ধী শিশুকে সমাজের আর দশটা শিশুর মতো করে গড়ে তুলতে একজন মায়ের যে কতটা শ্রম দিতে হয় তা আমি এ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করেছি। সর্বশেষ প্রতিবেদনটি ছিল ‘পিএফডিএ ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার’-এর। এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সাজিদা রাহমান ড্যানি- যিনি তার স্নায়বিক প্রতিবন্ধী শিশুটিকে নিয়ে দীর্ঘ ২৫ বছর সংগ্রাম করেছেন। তারপর নিজের শিশুর পাশাপাশি অন্য শিশুদের জন্য গড়ে তুলেছেন এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। কারণ আমাদের দেশে স্নায়বিক প্রতিবন্ধীদের জন্য সঠিক পরিচর্যার কোনো ব্যবস্থা নেই। নিজের সন্তান নিয়ে দীর্ঘ ২৫ বছর সংগ্রাম করে তিনি বুঝেছেন সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ বা তৈরি করলে এ শিশুরাও পরিবারে, সমাজে বোঝা না হয়ে অংশীদার হতে পারে। তিনিও বিশ্বাস করেন- এ শিশুরা ডিজ্যাবলড নয়, ডিফরেন্টলি অ্যাবল। মায়ের কঠোর সাধনায় ড্যানির ২৫ বছর বয়স্ক সন্তান সিয়াম এখন চাকরি করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ১১তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছে। আমি দেখেছি এ সেন্টারে মা’দের করুণ অবস্থা, সংগ্রামের জীবন। অটিজম শিশুর কারণে অনেক মা-ই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন। অনেক মা উচ্চশিক্ষিত হয়েও বাচ্চার কারণে চাকরি/ক্যারিয়ার বিসর্জন দিয়েছেন।

প্রতিটি অটিজম আক্রান্ত শিশুর মা-বাবার একটাই চিন্তা- মা-বাবা বা অভিভাবকের মৃত্যু হলে ওরা কোথায় যাবে? কার চোখে চোখ রেখে কথা বলবে, সেই চিন্তায় একজন মা যখন অস্থির থাকেন, সন্তানের জন্য ভালোবাসা চান, সহযোগিতা চান তখন সবার মতো সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষগুলোরও সমাজের নানান ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার এ শিশুদের শারীরিক -মানসিক নিরাপত্তার জন্য সচেতনতা তৈরির কাজে বেশি বেশি করে এগিয়ে আসা উচিত। কারণ এ প্রতিবন্ধী শিশুরা অনেক সময় ব্যঙ্গ, বিদ্রƒপ, উত্ত্যক্তের শিকার হয়, অনেকেই তাদের সামাজিকভাবেও হেয় প্রতিপন্ন করে। যা করা হয়েছে তথাকথিত নাটক ‘ঘটনা সত্যি’তে। তাই ‘ঘটনা সত্যি’ নাটকে যে বার্তা দেওয়া হয়েছে তা কেউ মেনে নিতে পারেননি।

একটি নাটক তৈরি হয়ে প্রচার হওয়া পর্যন্ত অনেক ধাপ পেরোতে হয়। নাট্যকারের লেখা, পরিচালকের দেখা, শিল্পীদের পড়া, শুটিং করা, সম্পাদনা ও মিউজিক করতে গিয়ে বারবার দেখা, সিন্ডিকেট-শিল্পীদের দেখিয়ে ছাড়পত্র নেওয়া, এরপর চ্যানেলের প্রিভিউ কমিটি কিংবা কর্তৃপক্ষ দেখে তা প্রচার করা। প্রশ্ন হচ্ছে, এত ধাপেও কারোরই কি বিষয়টি নজরে পড়েনি? চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বলেছেন তারা বিতর্কিত ভয়েস ওভার ফেলে দিয়েছেন অর্থাৎ নাটকটি তারা প্রিভিউ করেছেন। যদি করেই থাকেন তাহলে কি তারা নাটকটি দেখে বুঝতে পারেননি, নাটকটিতে কী বার্তা যাচ্ছে? নার্স এসে কোন ধরনের চাইল্ডের কথা বলেছে? নাটকের শেষে নায়িকা চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে কী সংলাপ বলেছে?

প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও শিশুদের নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন করার সুবাদে আমার সঙ্গে বেশ কজন প্রতিবন্ধী শিশুর মায়ের কথা হয়েছে। ফেসবুক লাইভে এসেও তারা বলেছেন, এ ব্যাপারে ক্ষমা চাওয়া বা ক্ষমা করার মতো অবস্থা নেই। কারণ ‘ঘটনা সত্যি’ নাটকে একটি ভয়ংকর বার্তা দেওয়া হয়েছে, যে বার্তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাজারো মায়ের কান্না। অটিস্টিক যুবক সিয়ামের মা সাজিদা রাহমান ড্যানি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই বক্তব্য মানহানিকর। এতগুলো ধাপ পার হয়ে প্রচারিত নাটকে এমন স্পর্শকাতর ও সংবেদনশীল বিষয়টি কি কারোরই নজরে পড়ল না!’

প্রচারের পর বিষয়টি টেলিভিশন-সংশ্লিষ্ট কিছু সংগঠনের নজরে পড়লেও কেউ কেউ এটাকে ‘আপত্তিকর বার্তা’ ও ‘দায়িত্বহীনতার’ পরিচয় উল্লেখ করে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করেছে। যে কারণে তা অনেকের কাছেই দায়সারা মনে হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, যেহেতু একটি শক্তিশালী চ্যানেল এর সঙ্গে জড়িত এবং ব্যবসার স্বার্থে অনেক পরিচালক-প্রযোজকেরই এ সিন্ডিকেট-শিল্পীদের প্রয়োজন, তাই কেউ কেউ আবার ‘ভুলবশত করেছে’ বলে ক্ষমা করার পক্ষেই মত দিয়েছেন। কিন্তু যাদের ভুলের কারণে এ নাটকটি ১৫ থেকে ২০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে এবং ডাউনলোড করে ‘ভিউ’ পেতে অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন নামে আপলোড করছে, আর এসব যখন সেই মায়েরা এবং তাদের আত্মীয়-পরিজন দেখছেন তাদের মানসিক অবস্থা কী হচ্ছে তা কি কেউ ভেবেছে? এ শিল্পী-কলাকুশলীরা কত হাজার হাজার প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়ের মা-বাবা-ভাই-বোনকে মানসিকভাবে আঘাত দিয়েছেন তা কি তারা ভেবে দেখেছেন? এ প্রসঙ্গে দেশের শীর্ষস্থানীয় একজন অভিনেত্রী লিখেছেন- ‘পার পেয়ে যাওয়া তদের জীবনের নিত্যসঙ্গী হয়ে গিয়েছে। তবে এবার সীমা অতিক্রান্ত হয়ে গেছে।’ এ ভিউ কামানো উদ্ভট -কদর্য নাটকটির এ বার্তা প্রদানের সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধেই শাস্তির দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ প্রায় সব মহলেই। একজন শিল্পী যথার্থই লিখেছেন- ‘শিল্পী হওয়া তো দূরের কথা, ভিউ আর ফলোয়ারের পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে আমরা বোধহয় মানুষও হতে পারলাম না।’

শিল্প-সংস্কৃতির অঙ্গনেও অনেকের সন্তানও এ স্নায়বিক বিকাশগত সমস্যায় আক্রান্ত কিংবা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। তারাও দেশের প্রচলিত আইনে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। বিশিষ্ট অভিনেতা মঞ্চসারথি আতাউর রহমান তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন- ‘মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী সন্তানেরা আমাদের দেশের প্রতিটি মানুষের সন্তান। তারাই সবচেয়ে সৃজনশীল এবং দেশপ্রেমিক। স্টিফেন হকিং যৌবনকাল থেকে দৈহিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়েও বিশ্বের সেরা থিওরিটিক্যাল পদার্থবিদ। কেবল ক্ষমা চাইলে হবে না। যারা ওদেরকে পাপের ফল হিসেবে নাটক/চলচ্চিত্রে রূপায়ণ করেছে, আমি দেশের আইন অনুযায়ী ওদের শাস্তি দাবি করি।’

প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩-এর ৩৭ (৪) ধারা অনুযায়ী এ ধরনের অপরাধের শাস্তি অনধিক তিন বছরের কারাদন্ড বা অনধিক ৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধান রয়েছে। সুতরাং আইন যেখানে আছে সেখানে মাফ চাওয়ার গুরুত্ব কতখানি? আমরা ভুলে যাই কোমলমতি বিশেষ এ শিশুদের শারীরিক/মানসিক সীমাবদ্ধতার কারণে নয় বরং তাদের ও তাদের পরিবারের প্রতি সমাজের এ ধরনের নেতিবাচক মনোভাবের কারণেই এরা কষ্ট পায়। ‘ভুলবশত’, ‘অসাবধানতাবশত’, ‘আবেগের বশে’ বলে কেউ কেউ বিষয়টিকে ক্ষমা করার আওতায় নিয়ে আসতে চাইলেও আমাদের নাটকের মান রক্ষার স্বার্থে বিষয়টিকে ক্ষমার আওতায় নয়, বরং আইনের আওতায় এনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করাই হচ্ছে যৌক্তিক। আইন থাকা সত্ত্বেও তা প্রয়োগ না করে ভুল স্বীকার বা মাফ চাইলেই যদি পরিত্রাণ পাওয়া যায় তাহলে ভবিষ্যতে এ ভুল অনেকেই করবে। আমরা কি সে পথ উন্মোচন করব? নাকি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব? তাই দাবি উঠেছে- এদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক। তাতে অটিজম আক্রান্ত শিশুদের মায়েরা কিছুটা হলেও শান্তি পাবেন।

পাদটীকা : আর একটি কথা, আমাদের দেশে কোনো কোনো ঘটনা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, শুরু হয় লাইভের প্রতিযোগিতা, চলে ব্রেকিং নিউজ, উত্তপ্ত হয়ে ওঠে টকশোগুলো। তারপর আরেকটি নতুন ঘটনায় চাপা পড়ে যায় সব। শুরু হয় নতুন ঘটনার লাইভ। ঘটনা মিথ্যার ‘ঘটনা সত্যি’ নাটকের এ নিন্দনীয় ঘটনাটিও যাতে মৌ-পিয়াসা-পরীদের ঘটনায় চাপা পড়ে না যায় এ অনুরোধ রইল। চিত্রনায়িকা পরীমণি আটকের ঘটনার পর এ নায়িকার রসালো গল্পই যেন বেশ কিছু চ্যানেলের প্রধান সংবাদপণ্য হয়ে উঠেছে। ব্রেকিং নিউজ এবং সরাসরির ছড়াছড়ি। এখানেও ভিউ বাড়ানোর প্রতিযোগিতা লক্ষণীয়। আর বিবেকবোধসম্পন্ন কিছু কিছু চ্যানেলে এ বিষয়ে কোনো উল্লাস বা বাড়াবাড়ি লক্ষ্য করা যায়নি। তাদের কাছে প্রধান খবর ছিল করোনা এবং ডেঙ্গু রোগীদের ভয়াবহ চিত্র। যে করোনা মহামারীতে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ জন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, আর এটাই হচ্ছে বিবেকের আবেগ।

লেখক : গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, পরিবেশ ও সমাজ উন্নয়নকর্মী।

Monday, June 28, 2021

Know about this Hero before you talk. This Hero does not have a record of corruption, only contributions to the people & Nation.

May be an image of 3 people

ড. জাফরুল্লাহ সম্পর্কে কিছু তথ্যঃ
★ চট্টগ্রামের ছেলে জাফরুল্লাহর বাবার শিক্ষক ছিলেন স্বয়ং বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন।
★ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট শেষ করার পর ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। ছাত্র থাকা অবস্থাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজের দুর্নীতির বিরুদ্ধে করেছিলেন সংবাদ সম্মেলন।
★ ১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এম. বি. বি. এস শেষ করার পর ১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ অব সার্জনস থেকে FRCS প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কিন্তু চূড়ান্ত পর্ব শেষ না হতেই দেশের টানে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে দেশে ফিরে আসেন।
★পাকিস্থানি বাহিনীর নির্মমতার প্রতিবাদে লন্ডনের হাইডপার্কে যে কয়জন বাঙ্গালী পাসপোর্ট ছিড়ে আগুন ধরিয়ে রাষ্ট্রবিহীন নাগরিকে পরিণত হয়েছিল তাদের একজন ড. জাফরুল্লাহ।
★মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিক সহায়তার জন্য বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরী প্রবাসী বাঙ্গালীদের কাছ থেকে ১০ লাখ পাউন্ড চাঁদা যোগাড় করেছিলেন। তিনি কাজটি করেছিলেন ড. জাফরুল্লাহর পরামর্শে।
★ শহীদ জননী জাহানারা ইমাম " একাত্তরের দিনগুলি" বইয়ের ১৬১ ও ১৬২ পৃষ্ঠায় ড. জাফরুল্লাহ ও ডা. মোবিনের পাকিস্তানি হানাদারদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়ার ঘটনাটি বিস্তারিতভাবে লিখেন।
★আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য ড. জাফরুল্লাহ ২ নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফের সহযোগিতায় আগরতলার বিশ্রামঘরের মেলাঘরে গড়ে তুলেছিলেন ৪৮০ শয্যা বিশিষ্ট প্রথম ফিল্ড হসপিটাল " বাংলাদেশ হসপিটাল"
★হসপিটালটিতে পর্যাপ্ত নার্স না থাকায় ড. জাফরুল্লাহ নিজে নারী স্বেচ্ছাসেবীদের প্রশিক্ষণ দেন।
★দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ড. জাফরুল্লাহ গ্রামে গিয়ে শুরু করেন স্বাস্থ্যযুদ্ধ। ফিল্ড হাসপাতালটিকেই কুমিল্লাতে স্বাধীন দেশের প্রথম হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তুলেন। পরবর্তীতে ঢাকার ইস্কাটনে হাসপাতালটি পুনঃস্থাপিত হয়। কিন্তু গ্রামকে উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু রুপে গড়ে তোলার জন্যে " চলো গ্রামে যাই" স্লোগান নিয়ে হাসপাতালটিকে ঢাকার অদূরে সাভারে " গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র" নামে স্থানান্তর করা হয়।
★ হাসপাতালটিকে " গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র" নামে নামকরণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সাভারে হাসপাতালটির জন্য ৩১ একর জমিও বরাদ্দ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।
★ সম্পূর্ণ অলাভজনক এই এই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ড. জাফরুল্লাহ ১৯৭৭ সালে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ভুমিকা রাখায় স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।
★ড. জাফরুল্লাহ বাকশালে যোগ দিতে বঙ্গবন্ধুর অনুরোধ যেমন উপেক্ষা করেছিলেন, তেমনি জিয়াউর রহমানের দেয়া মন্ত্রীত্বের প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ৪ পৃষ্ঠার একটি চিঠির মাধ্যমে। ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এরশাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাবও!
★ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পর তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান ১৯৮২ সালের জাতীয় ঔষুধ নীতি। স্বাধীনতার পর স্বাস্থ্যখাতে যেটাকে বিবেচনা করা সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হিসেবে। তাঁর প্রচেষ্টায় আমদানি ওষুধের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২২৫-এ। বর্তমানে ৯০ শতাংশ ওষুধই দেশে তৈরি হচ্ছে এবং বাংলাদেশ একটি ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে গড়ে ওঠার পেছনে এই মানুষটির অবদান বিশাল।
★ড. জাফরুল্লাহ স্বাস্থ্যনীতির সাথে জড়িত থাকায় বি. এম. এর স্বার্থে আঘাত লাগে। তাই বি. এম. এ ১৯৯২ সালে তাঁর সদস্যপদ বাতিল করে। বিনা বিচারে ড. জাফরুল্লাহর ফাঁসি চেয়ে পোস্টারও সাঁটায় তারা।
আমরা ড. জাফরউল্লাহকে না চিনলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় ঠিকই চিনেছে এই লোকটাকে। বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় "ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো" ঘোষণা করে ড. জাফরুল্লাহকে।
মুক্তিযুদ্ধ করেও, গণমানুষের জন্য কাজ করেও ড. জাফরুল্লাহরা হন বিতর্কিত। কারন, উনারা চাটুকারিতা করতে জানেন না, দালালী করতে জানেন না, জানেন না তেল দিতে!
নষ্ট রাজনীতির বিভাজনে থাকা তরুণ প্রজন্মের প্রতি অনুরোধ, এই মানুষটাকে যদি সম্মানিত করতে নাও পারি, অন্ততপক্ষে যেন ছোট না করি।

Wednesday, June 9, 2021

 

যে কারণে খাবেন দারুচিনি ও মেথি চা

যে কারণে খাবেন দারুচিনি ও মেথি চা

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হচ্ছে শরীরের প্রতিরোধ শক্তি বাড়ানো। সেক্ষেত্রে ভেষজ উপাদানগুলো অধিক কার্যকরী। এই পানীয় নিয়মিত পান করলে শরীরের পরিবর্তন নিজেই লক্ষ্য করবেন।

দারুচিনি চা
মেটাবলিজম বাড়াতে দারুণ কার্যকরি এই মসলা। এতে একইসঙ্গে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিবায়োটিক গুণাবলী রয়েছে। দারুচিনি চা দারুণ ডিটক্স হিসেবেও কাজ করে। এ কাপ গরম পানিতে ১ চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া দিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে দিন। ঘুমানোর অন্তত আধাঘণ্টা আগে পান করুন এই চা।

মেথি চা
মেথি পাতায় পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট পাওয়া যায়। রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ ও হাড়কে শক্তিশালী করার জন্য এ চা বেশ উপকারী। নিয়মিত মেথি চা পান করলে কিডনিতে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত সরবরাহে সহায়তা করে। যা কিডনির পাথরের মতো সমস্যা দূর করতে কার্যকর।

অ্যাসিডিটি বা হজমের যাবতীয় সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে মেথি চা। এছাড়াও মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা পেট পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূরে রাখতে সাহায্য করে।

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চা খেতে পারলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। সেই সঙ্গে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমে।

মেথি চা তৈরী করতে প্রথমে ১ চামচ মেথি গুঁড়ো নিন। দেড় কাপ ফুটন্ত গরম পানিতে ওই গুঁড়ো মিশিয়ে দিন। এর সঙ্গে ১ চামচ মধু মেশাতে পারেন। চাইলে এর সঙ্গে চা পাতা বা তুলসি পাতাও মেশাতে পারেন। সমস্ত উপকরণ একসঙ্গে দিয়ে ৫ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এবার ছেঁকে নিয়ে সামান্য ঠান্ডা করে পান করুন।